উপজেলা পরিষদ নির্বাচনী হলফনামা

ভিপি সাহীনের সম্পদের পাহাড়, নগদ টাকাই আছে প্রায় তিন কোটি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০৭ মে ২০২৪ ১৮:১১ ।
প্রধান খবর
পঠিত হয়েছে ১৪৪ বার।

ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে এবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ভোটের মাঠে নেমেছেন বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ভিপি সাজেদুর রহমান সাহীন। এই নেতার রয়েছে সম্পদের পাহাড়।  বর্তমানে তাঁর হাতেই নগদ টাকা রয়েছে প্রায় তিন কোটি। এছাড়া তিনি ব্যবসা থেকে বছরে আয় করেন প্রায় আড়াই কোটি টাকা। 


৩য় ধাপে শাজাহানপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ভোট করার জন্য দাখিল করা হলফনামা থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 


সাজেদুর রহমান সাহীন পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তিনি বগুড়া স্বেচ্ছাসেবক লীগের বর্তমানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি শাজাহানপুর উপজেলার খরনা ইউনিয়ন পরিষদের দুই দফা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। পরে উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে ভোট করতে গত ১৭ এপ্রিল তিনি খরনা ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।


সাজেদুর রহমান সাহীনের হলফনামা ঘেঁটে জানা যায়, শাজাহানপুরের বীরগ্রামে মেসার্স এস এস কনস্ট্রাকশন নামে একটি ব্যবসা আছে। এই ব্যবসা থেকে তিনি বছরে আয় করেন ২ কোটি ২৫ লাখ ৮৯ হাজার টাকা। এছাড়া অন্যান্য খাত থেকে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকা আয় করেন তিনি। 


ভিপি সাহীনের অস্থাবর সম্পদ অর্জনের মধ্যে তাঁর হাতে এখন ২ কোটি ৭৬ লাখ ৫ হাজার ৯১৮ নগদ টাকা রয়েছে। এছাড়া বগুড়ার ছয়টি ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় জমা আছে ৫ লাখ ৫২ হাজার ৮৯৬ টাকা , ৩ লাখ ৬৩ হাজার ১২১ টাকার বন্ড, র‍্যাভ-৪ কোম্পানীর একটি প্রাইভেট কার ব্যবহার করেন যার মূল্য সাড়ে ৫৭ লাখ টাকা। এছাড়া তাঁর নামে ১০ ভরি সোনা এবং দুই লাখ টাকার ইলেকট্রনিক ও আসবাবপত্র রয়েছে। শুধু অস্থাবর সম্পদ নয় স্থাবর সম্পদ অর্জনেও এগিয়ে রয়েছেন  জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ভিপি সাহীন। তাঁর নামে শাজাহানপুরের বীরগ্রাম, খরনা ও বনভেটী এবং শহরের মালগ্রাম ও সূত্রাপুর এলাকায় কৃষি জমি রয়েছে। যার মূল্য ১ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার টাকা তাঁর দাখিলকৃত হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এছাড়া তাঁর নামে তিন তলা বিশিষ্ট একটি বিল্ডিং রয়েছে যার মূল্য ৭০ লাখ টাকা। 


ভিপি সাহীনের কয়েক কোটি টাকার সম্পদের মালিক হলেও তাঁর ব্যাংকে কোন দেনা নেই বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। 


বগুড়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে  ২০১৬ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি উপজেলার ওমরদীঘি স্ট্যান্ডে ভিপি সাহীনের প্রাইভেট কার তল্লাশি করে একটি বিদেশি পিস্তল, ম্যাগাজিন ও চারটি গুলি উদ্ধার করে পুলিশ। একই দিন তাঁর ব্যক্তিগত কার্যালয়ে তল্লাশি করে পাওয়া গেছে ১১টি তাজা ককটেল, একটি বিদেশি চাকু, ৩৬টি বাঁশের লাঠি ও বল্লম।

এ ঘটনায় ২৫ ফেব্রুয়ারি শাজাহানপুর থানার তৎকালীন এসআই কালাচান ঘোষ বাদী হয়ে ভিপি সাহীনসহ ৯ জনকে আসামি করে বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে একটি মামলা এবং এসআই সানোয়ার বাদী হয়ে ভিপি সাহীনকে প্রধান আসামি করে তাঁর চার সহযোগী ও অজ্ঞাতপরিচয় একজনের বিরুদ্ধে আরো একটি মামলা করেন।  এই দুইটি মামলা আদালতে এখনও বিচারাধীন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। 


এ ব্যাপারে ভিপি সাহীন বলেন, আমি তখন খরনা ইউপি নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলাম। তখন আমাকে নির্বাচনী ষড়যন্ত্রে ওই দুই মামলায় ফাঁসানো হয়েছিল। এখনও মামলা আদালতে বিচারাধীন। খুব শীঘ্রই এই দুই মামলার নিষ্পত্তি হবে বলে আশা করছি। 


সম্পদের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমি এস এস কনস্ট্রাকশনের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসা পরিচালনা করে থাকি। এর মধ্যে ঠিকাদারি, রাস্তা মেরামত, হাট- বাজার ইজারা এবং বিভিন্ন প্রাইভেট কোম্পানীর সিভিল কাজও করি। আমার যা সম্পদ সব আমার ব্যবসা থেকেই এসেছে।