কী ছিল মুমূর্ষু আবরারের শেষ উক্তি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৩২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৭৭ বার।

প্রায় সাত ঘণ্টার টানা নির্যাতনে মৃত্যু হয়েছিল বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদের। শেষ মুহূর্তেও আবরারের মুখে ছিল বাঁচার আকুতি।

প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে বিবিসির করা এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে আবরার হত্যার লোমহর্ষক কিছু মুহূর্ত।

প্রতিহিংসামূলক হামলার শিকার হওয়ার শঙ্কায় নাম না প্রকাশ করে বুয়েটের এক শিক্ষার্থী বিবিসিকে বলেন, যে কক্ষে আবরারকে মারধর করা হয়, সেখানে রাত ২টা পর্যন্ত জীবিত ছিলেন আবরার।

তিনি বলেন, ‘আমি আবরারকে ২০০৫ নম্বর কক্ষে দেখতে পাই, তখনো সে জীবিত। কয়েকজন জুনিয়র শিক্ষার্থীকে সঙ্গে করে আমি তাকে সিঁড়ির কাছে নিয়ে যাই।’

‘তখনো সে জীবিত। সে বলছিল- ‘প্লিজ, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চলো’ যোগ করেন ওই প্রতক্ষ্যদর্শী।

ঘটনাস্থলে থাকা আরেক শিক্ষার্থী বলেছেন, আবরারকে বাঁচাতে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কয়েকজন শিক্ষার্থী হলের সহকারী প্রভোস্টের কক্ষে যান। তখন বাইরে থেকে ওই কক্ষের দরজায় ধাক্কাধাক্কি করছিল ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। তারা কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করে।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ-ভারত পানি চুক্তি নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার পর আবরারকে ইসলামি দলের সদস্য সন্দেহে ধরে নিয়ে ‘জেরা’ করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।

একাধিক শিক্ষার্থী ও এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, হলের ২০১১ নম্বর কক্ষে হামলাকারীদের নির্মম নির্যাতনের মুখে আবরার দুবার বমি করেন। সঙ্গে প্রস্রাবও করেন।

বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। রবিবার মধ্যরাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের নিচতলা ও দোতলার মাঝামাঝি সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৪ নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।

ফাহাদ হত্যাকাণ্ডে ১৯ জনকে আসামি করে গতকাল রাতে চকবাজার থানায় মামলা করেছেন তার বাবা বরকতুল্লাহ। তবে তার অভিযোগ, যার নেতৃত্বে আবরারকে নির্যাতন করা হয়েছে, এজাহার থেকে তার নামই বাদ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় বুয়েট শাখার ১১ জন নেতাকর্মীকে স্থায়ী বহিষ্কার করেছে ছাত্রলীগ।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ফেনী নদীর পানি বণ্টন ও বন্দর ব্যবহারসহ ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বিভিন্ন চুক্তির সমালোচনা করে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ায় শিবির সন্দেহে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।