নাগরিক সেবা হিসেবে নাম লেখাল ‘ক্রসফায়ার!’

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৪ বার।

ক্রসফায়ারকে নাগরিক সেবা হিসেবে দেখিয়েছে ভারতের উত্তরপ্রদেশ সরকার। ২০১৭ সালের মার্চ থেকে রাজ্যটির ক্ষমতায় বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ।

টাইমস অব ইন্ডিয়া, ক্ষমতায় আসার পর থেকে ২০১৯-এর জানুয়ারি পর্যন্ত সরকারি হিসেবে উত্তরপ্রদেশে ৩ হাজারেরও বেশি ক্রসফায়ার হয়েছে। তাতে প্রাণ গিয়েছে প্রায় ৬৯ দুষ্কৃতকারী। আহতের সংখ্যা ৮৩৮।

যোগী আদিত্যনাথ নিজ সরকারের সাফল্যের লিখতে গিয়ে তাতে এই ক্রসফায়ারের বিষয়টিও নথিভুক্ত করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী নিজেই বলেছেন, ‘যদি অপরাধ করেন, তাহলে গুলি করে দেওয়া হবে।’

যোগী প্রশাসনের এই ক্রসফায়ার কৌশলের কারণে ১২ হাজার অভিযুক্ত জামিন নিতে অস্বীকার করে। যাদের অনেকেই প্রাণভয়ে সরাসরি আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে।

রাজ্যটিতে স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের অভিযানে আরও নিহত হয়েছে ৯ জন। এসটিএফের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছে ১৩৯ জন। যাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। উল্টো দিকে ক্রসফায়ারে নিহত পুলিশের সংখ্যাও হাফ ডজন।

মেরট, শামলি, মুজফ্‌ফরনগর, বাগপত, সহারনপুর, বুলন্দশহর, গাজিয়াবাদ ও নয়ডার মতো শহরে অধিকাংশ ক্রসফায়ার ঘটেছে। সাবেক মুখ্যমন্ত্রী অখিলেশ যাদবের সময় থেকে বড় অভিযোগ, রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা ভেঙে পড়ছে এবং অপরাধ বাড়ছে।

এমন পরিস্থিতিতে ক্ষমতা এসে যোগী আদিত্যনাথ অপরাধ দমনে পুলিশকে স্বাধীনতা দেন। তিনি ঘোষণা করেন, রাজ্যে অপরাধীদের মোকাবিলায় পুলিশকে ‘ফ্রি হ্যান্ড’ দেওয়া হলো। ক্রসফায়ারের নামে নতুন শব্দ চালু হয় ‘ঠোক দো।’

রাজ্যে ক্রসফায়ার বেড়ে যাওয়ায় স্বাভাবিক কারণেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে। মানবাধিকার সংগঠনগুলির পাশাপাশি বিরোধীরাও সরকারের ভূমিকায় সোচ্চার হয়েছে। ২০১৭ সালে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যোগীকে নোটিশও পাঠিয়েছিল। বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত যায়।

সিটিজেনস এগেইনেস্ট হেট, পিপলস ইউনিয়ন অব সিভিল লিবার্টিজের মতো সংগঠনগুলো পুলিশের ক্রসফায়ার নিয়ে সিবিআই তদন্ত অথবা সিট গঠনের আরজি জানায় শীর্ষ আদালতে। এরপরেও যোগী সরকার নিজের অবস্থান থেকে একচুলও সরেনি। যাবতীয় সমালোচনার মুখে সরকারের সাফল্যতেও তাই যোগ হলো ‘ক্রসফায়ার পরিষেবা।’