টাকার জন্যই অন্তঃসত্ত্বা মা-মেয়ে খুন করে রাইজুদ্দিন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৪ অক্টোবর ২০১৯ ১৫:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮৯ বার।

টাঙ্গাইলের চাঞ্চল্যকর ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ লাকী বেগম ও তার চার বছরের শিশুকন্যা হুমায়রা আক্তার আলিফাকে টাকার জন্যই গলাকেটে করে খুন করা হয়।

টাঙ্গাইলের মা-মেয়ে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতারকৃত রাইজুদ্দিন ১৬১ ধারায় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে এসব কথা জানান।

টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এতথ্য নিশ্চিত করেন। খবর যুগান্তর অনলাইন 

ঘটনার মাত্র ২০ ঘণ্টার মধ্যে মাথায় এ লোমহর্ষক ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা সম্ভব হয়েছে বলেও দাবি করেন পুলিশ সুপার।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় সংবাদ সম্মেলনে জানান, রোববার সকালে টাঙ্গাইল পৌরসভার ভাল্লুককান্দি (এয়ারপোর্ট) এলাকার ৭ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূ লাকী বেগম ও তার চার বছরের শিশুকন্যা হুমায়রা আক্তার আলিফার গলাকাটা লাশ উদ্ধার করা হয়।

এ বিষয়ে নিহত লাকী বেগমের বাবা মো. হাসমত আলী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের অভিযুক্ত করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ঘটনাটি স্থানীয় পর্যায়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করায় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি দক্ষিণ) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। একই সঙ্গে ঘটনা উদঘাটনে সদর থানার পক্ষ থেকে একটি, গোয়েন্দা পুলিশের পক্ষ থেকে একটি এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পক্ষ থেকে একটি দল গঠন করা হয়।

মোট তিনটি পৃথক দল যৌথভাবে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার ও সোর্সিংয়ের মাধ্যমে রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে পৌরসভার ভাল্লুককান্দি এলাকা থেকে সদর উপজেলার চরপাতুলীপাড়া গ্রামের মৃত সুকুম উদ্দিনের ছেলে রাইজুদ্দিনকে (৩৬) আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদে রাইজুদ্দিন ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অকপটে কথা স্বীকার করেন। রাইজুদ্দিনের দেখানো বসতবাড়ির মুরগির খোঁয়াড় থেকে সাত লাখ ৭৭ হাজার টাকা এবং ঘরের ভেতর থেকে ১৯ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। বাকি টাকা দিয়ে তিনি মোবাইল ফোন কিনেছেন।

পুলিশের কাছে দেয়া প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে রাইজুদ্দিন জানান, নিহত লাকী বেগমের স্বামী আলামিন তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তিনি আগে ফলমূলের ও ফ্ল্যাক্সিলোডের ব্যবসা করতেন। ব্যবসায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর তিনি এক প্রকার বেকার দিন কাটাচ্ছিলেন। তার টাকার খুব প্রয়োজন ছিল।

বন্ধুত্বের সুবাদে আলামিনের টাকা-পয়সা সম্পর্কে তার ধারণা ছিল। আলামিন-লাকী বেগমের বাড়িতে তার যাতায়াতও ছিল। শনিবার রাতে আলামিনে বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী ও মেয়েকে খুন এবং টাকা লুট করে নিয়ে যায়।

পরে সকালে অন্য সবার মতো আলামিনের সঙ্গে থানায় যান। পাশাপাশি বন্ধু আলামিনকে শান্তনা দেন ও মামলার তদারকিও করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের ভাল্লুককান্দী এলাকার ফ্ল্যাক্সিলোড ব্যবসায়ী আলামিনের ৭ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী লাকী বেগম (২২) ও তার চার বছরের শিশুকন্যা হুমায়রা আক্তার আলিফাকে শনিবার দিনগত গভীর রাতে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত ও গলাকেটে করে হত্যা করা হয়।