বগুড়ার ৫০টি ইউনিয়নে ১০ থেকে ১৯ বছরের মেয়েদের জন্য কিশোরী রিসোর্স সেন্টার হচ্ছে

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৮ ১২:৪০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৪০০ বার।

বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উদ্যোগে বগুড়ায় ৫০টি ইউনিয়নে একটি করে ‘কিশোরী রিসোর্স সেন্টার’ গঠন করা হচ্ছে। বুধবার সকালে স্থানীয় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিশেষ ধরনের ওই প্রকল্প গ্রহণের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়। মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক মোঃ আতাউর রহমান ওই প্রকল্পের সার্বিকদিকগুলো তুলে ধরেন। সভায় জানানো হয়, নভেম্বর থেকেই সেন্টারগুলো কাজ শুরু করবে।
বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ জনসংখ্যা তহবিল (ইউএনএফপিএ), বেসরকারি সংস্থা পপুলেশন কাউন্সিল, জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তা এবং নির্বাচিত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, ইউএনএফপিএ’র আর্থিক সহায়তায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ‘অ্যাকসিলেরেটিং অ্যাকশন অন এন্ড চাইল্ড ম্যারেজি ইন বাংলাদেশ’ নামে প্রকল্পের আওতায় কিশোরী রিসোর্স সেন্টারগুলো পরিচালনা করবে। মূলত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী বিবাহিত এবং অবিবাহিত কিশোরীদের নিয়ে রিসোর্স সেন্টারগুলো গঠন করা হবে। প্রতিটি ইউনিয়নে নির্ধারিত একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সপ্তাহে দু’দিন ক্লাস শেষে বিকেলে দুই ঘন্টা করে নির্বাচিত কিশোরীদের কম্পিউটার প্রশিক্ষণসহ কর্মমুখী নানা বিষয়ে জীবন ও জীবনী দক্ষতা প্রশিক্ষণের পাশাপাশি যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য ও অধিকার বিষয়েও শিক্ষা দেওয়া হবে। এজন্য ওই সেন্টারগুলোতে প্রশিক্ষপ্রাপ্ত জেন্ডার প্রোমোটার নিয়োগ দেওয়া হবে। পপুলেশন কাউন্সিল নামে একটি সংস্থা প্রোমোটারদের প্রশিক্ষণ দেবে।

প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিশোরী রিসোর্স সেন্টারে বাল্যবিয়ের ঝুঁকিতে থাকা এবং ক্ষতিগ্রস্ত কিশোরীরা তাদের পছন্দের প্রকাশ এবং পছন্দগুলো অনুশীলনে সক্ষম হবে। প্রতিটি রিসোর্স সেন্টারে ৫০ থেকে ৬০জন কিশোরী ভর্তির সুযোগ পাবে। ইউএনএফপিএ’র কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রিসোর্স সেন্টার চালুর পূর্বে তারা জরিপ চালিয়ে বাল্য বিয়ের ঝুঁকিতে থাকা এবং এরই মধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে এমন কিশোরীদের তারা চিহ্নিত করেছেন। মূলত তারাই কিশোরী রিসোর্স সেন্টারে ভর্তির সুযোগ পাবেন।ইউএনএফপি’র কর্মকর্তারা জানিয়েছন, বাংলাদেশে দু’টি জেলা বগুড়া এবং জামালপুরে এ ধরনের রিসোর্স সেন্টার গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের পরিচালক আতাউর রহমান জানান, বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ২১ শতাংশই হলো ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী। তাদের সঠিক পথে রাখতে হবে। কিশোরী বিবাহিত-অবিবাহিত মেয়েদের জন্য বিনিয়োগ ও সমর্থন বৃদ্ধি এবং এই সমর্থনের উপকারিতা দৃশ্যমান করার মাধ্যমে বাল্য বিয়ে মোকাবেলার কাজে গতি বাড়াতেই এ ধরনের প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘বগুড়া এবং জামালপুর জেলায় বাল্য বিয়ের হার সবচেয়ে বেশি হওয়ায় আপাতত এ দু’টি জেলাকে বেছে নেওয়া হয়েছে। এটি একটি পাইলট প্রকল্প। যার ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ কোটি ৩৪ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।  এই দুই জেলায় সফলতা পেলে পরবর্তীতে প্রকল্পটি সারা দেশে ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’
প্রকল্পের উদ্বোধনী পর্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন পপুলেশন কাউন্সিলের সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার সাবেক সচিব একেএম জাফর উল্লা খান, বগুড়ার সিভিল সার্জন ডা. শামসুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল জলিল, ইউএনএফপিএ’র ন্যাশনাল প্রোগ্রাম অফিসার হুমায়রা ফারহানাজ ও বগুড়া জেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম।