বগুড়ায় প্রগতিশীল সংগঠনসমূহের বিক্ষোভ সমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৭ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৪২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪০ বার।

ভারতের সাথে বাংলাদেশের স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত, তুহিন সহ শিশুহত্যার বিচার এবং দূর্নীতি, ক্যাসিনো বাণিজ্য, সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব বন্ধের দাবিতে বগুড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল সংগঠনগুলো। বৃহস্পতিবার শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায়  সকাল ১১ টায় ওই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন কৃষক সমিতি বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ কুমার পাল ও পরিচালনা করেন ছাত্র ইউনিয়ন বগুড়া জেলা সংসদের ক্রিড়া সম্পাদক সম্পাদক ছাব্বির হোসেন।

এসময় ওই বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঐক্য ন্যাপ বগুড়া জেলা কমিটির সম্বনয়ক মাহফুজুল হক দুলু, কমিউনিস্ট পার্টি বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র বগুড়া জেলা কমিটির সহ-সভাপতি ফজলুর রহমান, ক্ষেতমজুর সমিতি বগুড়া জেলা কমিটির সদস্য নিমাই ঘোষ, যুব ইউনিয়ন বগুড়া জেল কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহনিওয়াজ কবির খান পাপ্পু, ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বগুড়া জেলা সংসদের সভাপতি নাদিম মাহমুদ।

সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বগুড়া জেলা সংসদের সভাপতি নাদিম মাহমুদ বলেন, 'সন্ত্রাস আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী ছাত্র ইউনিয়ন গতকাল শুভ্র পদযাত্রা করেছে। সন্ত্রাস-আধিপত্যবাদ থেকে দেশকে বাঁচাতে দরকার ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। আবরার, জোবায়ের, আবু বকর, হাফিজুর, বিশ্বজিৎ, সাদ, তাপস, দিয়াজ, আফসানা এ রকম অসংখ্য প্রাণ আমাদের মাঝখান থেকে হারিয়ে গিয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকেই শিক্ষাঙ্গন থেকে প্রায় দুইশত শিক্ষার্থীর জীবন ঝরে গিয়েছে। গত এক দশকেই ক্যাম্পাসে হয়েছে অন্তত দুই ডজন খুন। প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে এক বা একাধিক খুনের ঘটনা। শিবির ক্যাম্পাসে রগ কেটেছে, হত্যা করেছে,  বিগত সময়ে ছাত্র দল-শিবির ক্যাম্পাসগুলোতে সন্ত্রাস, নির্যাতনের যে ধারা শুরু করেছে, এই সময়ে এসে ছাত্রলীগও সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে হলে রয়েছে ছাত্রলীগের টর্চার সেল। ট্ররচার সেলগুলোতে শিক্ষার্থীদের নির্যাতন ও ভয় দেখিয়ে ভিন্নমত দমনের এক দখলদারি সংস্কৃতি চালু করেছে ছাত্রলীগ। ভিন্নমত দমনে খুনের পথ ধরতেও বাকি নেই ছাত্রলীগের।' 
তিনি আরো বলেন,  ‘আবরার, জোবায়ের, আবু বকর, হাফিজুরসহ সকল হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। সেই সূত্রটি হলো বিচারহীনতার সংস্কৃতি। ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ নয়, এই সন্ত্রাসবাদী অপরাজনীতি আইন করে নিষিদ্ধ করা হোক। বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ’ই হোক শেষ ছাত্র খুনের ঘটনা।’

বিক্ষোভ সমাবেশে কৃষক সমিতি বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি সন্তোষ কুমার পাল তার বক্তব্যে স্বার্থবিরোধী সকল অসম চুক্তি বাতিল, বুয়েটের ছাত্র আবরার ফাহাদের হত্যাকারিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত সুনামগঞ্জের দিরাইয়ে পাঁচ বছরের শিশু তুহিনের নির্মম হত্যার সাথে যুক্তদের বিচার এবং ক্যাসিনো বাণিজ্য, দূর্নীতি, সন্ত্রাস ও দখলদারিত্ব বন্ধের দাবি জানান।

যুব ইউনিয়ন বগুড়া জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শাহনিওয়াজ কবির খান পাপ্পু তার বক্তব্যে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার রাজানগর ইউনিয়নের কেজাউড়া গ্রামের পাঁচ বছর বয়সী শিশু তুহিনের বর্বর ও পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশেরর সাথে ধিক্কার জানান।

তিনি বলেন, পাঁচ বছরের এক নিষ্পাপ শিশুর পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড প্রচলিত পুঁজিবাদী সমাজে মনুষ্যত্বের চ‚ড়ান্ত অধঃপতনেরই বহিঃপ্রকাশ। শিশু তুহিন আর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আবরার দুটি হত্যাকাণ্ডই সমাজের অবক্ষয় ও পৈশাচিকতাকেই প্রকাশ করেছে। যে সমাজে মনুষ্যত্বের কোনো মূল্য নেই সে সমাজ টিকে থাকতে পারে না। বর্তমান পচা গলা মুনাফাভিত্তিক পুঁজিবাদী সমাজ ভেঙে মানবিক সমাজ গড়ার সংগ্রামে সামিল হতে দেশবাসীকে আহ্বান জানান তিনি।

সমাবেশ শেষে বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।