সেরা সিয়াম-প্রসেনজিৎ, জয়া-পাওলি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ অক্টোবর ২০১৯ ০৬:৫০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪৭ বার।

অনন্য এক রাত। সন্ধ্যা থেকেই আলোর ঝলকানি। সেই ঝলকানির মধ্য থেকে কখনো ভেসে আসছে সুরের মূর্ছনা, আবার কখনো নৃত্যের উদ্দামতা। সেই উদ্দামতা রাতের আকাশকেও যেন করে তুলেছিল নেশাসক্ত। বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্র দুনিয়ার রথী-মহারথী, তারকা, শিল্পী আর কলাকুশলীদের উপস্থিতিতে রাজধানীর রাতটা হয়ে উঠেছিল রঙিন। বাংলাদেশ ও ভারতের চলচ্চিত্র দুনিয়ার মানুষদের সম্মানিত করতে বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারে হয়ে গেল প্রথমবারের মতো টিএম ফিল্মস আয়োজিত ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ড। সেরা ফিল্ম হয়েছে বাংলাদেশের ‘দেবী’ ও ভারতের ‘নগর কীর্তন’। বেস্ট লিড অ্যাকট্রেস বাংলাদেশের জয়া আহসান ও ভারতের পাওলি দাম। বেস্ট অ্যাকটর লিড রোল বাংলাদেশের সিয়াম আহমেদ ও ভারতের প্রসেনজিৎ। পপুলার অ্যাকটর অব দ্য ইয়ার বাংলাদেশের শাকিব খান ও ভারতের জিৎ। পপুলার অ্যাকট্রেস অব দ্য ইয়ার বাংলাদেশের পরীমনি ও ভারতের ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। এ আয়োজনে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন বাংলাদেশের প্রবীণ চলচ্চিত্র অভিনেত্রী আনোয়ারা ও ওপার বাংলার রঞ্জিত মল্লিক।

দুই দেশের জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়েই আসরের পর্দা ওঠে। এরপর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রজেক্টরে প্রদর্শন করা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। আরও উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ফেরদাউসুল হাসান ও বিবিএফএ’র সমন্বয়ক তপন রায়, পশ্চিমবঙ্গের নির্মাতা গৌতম ঘোষ, পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনমন্ত্রী ব্রাত্য বসু, টিএম ফিল্মসের চেয়ারপারসন ফারজানা মুন্নী।

তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাজনৈতিক সীমারেখা আমাদেরকে বিভক্ত করেছে। আমাদের ভাষা সংস্কৃতি জলবায়ু কিন্তু একই। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ ধরনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান নিশ্চয় আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দৃঢ করবে।’ কলকাতার জনপ্রিয় নির্মাতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘সিনেমার যে সময় সেটা আশ্চার্য ম্যাজিক। যেটা এক হাজার বছরের গল্প দু’বছরে বলা যায়। সিনেমা কি সত্যি দুই বাংলার মানুষের মধ্যে প্রীতি ও মিলন বয়ে আনতে পেরেছে? এটা নিয়ে একটা লেখা আরও আগেই লিখতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সময়ের কারণে হয়ে ওঠেনি। সিনেমা যে কাজটা করতে পারে সেটা হলো আমাদের স্মৃতিমালাকে একত্রিত করতে পারে।’

আজীবন সম্মাননায় ভূষিত আনোয়ারা বলেন, ‘দুই বাংলা মিলিয়ে এত তারকা থাকতে আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে এটা আমি কখনো ভাবিনি।’

রঞ্জিত মল্লিক বলেন, ‘বাইশ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। তাদেরই এ আয়োজন প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ আয়োজন যেন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে। যৌথভাবে সিনেমা নির্মাণের যে প্রয়াস চলছে, তা যেন আরও বেগবান হয়। আরেকটা কথা না বললেই নয়Ñ আমি পৃথিবীর বহু দেশ ঘুরেছি, কিন্তু বাংলাদেশে এলে যে আতিথেয়তা পাই তা পৃথিবীর আর কোথাও পাই না।’

বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (পুরুষ) ইমরান ও ভারতের অনির্বাণ ভট্টাচার্য। বেস্ট প্লেব্যাক সিঙ্গার (নারী) বাংলাদেশের পক্ষে যৌথভাবে সোমনুর মনির কোনাল ও ফাতেমা তুজ জোহরা ঐশী এবং ভারতের নিকিতা নন্দী। বেস্ট মিউজিক ডিরেক্টর বাংলাদেশের হৃদয় খান ও ভারতের বিক্রম ঘোষ। পার্শ্বচরিত্রাভিনেতা বাংলাদেশের ইমন ও ভারতের অর্জুন চক্রবর্তী। পার্শ্বচরিত্রাভিনেত্রী বাংলাদেশের জাকিয়া বারী মম ও ভারতের সুদীপ্তা চক্রবর্তী। বিশেষ জুরি অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন বাংলাদেশের তাসকিন রহমান ও বিদ্যা সিনহা মীম এবং ভারতের রুদ্রনীল ঘোষ, আবীর চ্যাটার্জি ও নবনী। শ্রেষ্ঠ পরিচালক বাংলাদেশের নাসির উদ্দিন ইউসুফ ও ভারতের সৃজিত মুখার্জি। জনপ্রিয় চলচ্চিত্র বাংলাদেশের ‘পাসওয়ার্ড’ ও ভারতের ‘দুর্গেশগড়ের গুপ্তধন’। স্ক্রিপ্ট রাইটার পুরস্কারে ভূষিত হন বাংলাদেশের ফেরারী ফরহাদ ও ভারতের পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। তারা সবাই উপস্থিত থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেন। পুরস্কার প্রদানের ফাঁকে ফাঁকে নাচ, গান পরিবেশন করেন বাংলাদেশ ও ভারতের জনপ্রিয় শিল্পীরা।

আরও উপস্থিত ছিলেন কৌশিক গাঙ্গুলি, দেবজ্যোতি মিশ্র, ইন্দ্রজিৎ সেনগুপ্ত, অনির্বাণ, পূজা চেরি, নুসরাত ফারিয়া, মৌসুমী, ওমর সানী, নিরবসহ জুরি বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশের আলমগীর, কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু ও হাসিবুর রেজা কল্লোল এবং ভারতের গৌতম ঘোষ, ব্রাত্য বসু, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস ও তনুশ্রী চক্রবর্তী।