সিরাজগঞ্জে চিনির সঙ্গে কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে আখের গুড়

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ অক্টোবর ২০১৯ ১১:২৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৬ বার।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় চিনি, সোডা, ফিটকিড়ি, নালি ও অন্যান্য কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল আখের গুড় তৈরি করা হচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর এই গুড় বাজারজাত করা হচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে।

উপজেলার দুর্গানগর ইউনিয়নের হেমন্তবাড়ী গ্রামে চলছে এ ভেজাল গুড় তৈরির কর্মযজ্ঞ। এই গ্রামের শফিজউদ্দিন ফকির তার বাড়িতে খুলে বসেছেন এই গুড়ের কারখানা। দীর্ঘদিন ধরে তিনি তার বাড়িতে একাধিক শ্রমিক নিয়োগ করে প্রতিদিন কেমিক্যাল মিশিয়ে এভাবে গুড় তৈরি করে চলেছেন। খবর সমকাল অনলাইন 

মঙ্গলবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শফিজ উদ্দিনের বাড়িতে একটি ঝুপড়ি ঘরে নোংরা অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ৫/৬ জন শ্রমিক পৃথকপৃথক ভাবে গুড় তৈরি করছেন। তারা চিনির সঙ্গে সোডা, ফিটকিড়ি, নালি ও অন্যান্য কেমিক্যাল মিশিয়ে গুড় তৈরি করছেন। চুলার পাশেই অন্তত ৫০ থেকে ৬০ বস্তা চিনি রাখা হয়েছে। এগুলো বড় পাত্রে ঢেলে পর্যায়ক্রমে চুলায় জাল করে কেমিক্যাল মিশিয়ে শত শত টিনের কন্টিনারে ঢালছে শ্রমিকরা। এগুলো বাতাসে ও রোদে শুকিয়ে বাজারজাত করা হবে। শফিজ উদ্দিনের বাড়ির সামনেই অন্ততঃ শ’খানেক টিনের কন্টিনারে বাজারজাত করার জন্য তৈরি গুড় রাখা হয়েছে। এসব কন্টিনারের একেকটির ওজন প্রায় ১ মন। সকালেই এখান থেকে ১ ট্রাক গুড় অন্যত্র গেছে বলে স্থানীয়রা জানান। 

স্থানীয়রা আরো জানান, বিশেষ প্রক্রিয়ায় তৈরি করা এ গুড়গুলো বালসাবাড়ি বাজারে নিয়ে গুদামজাত করা হয়। সেখান থেকে পাঠানো হয় দেশের বিভিন্ন স্থানে। 

সাংবাদিকদের উপস্থিতি জানতে পেরে কারখানার মালিক শফিজউদ্দিন বাড়ি থেকে বের হয়ে আসেন। এসময় তিনি বলেন, চিনি দিয়ে গুড় তৈরি করা কোন অপরাধ নয়। সারা দেশে বাজারে পাওয়া আখের গুড় নামে সকল গুড়ই এভাবে চিনি, নালি, সোডা, ফিটকিড়িসহ অন্যান্য কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি করা হয়। এখান থেকেই পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়।

এভাবে কেমিক্যাল মিশিয়ে তৈরি গুড় স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ কিনা এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি কোন উত্তর দেননি। তবে শফিজ উদ্দিনের ছেলে আশরাফ আলী ও জামাতা জেলহক হোসেন বাবু জানান, এভাবে গুড় তৈরি করা অপরাধ নয়। সারা দেশে এভাবেই গুড় তৈরি হচ্ছে। স্থানীয় একটি মহল কারখানাটি বন্ধের জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য তিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ জানান।

উল্লাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মেহেদী হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি এই ভেজাল গুড় মানবদেহের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর বলে উল্লেখ করেন। মেহেদী জানান, বিশেষ করে এই গুড় খেলে কিডনির ক্ষতির হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুব হাসানের জানান, অবৈধ এই গুড় তৈরির কারখানার বিরুদ্ধে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।