ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা উঠছে মধ্যরাতে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ অক্টোবর ২০১৯ ১২:৩৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৯ বার।

ইলিশ ধরায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বুধবার মধ্যরাতে। এদিন রাত ১২টার পর থেকে আবার ইলিশ শিকারে নামতে পারবেন জেলেরা।

এদিকে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে মাছ ধরায় গত ২২ দিনে ১৯৩ জন জেলেকে আটকের পর কারাদণ্ড দিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। যারা নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন তারা নৌকা-জাল নিয়ে এখন প্রস্তুত ইলিশ শিকারে। খবর সমকাল অনলাইন 

চাঁদপুর জেলা মৎস্য মৎস্য অফিস জানিয়েছে, জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স ৯ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২৭৭টি অভিযান পরিচালনা করে। এসব অভিযানে প্রায় ৭ মেট্রিক টন ইলিশ ও ৭৩ লাখ মিটার কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয়েছে ১০০টি। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২১১টি। জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৩ লাখ ৬০ হাজার টাকা এবং কারাদণ্ড হয়েছে ১৯৩ জন জেলের।

চাঁদপুর সদর উপজেলার বহরিয়া এলাকার জেলে করিম মাঝি বলেন, 'আমরা নিষেধাজ্ঞা মেনেছি। সরকার এ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আমাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করেই। তাই আমরাও নিষেধাজ্ঞা মেনে চলছি। আমরা যদি মা ইলিশ নিধন করি তাহলে ভবিষ্যতে ইলিশের উৎপাদন কমে যাবে। সেজন্য আমরা মা ইলিশ ধরিনি।'

হাইমচরের জেলে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, 'আমরা নিষেধাজ্ঞা মান্য করে চললেও বিভিন্ন স্থানে মাছ ধরা হয়েছে। কিন্তু আমরা ওই লোভে পা দেইনি। আশা করি, এখন আমরা ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরতে পারবো।'

মা ইলিশ রক্ষায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা সফল করতে সচেষ্ট ছিল কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, জেলা পুলিশ, মৎস্য বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। ভবিষ্যতে এ কর্মসূচি আরও সফল করতে জেলেদের সচেতনতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

চাঁদপুর কোস্টগার্ডের মাস্টার চিফ পেটি অফিসার মো. ইছাহাক আলী বলেন, 'মা ইলিশ রক্ষায় অভিযান চালাতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার শিকার হলেও আমরা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি নিষিদ্ধ সময়ে জেলেদের মাছ শিকার থেকে বিরত রাখতে। আমরা দিন-রাত নদীতে অভিযান পরিচালনা করেছি। অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর আমাদের অভিযান সফলভাবেই হয়েছে বলে মনে করি।'

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুল বাকী বলেন, 'আমাদের জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেট, নৌপুলিশ, কোস্টগার্ড, জেলা পুলিশ, মৎস্য অফিসের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক নদীতে অবস্থান করেছেন। যে কারণে আমাদের ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় মা ইলিশ রক্ষায় যথেষ্ট সফলতা পেয়েছি।'

তিনি বলেন, 'আমরা দেখেছি– শতকরা ৯০ ভাগের ওপরে মাছ ডিম ছেড়ে দিয়েছে। এটি আমাদের পরবর্তী বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ইলিশ উৎপাদনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।'

নৌপুলিশের ডিআইজি মোহাম্মদ আতিকুল ইসলাম বলেন, 'কারেন্ট জাল যেন উৎপাদন না হয় সে জন্য আমরা নদী ছাড়াও জাল তৈরির জায়গা বন্ধ করার চেষ্টা করছি। আমরা মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে ৩০ অক্টোবরের পরেও আমাদের অভিযান পরিচালনা করবো। জেলেদের গ্রেপ্তার বা তাদের হয়রানি করা আমাদের উদ্দেশ্য না, আমাদের উদ্দেশ্য তাদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা। জেলেরা যেন নিষিদ্ধ সময়ে নদীতে মাছ না ধরে অন্য কাজ করে। তারাও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, মাছগুলোও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।'