সাংবাদিকের পা ধরে জামিন পেলেন কাউন্সিলরপুত্র

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০১৯ ১৩:০৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৬ বার।

ডিজিটাল আইনে করা মামলায় বাদীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার পর তারই জিম্মায় জামিন পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জ শহরের আলোচিত কাউন্সিলর আবদুল করিম বাবু ওরফে ডিশ বাবুর ছেলে এম আর কে রিগেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আনিসুর রহমানের আদালতে বিচারিক কার্যক্রম চলাকালে ব্যতিক্রমী ও নাটকীয় এ ঘটনার মধ্য দিয়ে জামিন লাভ করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলার আসামি রিগেন। মামলার বাদী নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি ও আইনজীবী মাহবুবুর রহমান মাসুম।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জেলহাজতে আটক কাউন্সিলরপুত্র রিগেনের জামিনের আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল আজ। এ সময় বিচারক উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর অভিযুক্তের বয়স কম বিবেচনায় কাঠগড়া থেকে নেমে বাদীর পায়ে ধরে ক্ষমা চাওয়ার জন্য বলেন। আসামি কাঠগড়া থেকে বের হয়ে বাদীর পা ধরে ক্ষমা চান। আসামি পক্ষের আইনজীবীরাও ক্ষমা করে দিতে বাদীকে অনুরোধ করেন।

এ সময় বিচারক বলেন, শর্ত সাপেক্ষে তাকে জামিন দেয়া যেতে পারে, যদি আপনার (বাদী) আপত্তি না থাকে। তবে আপনার জিম্মায় তার জামিন হবে। পুনরায় যদি সে এ ধরনের আচরণ করে, বা আপনি যদি তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ করেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তার জামিন বাতিল করা হবে।

মামলার বাদী মাহবুবুর রহমান মাসুম সাংবাদিকদের জানান, আমি যেহেতু মামলার বাদী। স্বভাবতই আমি জামিনের বিরুদ্ধে ছিলাম। কিন্তু কাঠগড়া থেকে বেরিয়ে আসামি আমার পায়ে ধরে ক্ষমা চায়। জজ সাহেবও অনুরোধ করেন এবং আমার জিম্মায় তার জামিন দেন।

তিনি আরও বলেন, আমি একজন আইনজীবী, যখন আরও অন্যান্য আইনজীবীরা এসে অনুরোধ করলেন, সম্মানিত জজ সাহেবও যখন বললেন, তখন আমাকে তা মেনে নিতে হয়েছে স্বাভাবিকভাবেই। তবে, এ বিষয়টি নজিরবিহীন যা ইতিপূর্বে ঘটেনি।

উল্লেখ্য যে, ১৪ অক্টোবর জেলা প্রশাসনের এক সভায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য আবদুল করিম বাবু ওরফে ডিশ বাবুকে একটি স্কুলের সভাপতি করার বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন প্রেসক্লাব সভাপতি মৌসুম। ওই দিনই বাবুর ছেলে রিগেন তার ফেইসবুক পেজে এড. মাসুমকে ‘রাজাকার পুত্র ও ব্যাংকের টাকা আত্মসাৎকারী’ হিসেবে উল্লেখ করে আপত্তিকর ভাষায় আক্রমণ করে পোস্ট দেন। ১৫ অক্টোবর এ ব্যাপারে মাহবুবুর রহমান মাসুম বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করলে ওই দিন রাতেই পুলিশ রিগেনকে গ্রেপ্তার করে।