যুক্তরাষ্ট্রে পাসপোর্ট বিড়ম্বনায় খোকার পরিবার

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০১৯ ১২:০৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৬ বার।

অবিভক্ত ঢাকার মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন হোসেন খোকা জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। তারা সুস্থ হওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। কৃত্রিমভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হচ্ছে তাকে। চিকিৎসকরা তার চিকিৎসা বন্ধ করে দিয়েছেন।

সংকটাপন্ন অবস্থায় খোকাকে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের ম্যানহাটনের মেমোরিয়াল স্লোয়ান ক্যাটারিং ক্যান্সার সেন্টারে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) রাখা হয়েছে।

কিন্তু খোকার পাসপোর্ট না থাকায় এই অবস্থায় দেশে আনা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে তার পরিবার সদস্যরা জানিয়েছেন। এমনকি মৃত্যু হলেও তার লাশ দেশের মাটিতে এনে দাফন করা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে খোকার পরিবারের বরাত দিয়ে বিএনপির চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ঢাকার সাবেক মেয়রের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার সুস্থ হওয়া নিয়ে আশা দেখছেন না চিকিৎসকরা। এমতাবস্থায় সাদেক হোসেন খোকার মৃত্যু হলে তার লাশ আনা নিয়ে দু:শ্চিন্তায় আছেন পরিবার। কারণ খোকা ও তার স্ত্রীর পাসপোর্ট নেই। খবর যুগান্তর অনলাইন

সাদেক হোসেন খোকা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুকে বলে গেছেন, যেদেশে গণতন্ত্রের নেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া কারাগারে, সেখানে আমি সুবিচার পাব এমনটি আশা করি না। জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। দেশের মাটিতে দাফন হবে কিনা আল্লাহ জানেন।

হাসপাতালে খোকার পাশে আগে থেকেই আছেন তার স্ত্রী ইসমত হোসেন, মেয়ে সারিকা সাদেক, ছোট ছেলে ইশফাক হোসেন। বাবার সংকটাপন্ন অবস্থার খবর পেয়ে ঢাকা থেকে তার বড় ছেলে প্রকৌশলী ইশরাক হোসেনও নিউইয়র্কে ছুটে গেছেন।

বাবার সবশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে ইশরাক হোসেন জানান, পুরো ফুসফুসে ক্যান্সার ছড়িয়ে পড়েছে। অক্সিজেন দিয়ে তার বাবাকে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। লোকজন এলে কাউকে কখনও কখনও তিনি চিনতে পারছেন বলে মনে হচ্ছে। গত কয়েক দিন থেকে তার চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে।

বিএনপির বৈদেশিকবিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন আরও জানান, তার বাবা চিকিৎসা নিচ্ছিলেন কিডনি ক্যানসারের। হঠাৎ করেই ফুসফুস আক্রান্ত হলে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। তবে এখনো পর্যন্ত অক্সিজেন-সাপোর্ট নিয়ে বেঁচে আছেন। সবাইকে চিনতে পারছেন। কিন্তু কিছুই বলতে পারছেন না। সারাক্ষণ চোখ বেয়ে পানি গড়াতে থাকে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবারের চিন্তা-ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা খুবই বিভ্রান্তি ও হতাশার মধ্যে আছি। আব্বু-আম্মু কারো পাসপোর্ট নেই। এখন কি করবো বুঝতে পারছি না।

ভিজিট ভিসার নিয়মানুযায়ী, ছয় মাস পর পর যাওয়া-আসা করে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বৈধ রাখার নিয়ম। ২০১৭ সালে খোকা ও তার স্ত্রী ইসমত হোসেনের পাসপোর্টের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। তারা নিউইয়র্ক কনস্যুলেটে নতুন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেন। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, নতুন পাসপোর্ট পাওয়ার ব্যাপারে কনস্যুলেট থেকে কোনো সদুত্তর দেয়া হয়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্রে খোকার মৃত্যু হলে তাকে দেশে আনা নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ১৮ অক্টোবর সাদেক হোসেন খোকাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ২৮ অক্টোবর তার স্বাস্থ্যের আরও অবনতি ঘটলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়।

দেশে ফেরা প্রসঙ্গে ইশরাক বলেন, ‘আমরা খুবই বিভ্রান্তি ও হতাশার মধ্যে আছি। আব্বু-আম্মু কারও পাসপোর্ট নেই। আব্বু আমাদের বলেছেন, দেশে ফেরার ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কোনো সমঝোতা করবেন না। ম্যাডাম (খালেদা জিয়া) অথবা দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে কোনো পদক্ষেপ নেবেন না।’