নাগপুরে ইতিহাস গড়তে পারবে বাংলাদেশ?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৯ নভেম্বর ২০১৯ ১৪:৫০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩০ বার।

নাগপুরের বিদর্ভ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন স্টেডিয়াম তৈরি। এই মাঠেই রবিবার সন্ধ্যায় তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে শেষটিতে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক ভারত ও বাংলাদেশ। সিরিজে ১-১ এ সমতা থাকায় যে ম্যাচটি ‘অঘোষিত ফাইনাল’। এ ম্যাচে জিতলেই ইতিহাস গড়বে বাংলাদেশ। ভারতের মাটিতে তাদেরকে প্রথমবার সিরিজ হারানোর স্বাদ পাবে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। সেটিও কিনা প্রথমবার পূর্ণাঙ্গ সিরিজ খেলতে গিয়ে।

তা ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে কি রোমাঞ্চিত বাংলাদেশ? কোচ রাসেল ডমিঙ্গো যেমন শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘আগামীকাল আমাদের সামনে দারুণ একটা সুযোগ। সবাই খুব রোমাঞ্চিত এ ব্যাপারে।’

পরক্ষণেই আবার ডমিঙ্গো মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ‘দিন শেষে এটাও ঠিক, ভারত বিশ্বের অন্যতম সেরা একটি দল। কেউ বাংলাদেশকে কোনো সুযোগ দেবে না। তবে আমরা যদি আমাদের সামর্থ্য দিয়ে খেলতে পারি, তবে আমাদের ভালো সুযোগ আছে আগামীকাল।’

ইতিহাস গড়ার এই সুযোগটা বাংলাদেশ পেয়েছিল রাজকোটেই। দিল্লিতে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৭ উইকেটে জিতে এগিয়ে গিয়েছিল মাহমুদউল্লাহরা। ভারতের মাটিতে যা ছিল বাংলাদেশের প্রথম জয়। টি-টোয়েন্টিতেও এই সংস্করণের ২০০৭ সালের চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে প্রথম জয় ছিল এটি।

কিন্তু রাজকোটে দ্বিতীয় ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি সফরকারীরা। এক রোহিত শর্মার দাপুটে ব্যাটিংয়ে ৮ উইকেটে হেরে যায় টাইগাররা। প্রথম ম্যাচের হতাশা ভুলে ভারত সিরিজে ফিরে দারুণ দাপটে।

রাজকোটে মাঠে নামার আগে রোহিত শর্মা চাপের কথাটা স্বীকার করেছিলেন। নাগপুরে যে সেই চাপমুক্ত তার দল সেটি না বললেও বলছে। যদিও রোহিত সংবাদ সম্মেলনে জানিয়ে গেলেন ‘ফাইনালে’ সেরা খেলাটাই খেলতে হবে তার দলকে।

‘আমরা মোটেও ফেভারিট তত্ত্ব বিশ্বাস করি না। আমাদের মাঠে যেতে হবে এবং সেরাটা দিতে হবে। এভাবেই আপনি ম্যাচ জিততে পারবেন, ফেভারিট ট্যাগ দিয়ে নয়। নির্দিষ্ট দিনে আপনাকে সেরা হতে হবে।’- শনিবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন রোহিত। সেয়ানে সেয়ানে একটা লড়াই কি তবে হতে যাচ্ছে নাগপুরে?

এই সিরিজে বাংলাদেশ দল সাকিব আল হাসানকে পায়নি। ম্যাচ ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা গোপন করায় নিষিদ্ধ হয়েছেন তিনি। নেই তামিম ইকবাল, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের মতো তারকা। ভারতীয় দলেও তারুণ্যের ছড়াছড়ি। নিয়মিত অধিনায়ক বিরাট কোহলি বিশ্রামে। ইনজুরির কারণে নেই দলের দুই সেরা তারকা জাসপ্রীত বুমরাহ ও হার্দিক পান্ডিয়া।

ফলে এই সিরিজে তরুণদের সুযোগ পেয়েছেন অনেকেই। পেসার খলিল আহমেদ যেমন তাদের একজন। তবে মোটেও দুই ম্যাচে তেমন ছাপ ফেলতে পারেননি নিজের। বাংলাদেশের বিপক্ষে বরং বেশ ভুগছেন তিনি। দুই ম্যাচে ৮ ওভার বল করে ৮১ রান ব্যয় করেছেন। পেয়েছেন মাত্র ১ উইকেট।

খলিল আহমেদের বদলে তাই শার্দুল ঠাকুরের এ ম্যাচে খেলার সম্ভাবনাই বেশি। একটি মাত্র টি-টোয়েন্টি খেলা সাঞ্জু স্যামসনের সুযোগ পাওয়া নিয়েও আলোচনা হচ্ছে।

বাংলাদেশ দলে অবশ্য পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে না। কোচ ডমিঙ্গে তো সংবাদ সম্মেলনে অকপটে বলেছেন, একটি-দুটি ম্যাচ খারাপ খেললেই কাউকে বাদ দিয়ে দেওয়ার পক্ষে নন তিনি।

তবে বাংলাদেশকে ভাবতে হচ্ছে মোসাদ্দেক হোসেনের পারফরম্যান্স নিয়ে। রাজকোটে ডেথ ওভারে মোটেও দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি। এক ওভার বল করে ব্যয় করেন ২১ রান। ভাবাচ্ছে এখনো পর্যন্ত সিরিজে নিষ্প্রভ মোস্তাফিজুর রহমানের বোলিংও। প্রথম দুই ম্যাচে যিনি উইকেট শূন্য ছিলেন।

আর প্রতিপক্ষের কথা ভাবলে ব্যাটিংয়ে রোহিত শর্মা ও বোলিংয়ে যুববেন্দ্র চাহালকে নিয়ে আলাদা পরিকল্পনা করতেই হবে টাইগারদের। রোহিত তার আগ্রাসন দেখিয়েছেন শেষ ম্যাচেই। চাহাল দুই ম্যাচেই ছিলেন দুর্দান্ত। এই লেগির বল যেন ঠিকঠাক সামলাতেই পারছে না বাংলাদেশ।

একই সঙ্গে তাকাতে হবে ব্যাটিংয়েও। টি-টোয়েন্টি তো আসলে রানের খেলা। স্কোরবোর্ডে রান না থাকলে যেখানে লড়াই করা যায় না। রাজকোটে ভালো শুরুর পরও শেষ পর্যন্ত বড় স্কোর হয়নি। দিল্লিতে মুশফিকুর রহিম বড় ইনিংস খেললেও, রাজকোটে কেউই সেটি পারেনি।

ভালো শুরুর পরও মোহাম্মদ নাঈম, লিটন দাস, সৌম্য সরকার, মাহমুদউল্লাহ ব্যর্থ হয়েছেন নিজেদের সংগ্রহকে বড় করতে। মুশফিকুর রহিম ফিরেছিলেন দ্রুত। তা নাগপুরে সফল হতে পারবেন তো? মুশফিক-মাহমুদউল্লাহরা সফল হলেই যে সফল হবে বাংলাদেশ।