রাঙ্গাকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বললেন নূর হোসেনের মা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:০৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪১ বার।

এরশাদবিরোধী আন্দোলনে শহীদ নূর হোসেনকে ‘মাদকাসক্ত’ বলায় জাতীয় পার্টির (জাপা) মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাকে জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলেছেন নূর হোসেনের মা মরিয়ম বিবি। খবর যুগান্তর অনলাইন 

সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে রাঙ্গার বক্তব্যের প্রতিবাদে নূর হোসেনের পরিবারের পক্ষ থেকে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে মরিয়ম বিবি এ কথা বলেন। 

তিনি বলেন, নূর হোসেন আমার একার ছেলে না, সে জনগণের ছেলে। সে জনগণের ছেলেকে নেশাখোর বলছে। সে যদি নেশাখোর হতো, তাহলে দেশের জন্য জান দিতে পারত না। আমি জনগণের কাছে বিচার চাই, আল্লাহর কাছে বিচার চাই।

অশ্রুসিক্ত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার ছেলে বুকে-পিঠে স্লোগান লিখে রাজপথে নামল দেশের জন্য, জনগণের জন্য। কীসের জন্য নামল? ও কি পাগল ছিল, ওর কি জ্ঞান-বিচার ছিল না? আজ ৩০ বছর পরে ওরে নেশাখোর বলা হলো। আমি এ বিচারের দায়ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দিলাম। জনগণের কাছে তাকে (মসিউর রহমান রাঙ্গা) ক্ষমা চাইতে হবে।

রাঙ্গার বিরুদ্ধে মামলা করবেন কি-না এ প্রশ্নের জবাবে মরিয়ম বলেন, আমি আমার ছেলেকে বলেছি, মামলা করা উচিত। আমি মামলা করতে রাজি আছি।

অবস্থান কর্মসূচিতে নূর হোসেনের ভাই আলী হোসেন বলেন, আমার ভাইকে দেশের জনগণ ভালোবাসে, শ্রদ্ধা জানায়। সেই নূর হোসেনকে ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ বলা হলো কেন? ৩৩ বছর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আমাদের বাসায় গিয়ে আমার বাবার কাছে ক্ষমা চেয়ে এসেছিলেন। তিনি সংসদেও ক্ষমা চেয়েছিলেন। আমরা তো ক্ষমা করেই দিয়েছিলাম, কেন ৩৩ বছর পর আবার সে পুরোনো ক্ষতে আঘাত করা হলো?

সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারাই বলেন, তখন কি দেশে ইয়াবা ছিল? ফেনসিডিল ছিল?

মামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পরিবারের সবাই এখনও বসি নাই। পরিবারের অন্য মুরুব্বিরা বসে সিদ্ধান্ত নেব। নূর হোসেন দেশের জন্য, জনগণের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য আত্মাহুতি দিয়েছিল। সে জনগণের কাছেই আমরা বিচার চাই।

অবস্থান কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- নূর হোসেনের ভাই দেলোয়ার হোসেন, আনোয়ার হোসেন, বোন শাহানা বেগমসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা।

উল্লেখ্য, রোববার জাপার মহানগর উত্তর শাখার আয়োজনে ‘গণতন্ত্র দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাঙ্গা বলেন, নূর হোসেন ‘ইয়াবাখোর’, ‘ফেনসিডিলখোর’ ছিলেন। এর পর থেকেই দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় বইয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও রাঙ্গার বিচার চায় সাধারণ জনগণ। তবে এ বিষয়ে রাঙ্গা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো মন্তব্য বা বিবৃতি দেননি।

শহীদ নূর হোসেনের আত্মদানের দিন রবিবার যখন তাকে স্মরণ করেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন, সেদিনই জাতীয় পার্টির নেতা রাঙ্গা এই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন। ওই অনুষ্ঠান নিয়ে জাতীয় পার্টির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও তার এই বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়েছে।