বাবার কাছে এখনও পৌঁছানো যায়নি 'বুলবুলি'র খবর

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ১৫:১৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৯৩ বার।

ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল'-এর দিন শনিবার সন্ধ্যায় মোংলার মিঠাখালী ইউনিয়নের এটিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাইক্লোন সেন্টারে স্বজনদের সঙ্গে আশ্রয় নেন সন্তানসম্ভাবা গৃহবধূ হনুফা বেগম (৩৫)। আশ্রয়কেন্দ্রে ওঠার এক পর্যায়ে প্রসব ব্যথা ওঠে তার। এরপর খবর পাঠানো হয় স্থানীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত পরিবার কল্যাণের এক পরিদর্শিকাকে। পরে রাত সোয়া ১টার দিকে এক কন্যাসন্তান জন্ম দেন হনুফা। ঝড়ের রাতে জন্ম বলে উপস্থিত সবাই নবজাতকের নাম রাখেন 'বুলবুলি'।

হনুফা পূর্ব মিঠাখালী গ্রামের বায়েজিদ শিকদারের স্ত্রী। বায়েজিদ সুন্দরবনের দুবলার চরে শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতের কাজ করেন। এ মাসের শুরুতেই তিনি সেখানে কাজে চলে যান। সোমবার বিকেলে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত নবজাতক ও তার মা হনুফা মিঠাখালী এটিসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। দুপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে হনুফার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। স্বামী বায়েজিদ দুবলার চরে থাকায় এখনও 'বুলবুলি'র জন্মের খবর তাকে জানাতে পারেননি তিনি। 

মায়ের কোলে 'বুলবুলি'। ছবি: সমকাল

হনুফা সমকালকে জানান, তাদের পরিবার খুবই দরিদ্র। অভাবের কারণে নবজাতককে নিয়ে এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে আছেন। চলতি মাসের প্রথম দিকে তার স্বামী বায়েজিদ শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের শ্রমিক হিসেবে সুন্দরবনের দুবলার চরে যান। ঝড়ের কারণে দুবলার চর এলাকার মোবাইল নেটওয়ার্ক না থাকায় স্বামীর সঙ্গে এখনও যোগাযোগ করতে পারেননি হনুফা। এ কারণে 'বুলবুলি'র জন্মের খবর এখনও তার কাছে পৌঁছাতে পারেননি।

হনুফা-বায়েজিদ দম্পতির সাত বছর বয়সী আরও এক কন্যাসন্তান রয়েছে। হনুফা বলেন, এখানে সবার সহযোগিতা পেয়েছি। এখন সরকারের কাছে এক টুকরো জমি ও একটি ঘর চাই। দুই মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষের মতো মানুষ করতে চাই। এ সময় 'বুলবুলি'র জন্য সবার কাছে দোয়া চান হনুফা।

এদিকে দুর্যোগ মোকাবেলায় খোলা উপজেলা কন্ট্রোল রুমে 'বুলবুলি'র জন্মের খবর পৌঁছালে মোংলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) নয়ন কুমার রাজবংশী ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. রাশেদুল হাসানসহ অন্যরা ওই রাতেই ঘটনাস্থলে ছুটে যান ও মা-মেয়ের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেন। পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে হনুফার হাতে নগদ ২০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।