সিগনাল অমান্য করায় ট্রেন দুর্ঘটনা, নিহতদের পরিচয় শনাক্তে তথ্যকেন্দ্র

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:০৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৬ বার।

সিগনাল অমান্য করার কারণেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে আন্তঃনগর তূর্ণা নিশিতা ও আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ দু্টি ট্রেনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৬ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন শতাধিক।

সোমবার রাত ৩টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর ট্রেন তৃণা নিশিতা এবং সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর উদয়ন এক্সপ্রেসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

দুর্ঘটনাস্থল থেকে আখাউড়া প্রতিনিধি জানিয়েছেন, প্রশাসনের হিসাব অনুযায়ী মারা গেছেন ১৬ জন। তবে এ হতাহতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। হতাহতরা সবাই উদয়নের ট্রেনের যাত্রী। নিহতদের পরিচয় জানতে বায়েক শিক্ষা সদন উচ্চ বিদ্যালয়ে একটি অস্থায়ী তথ্য কেন্দ্র খোলা হয়েছে।

বর্তমানে চট্টগ্রাম-সিলেট, নোয়াখালী-ঢাকা, নোয়াখালী-সিলেট রেলপথে সব ধরনের ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে।

রেলওয়ে স্টেশন, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা আন্তঃগর ট্রেন ঢাকাগামী তৃণা নিশিতা সোমবার রাত ২টা ৪৮ মিনিটে শশীদল রেলওয়ে স্টেশন অতিক্রম করে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনের দিকে রওনা করে। মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার তাকে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশের আগেই আউটারে থামার জন্য সংকেত দেন।

অপরদিকে সিলেট থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী উদয়ন এক্্রপ্রেস কসবা রেলওয়ে স্টেশন ছেড়ে মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশনে প্রবেশ পথে স্টেশন মাস্টার তাকে মেইন লাইন ছেড়ে দিয়ে ১ নম্বর লাইনে আসার সংকেত দেন।

ওই ট্রেনের চালক ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করছেন। ছয়টি বগি প্রধান লাইনে থাকতেই অপরদিক থেকে আসা নিশিতা ট্রেনের চালক সিগনাল (সংকেত) অমান্য করে দ্রুতগতিতে ট্রেন চালায়।

এ সময় উদয়ন ট্রেনের মাঝামাঝি তিনটি বগির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে উদয়ন ট্রেনের তিনটি বগি দুমড়ে মুচড়ে যায়।  

মন্দভাগ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জাকের হোসেন চৌধুরী বলেন, নিশিতা ট্রেনটি আউটারে মেইন লাইনে থামার সংকেত দেওয়া হয়েছিল। উদয়ন ট্রেনটিকে মেইন লাইন থেকে ১ নং লাইনে আসার সংকেত দেওয়া হয়েছিল। সেই হিসাবে উদয়ন ট্রেন ১ নম্বর লাইনে প্রবেশ করছিল। এ সময় নিশিতা ট্রেনের চালক সংকেত অমান্য করে উদয়ন ট্রেনের উপর উঠে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়।

কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কে এম হুমায়ুন কবির বলেন, কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন মারা গেছেন। ২৯ জনের চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে দুই-তিনজন ছাড়া বেশির ভাগই গুরুতর।

এদিকে ‏ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে নিহতের প্রত্যেক পরিবারকে প্রাথমিক ২৫০০০ টাকা করে দেওয়া হয়।