৯ম বার সর্বোচ্চ কারদাতা হলেন বগুড়া চেম্বার সভাপতি

আগামীতে অন্য কেউ এ পুরস্কার নিলে খুশি হব, তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে : মিলন

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর ২০১৯ ১২:১২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০২৪ বার।

তরুণ ব্যবসায়ী বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান মিলন আবারও এ জেলার সর্বোচ্চ আয়করদাতা নির্বাচিত হয়েছেন। চলতি কর বর্ষে তিনি ৫ কোটি টাকারও বেশি আয়কর দিয়েছেন। বুধবার দুপুরে বগুড়া বিয়াম ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে কর বিভাগের পক্ষ থেকে সাংসদ আব্দুল মান্নান তার হাতে সেরা করদাতার ক্রেস্ট ও সনদপত্র তুলে দেন। একই অনুষ্ঠানে বগুড়া, জয়পুরহাট, সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধার মোট ২৮ করদাতাকেও পুরস্কৃত করা হয়। এরপর আয়কর মেলা-২০১৯ উদ্বোধন করা হয়।
কর বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর কমার্শিয়ালি ইমপর্টেন্ট পার্সন বা সিআইপি নির্বাচিত তরুণ ব্যবসায়ী মিলন জেলায় একটানা ৯ম বার সর্বোচ্চ করদাতা হলেন। বগুড়া কর অঞ্চলের উপ-কর কমিশনার হাবিবুর রহমান জানান, ৪৪ বছর বয়সী মাসুদুর রহমান মিলন দীর্ঘ পঁচিশ বছর ধরে কর দিয়ে আসছেন। গেল পঁচিশ বছরে তিনি ২৬ কোটি ২৪ লাখ ৩৪ হাজার ৬৪১ টাকা কর দিয়েছেন।
বগুড়ার প্রথম শ্রেণির ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘মেসার্স মাছুমা বেগম’-এর কর্ণধার মাসুদুর রহমান মিলন মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ব্যবসায় মনোযোগী হন। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি মমতাজ উদ্দিনের ছোট ছেলে মিলন প্রথমে চাতাল অর্থাৎ ধান-চালের ব্যবসা শুরু করেন। এরপর ইটভাটায় বিনিয়োগ করেন।
ব্যবসায়ী মিলন ২০১৩ সালে জেলার সাড়ে ৬ হাজার ব্যবসায়ীর সংগঠন বগুড়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি নির্বাচিত হন। তিনি চেম্বারের দায়িত্ব নেওয়ার পর রপ্তানী বাণিজ্যে মনযোগী হন। শুরুতে বগুড়া থেকে সীমিত আকারে শুধু পানির পাম্প রপ্তানি হলেও দিন দিন পণ্যের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে ধানের তুষ। সবমিলিয়ে বর্তমানে ৮ ধরনের পণ্য রপ্তানী হচ্ছে। এগুলো হলো- রাইস ব্র্যান ক্রুড অয়েল, পাটজাত পণ্য, তৈরি পোষাক, পানির পাম্প, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার, ভুট্টা ও ধানের তুষ। চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ৪ কোটি ৮ লাখ মার্কিন ডলার বা প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানী হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে বছর শেষে রপ্তানির পরিমাণ সাড়ে ৪ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। রপ্তানী বাণিজ্যে অবদান রাখায় সরকার মাসুদুর রহমান মিলনকে কমার্শিয়ালি ইমপর্টেটেন্ট পার্সন বা সিআইপি ঘোষণা করেন। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গত ১৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে তার হাতে সিআইপি কার্ড তুলে দেন। 
সিআইপি মনোনীত হওয়ার দশ দিনের মাথায় মিলন চেম্বারের উদ্যোগে বগুড়ায় প্রথমবার রপ্তানীকারকদের সম্মাননা জানানোর উদ্যোগ নেন। স্থানীয় পাঁচ তারকা হোটেল মম ইনে তিনি জেলার ১১ রপ্তানী কারকের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন।
ব্যবসা-বাণিজের সম্প্রসারণের পাশাপাশি মাসুদুর রহমান মিলন বগুড়া চেম্বারকে ‘উদ্যোক্তা তৈরির কারখানা’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এজন্য তিনি দশ তরুণ উদ্যোক্তাকে জামানত ছাড়াই বিনা সুদে ঋণ দিয়েছেন। এছাড়া অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা বৃত্তিও চালু করেছেন।
পর পর নয় বার সর্বোচ্চ করদাতার পুরষ্কার গ্রহকালে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় মাসুদুর রহমান মিলন বলেন, ‘আগামীতে আমার পরিবর্তে নতুন কেউ সর্বোচ্চ করদাতার পুরস্কার গ্রহণ করলে আমি খুশি হব। আমার আশা একদিন নতুন কেউ এই পুরস্কার গ্রহণ করবেন।’ অনুষ্ঠান স্থলের পেছনে থাকা তরুণদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আপনাদের উদ্যোক্তা হতে হবে। আমরা যারা আজ এখানে পুরস্কৃত হচ্ছি, আমাদের জায়গায় আপনাদেরও আসতে হবে। আপনারা ব্যবসা শুরু করুন। মনে রাখবেন আজ যারা সফল হয়েছে তারা কেউ লাখ লাখ টাকা দিয়ে শুরু করেনি। বরং নিজের কাছে যা ছিল তাই দিয়েই তারা শুরু করেছেন।’ তিনি তরুণদের উদ্যোক্তা হওয়ার ক্ষেত্রে চেম্বারের সহযোগিতা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘আমরা চেম্বারের পক্ষ থেকে তরুণদের জন্য বিনা সুদে উদ্যোক্তা ঋণ সুবিধা চালু করেছি। যদি আপনারা প্রয়োজন মনে করেন তাহলে চেম্বারে যোগাযোগ করুন।’