ব্যতিক্রমী আয়োজনের মধ্য দিয়ে শেষ হল বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদের প্রথম সংসদীয় সভা

প্রেস রিলিজ
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৪২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৭ বার।

ব্যতিক্রমধর্মী এক আয়োজনের মধ্যে দিয়ে শেষ হল বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ এর প্রথম সংসদীয় সভা ও সম্মাননা সদন প্রদান অনুষ্ঠান। বৃহস্পতিবার বিকাল ৪ টায় ধানমন্ডির ছায়ানট ভবনে বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদের ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এর 'ধন ধান্য পুষ্প ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, তাহার মাঝে আছে দেশ এক সকল দেশের সেরা' দেশত্ববোধক গানটি সমবেত কণ্ঠে বেজে ওঠে। 

যুবদের মধ্যে গণতান্ত্রিক চর্চা বৃদ্ধি ও যুবনেতৃত্বের বিকাশে ২০১৪ সাল থেকে জাতীয় সংসদের আদলে ৩০০ টি নির্বাচনী আসন ও ৫০ টি সংরক্ষিত মহিলা আসন থেকে মোট ৩৫০ জন যুব প্রতিনিধি নিয়ে বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ এর নিয়মিত অধিবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। অধিবেশনগুলোতে যুব প্রতিনিধিরা সংসদীয় রীতি মোতাবেক তাদের মতামত ও দাবিগুলো তুলে ধরেন। গত ১৯ অক্টোবর ২০১৯ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব নবাব আলী সিনেট ভবনে ৫০টির বেশি স্বেচ্ছাব্রতী সংগঠনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ এর ৮ম অধিবেশন বসেছিল, এই অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ যুব ছায়া সংসদ এর ৫০ টির বেশি সহ আয়োজক এবং স্বেচ্ছাসেবী বন্ধুদের সম্মাননা সনদ পত্র বিতরণ করা হয়। এছাড়াও এবারের সংসদীয় সভার আলোচ্য বিষয় ছিল 'খাদ্য অপচয় রোধ করি, ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশ গড়ি'। সংসদীয় সভায় সভাপতিত্ব করবেন সর্বদলীয় সংসদীয় গ্রুপ (এপিপিজি’স) এর সেক্রেটারি জেনারেল ও আমার অধিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন জনাব শিশির শীল। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এর মহাপরিচালক জনাব ফারুক আহমেদ এবং সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ডের কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন।

সংসদীয় সভার আলোচনায় খাদ্য অপচয় রোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সারাদেশে বছরব্যাপী প্রচারাভিযানের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। খাদ্য মানুষের মৌলিক মানবাধিকার। বাংলাদেশের সংবিধানে ১৫. ক অনুচ্ছেদে অন্ন, বস্ত্র, আশ্রয়, শিক্ষা ও চিকিৎসাসহ জীবনধারণের মৌলিক উপকরণের ব্যবস্থা করা রাষ্ট্রের অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। রাষ্ট্রে সকল নাগরিকের অধিকার সমান। নাগরিকের মৌলিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব, এটি কোন দান বা অনুগ্রহের বিষয় নয়। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে কিন্তু তারপরও এখনো প্রায় ২১ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো এর তথ্যমতে শুধুমাত্র ৬ টি খাদ্য পণ্যে প্রতিবছর ৩৭ লাখ ২৩ হাজার ৮৩৬ মেট্রিক টন খাদ্য নষ্ট হয়। এফএও’র তথ্যমতে বাংলাদেশের মাথাপিছু খাদ্য অপচয়ের পরিমাণ ২১ কেজি। সেই হিসেবে আমাদের মোট উৎপাদিত খাদ্যের প্রায় ৩০ শতাংশই নষ্ট হয়ে যায়, যার আর্থিক মূল ৩০ হাজার কোটি টাকা।

সিরডাপের তথ্যমতে উৎপাদনের পর কাটা, মাড়াই, সংগ্রহ, শুকানো, পরিস্কার, পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ পর্যন্ত কয়েকটি ধাপে ৩৫-৪০% খাদ্য নষ্ট হয়ে যায়। সংসদীয় সভায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় আগামী ৩১ আগস্ট ২০২০ সাল এর মধ্যে খাদ্য অপচয় রোধ ক্যাম্পেইনটি শেষ হবে। ক্যাম্পেইনের যাবতীয় তথ্য উপাত্ত, সাধারণ মানুষের দাবী ও মতামতসমূহ সংগ্রহ করা হবে। সেপ্টেম্বর ২০২০ সালে নীতি নির্ধারকদের সমন্বয়ে একটি নাগরিক সম্মেলন এর আয়োজন করা হবে। সম্মেলনে নীতি নির্ধারকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে ক্যাম্পেইনের যাবতীয় তথ্য-উপাত্তসমূহ তুলে ধরা হবে। এছাড়াও সরকারের কাছে খাদ্য অপচয় রোধে প্রাপ্ত সুস্পষ্ট সুপারিশগুলো তুলে ধরা হবে। যাতে সরকার খাদ্য অপচয় রোধে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন।