এক নারী গ্রেফতার: নাম রাখা হলো নাবিল সাকিদার

বগুড়া শজিমেক হাসপাতাল থেকে জন্মের পরই  চুরি যাওয়া সেই শিশু উদ্ধার

দোস্ত আউয়াল
প্রকাশ: ১৪ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৬০ বার।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল থেকে জন্মের পর পরই চুরি হওয়া সেই শিশুটিকে বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। শহরের চকলোকমান এলাকায় একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ওই ঘটনায়  রেশমা খাতুন (৩৫) নামে এক নারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে শাজাহানপুর উপজেলার রামচন্দ্রপুর গ্রামের মৃত সাত্তার মÐলের মেয়ে।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, নাড়ি ছেঁড়া ধন শিশুটিকে উদ্ধারের খবর পাওয়ার শজিমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তার মা নাহিদা বেগম এক নজর দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে ওঠেন। পরে তাকে বগুড়া সদর থানায় আনা হয়। সেখানেই পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা শিশুটিকে তার মায়ের কাছে হস্তান্তর করেন। এ সময় বাবার অনুরোধে পুলিশ সুপার শিশুটির নাম রাখেন নাবিল সাকিদার। চুরি যাওয়ার ৩৩ ঘন্টার মধ্যে শিশুটিকে সুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করতে পারায় শজিমেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এসএমএম সালেহ্ ভূইয়া পুলিশকে ধন্যবাদ জানান। বগুড়া সদর থানায় তিনি উপস্থিত গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রশংসা করেন।
বগুড়ার কাহালু উপজেলার বেলঘড়িয়া গ্রামের জনৈক সৌরভ সাকিদারের সন্তান সম্ভাবা স্ত্রী নাহিদা বেগম বুধবার দুপুর দেড়টার দিকে শজিমেক হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে স্বাভাবিকভাবে পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। জন্মের পর পরই কর্তব্যরত নার্সরা শিশুটিকে অপারেশন থিয়েটারের বাইরে অপেক্ষমান নাহিদার নানী শ্বাশুড়ি ওবেদা বেগমের কোলে তুলে দেন।
ওবেদা বেগমের ভাষ্য অনুযায়ী, অপরিচিত এক মহিলা তার কাছে গিয়ে বলে বাচ্চাটি অসুস্থ। তাকে শিশু ওয়ার্ডে নিয়ে চিকিৎসা দিতে হবে। এক পর্যায়ে ওই মহিলা ওবেদার কাছ থেকে বাচ্চাটিকে নিজের কোলে নেয় এবং তাকে (ওবেদা) তার সঙ্গে যেতে বলে। পরে নিচতলায় নামার সময় ভিড়ের মধ্যে অপরিচিত সেই মহিলা হারিয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যা নাগাদ বিষয়টি জানাজানি হলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসেন। ওই ঘটনায় ওই শিশুটির স্বজন এবং হাসপাতালের পক্ষ থেকে পৃথক দু’টি মামলা করা হয়। এছাড়া হাসপতাল কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করেন।
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান জানান, গ্রেফতার রেশমা খাতুনই কৌশলে ওবেদা বেগমের কাছ থেকে শিশুটি চুরি করেন। তিনি বলেন, রেশমা চুরি করা শিশুটিকে প্রথমে তার বাড়ি শাজাহানপুরের রামচন্দ্রপুরে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে পুলিশী অভিযানের মুখে ধরা পড়ার ভয়ে সে শহরের চকলোকমান এলাকায় ফারুক হোসেন নামে তার এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। পরে সেখানেই পুলিশ অভিযান চালিয়ে রাত ১১টার দিকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বদিজ্জামান জানান,  রেশমা খাতুনের বিয়ে হলেও তার স্বামী মারা গেছে। তবে সে নিঃসন্তান নয়। তার বিরুদ্ধে মানব পাচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞা জানান, শিশু চুরি বিষয়টি জানার পর পরই তাকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের একাধিক টিমকে মাঠে নামানো হয়। রেশমা কেন শিশুটিকে চুরি করলো সেটি জানার জন্য তাকে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।