বগুড়ায় বন্ধ থাকা সেই ৬ রুটে বাস চলাচল শুরু

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:২৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২২২ বার।

নতুন আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে হয়রানি করা হবে না-এমন আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে বগুড়ায় আন্তঃজেলা ও আভ্যন্তরীণ ৬টি রুটের বাস একদিন বন্ধ থাকার পর রোববার সকাল থেকে আবারও চলতে শুরু করেছে। তবে পরিবহন শ্রমিকরা জানিয়েছে, ২২ নভেম্বরের মধ্যে নতুন আইন শিথিলের চুড়ান্ত আশ্বাস না পেলে তারা আবারও স্বেচ্ছায় কাজ বন্ধ রাখবেন।
নতুন সড়ক আইন কার্যকর হলে জেল-জরিমানা গুণতে হবে -এমন শঙ্কায় ১৫ ১৬ নভেম্বর শনিবার বগুড়ার পরিবহন শ্রমিকরা বগুড়া থেকে নওগাঁ, সান্তাহার, আবাদপুকুর, আক্কেলপুর, আবাদপুকুর ও মোলামগাড়ি রুটে বাস চলাচল বন্ধ করে দেন। এছাড়া বগুড়া থেকে হিলি, জয়পুরহাট ও গাইবান্ধা রুটে বাস চলাচল সীমিত করে ফেলেন। পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই ৬টি রুটে বাস চলাচল বন্ধ এবং অপর ৩টি রুটে সীমিত করায় দূর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। 
পরে ওইদিন দুপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দের বৈঠকে পুলিশের পক্ষ থেকে নতুন আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে কোন হয়রানি করা হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। তখন পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষ থেকে দুপুর ২টা থেকে গাড়ি চালানোর কথা বলা হলেও উল্লেখিত রুটের শ্রমিকরা আর কাজে ফিরে যায়নি। তবে আজ সকাল ৮টার পর থেকে ওই সব রুটে বাস চলাচল শুরু হয়েছে।
বগুড়া মোটর মালিক গ্রæপের হিসাব অনুযায়ী  আন্তঃজেলা ও আভ্যন্তরীণী রুটে প্রায় ৭০০ বাস চলাচল করে। তবে সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এসব বাসের প্রায় ৯০ শতাংশেরই ফিটনেস নেই। এমনকি চালকদেরও লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি।
পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১ নভেম্বর নতুন সড়ক আইন কার্যকর হলেও সরকারের পক্ষ থেকে দুই সপ্তাহ তা শিথিল রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়। শুক্রবার সেই সময়-সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় যে কোন সময় অভিযান চালানো হবে-এমন শঙ্কায় রয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।
একদিন বন্ধ রাখার পর আবারও কাজে ফিরে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে নঁওগা বাস কাউন্টারের কর্মী সাইফুল ইসলাম জানান, পরিবহন মালিক-শ্রমিক ও প্রশাসনের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে তারা কাজে এসেছেন। বগুড়া-আক্কেলপুর রুটের বাস চালক আয়নুল ইসলাম জানান, তাদেরকে বলা হয়েছে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত কোন হয়রানি করা হবে না। এজন্য তারা কাজে ফিরেছেন। তবে তিনি বলেন, ‘২২ নভেম্বরের পর আমাদের শ্রমিক ফেডারেশন নেতৃবৃন্দ বসবেন। তারা কি সিদ্ধান্ত দেয় সেদিকে আমরা তাকিয়ে আছি। যদি নতুন আইন শিথিল করা না হয় তাহলে আমরা আবারও কাজ (গাড়ি চালানো) বন্ধ রাখবো।’ 
ওই রুটের অপর বাস চালক শাহাজাহান আলী বলেন, ‘আমরা আইন মানবো, তবে আমাদের জন্য সড়ক নিরাপদ ও পুলিশ হয়রানি বন্ধ করতে হবে। বগুড়া-নঁওগা বাসের বাসের চালক সাজু মন্ডল বলেন, ‘আমাদের দাবি একটাই। সেটা হলো সড়কে হয়রানি বন্ধ করতে হবে। নতুন আইন তুলে নিতে হবে। তা না হলে ২২ তারিখের পর আর গাড়ি চালাবো না।’ 
নওগাঁগামী বাসে থাকা বগুড়া সদরের পীরগাছার বাসিন্দা নাফিজার রহমান নতুন আইন নিয়ে পরিবহন মালিক শ্রমিক ও প্রশাসনের মধ্যে সমঝোতার দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতা প্রয়োজন। তা নাহলে হঠাৎ করে যানবাহন বন্ধ করে দিলে আমাদের সমস্যা হবে।’
বগুড়া জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সামছুদ্দিন শেখ হেলাল জানান, শ্রমিকরা তাদের না জানিয়েই বাস চলাচল বন্ধ করেছিল। তিনি বলেন, ‘আশাকরি এ ধরনের সমস্যা আর হবে না।’ বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না বলেন, ‘শ্রমিকরা এক ধরনের ভীতি থেকে যান চলাচল বন্ধ রেখেছিল। তবে পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হয়রানি না করার আশ্বাস দেওয়াতে তারা কাজে ফিরে এসেছে।’
বগুড়া সদর থানার ওসি এস এম বদিউজ্জামান বলেন, ‘যারা নবায়নের জন্য কাগজপত্র বিআরটিএ অফিসে জমা দিয়েছেন তাদেরকে ডকুমেন্টগগুলো কাছে রাখতে বলা হয়েছে। যারা এ ধরনের ডকুমেন্ট দেখাবেন তাদের কোন ভয় নেই। এটা আমরা বলে দিয়েছি এবং তাতে পরিবহন মালিক-শ্রমিক উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট হয়েছেন।’