থানায় অভিযোগ : কেটে ফেলা গাছ জব্দ

শেরপুরে অনুমতি ছাড়াই সরকারি ছয়টি গাছ কাটলেন ইউপি মেম্বার!

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর ২০১৯ ১১:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৬৬ বার।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়াই বগুড়ার শেরপুরে ছয়টি সরকারি গাছ কাটা হয়েছে। স্থানীয় বিশালপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য শহিদুল ইসলাম বিলকিছের নির্দেশে এই গাছগুলো কাটা হয়। মসজিদ উন্নয়নের নাম করে প্রায় পাঁচ লক্ষাধিক টাকার গাছ মাত্র আশি হাজার টাকায় বিক্রি দেখিয়ে টাকা লুটে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনাটি জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। একইসঙ্গে সরকারি গাছ বিক্রি ও কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন তিনি। 


অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার বিশালপুর ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দোয়ালসাড়া হাটখোলা বাজার এলাকাস্থ বেশকিছু দামি পুরণো গাছ রয়েছে। এরমধ্যে অর্ধশতবর্ষী ছয়টি মেহগনি গাছ কোন প্রকার অনুমোদন না নিয়েই স্থানীয় ইউপি সদস্য ও দোয়ালসাড়া এলাকার বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম বিলকিছ ও তার সহকারি একই এলাকার শাহীন আলম এবং মজনু মিয়া বিক্রি করে দেন। এমনকি গাছগুলো কেটেও ফেলা হয়। সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে গাছ কেটে বিক্রি করায় সরকারের অন্তত তিন থেকে চার লাখ টাকা ক্ষতি সাধিত হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে মঙ্গলবার সকালের দিকে অভিযোগটি সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, দোয়ালসাড়া হাটখোলার সরকারি ছয়টি গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। ইতিমধ্যে গাছগুলোর ক্রেতা স্থানীয় স’ মিলের জনৈক মালিক গাছের বেশির ভাগ অংশ নিয়েও গেছেন। এরপরও বেশকিছু ডাল-পালা পড়ে রয়েছে। তবে গাছগুলোর গুঁড়ি মাটি দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। যাতে কারো চোখে না পড়ে। তারা গাছগুলো কেটেছেন। বিষয়টি সম্পর্কে বক্তব্য জানতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম বিলকিছের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি দেশের বাইরে অবস্থান করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। তবে তার সহকারি আরেক অভিযুক্ত শাহীন আলম বলেন, মসজিদ উন্নয়নের জন্য গ্রামের সব লোকজন মিলে গাছগুলো কেটে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আগে গাছের ব্যবসা করতেন। তাই তাকে গাছগুলো কেটে বিক্রির দায়িত্ব দেয়া হয়। সে অনুযায়ী গাছগুলো কেটেছেন বলে স্বীকারও করেন তিনি।


এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. লিয়াকত আলী সেখ বলেন, সরকারি গাছ কাটার প্রয়োজন হলে নিয়ম অনুযায়ী তা করতে হবে। এক্ষেত্রে তা করা হয়নি। তাই এই কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা ও পুলিশ প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।


পরে নির্দেশনা অনুযায়ী ওই ইউনিয়ন ভূমি সহকারি মো. ফেরদৌস জামান শহিদ বাদি হয়ে থানায় একটি এজাহার দিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে শেরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) পুতুল মোহন্ত জানান, ইতিমধ্যে কেটে ফেলা সরকারি গাছের বেশকিছু অংশ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকতা।