খাগড়াছড়ির কুকুর পাচার হচ্ছে ভারতে

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০১৯ ১৩:০৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৬ বার।

খাগড়াছড়ির সীমান্তবর্তী উপজেলা দীঘিনালার বিভিন্ন হাট থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাচ্ছে ভারতের মিজোরামের বাসিন্দারা। পাহাড়ের হাট বা পথের এ সব কুকুর ধরে নিয়ে মিজোরামে বিক্রি করছে তারা। 

প্রায় প্রতি মাসেই পাহাড়ের বিভিন্ন হাট থেকে কুকুর ধরছে শিকারিরা। কুকুরগুলো সনাতনী ফাঁদে আটকানোর পর সরু তার দিয়ে কুকুরের মুখ বেঁধে দেয়া হয়। এ ছাড়া প্রতিটি কুকুরের গলায় আটকে দেয়া হয় শুকনো বাঁশ। খাওয়ার জন্য এ সব কুকুর নিয়ে যাওয়া হয়।

মিজোরামের বাজারে প্রতিটি কুকুর বিক্রি হচ্ছে ৬ থেকে ৭ হাজার টাকায়। মিজোরামে কুকুর বিক্রি নিষিদ্ধ করেছে সে দেশের আদালত। তার পরও ঠেকানো যাচ্ছে না কুকুর পাচার। কুকুরসহ যে কোনো প্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ বন্ধের দাবি জানিয়েছে প্রাণী প্রেমীরা। জানা গেছে, প্রায় প্রতি মাসেই খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বোয়ালখালি বাজার, বাবুছড়া, থানা বাজার থেকে কুকুর ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। মিজোরাম থেকে আসা এ সব কুকুর শিকারি হাটে ঘুরে ঘুরে কুকুর ধরে। অত্যন্ত অমানবিকভাবে এ সব কুকুর ধরলেও স্থানীয়রা কোনো বাঁধা দিচ্ছে না।

বুধবার দীঘিনালা থেকে ৩৫টি কুকুর ধরে নিয়ে যায় মিজোরামের ৫ কুকুর শিকারি। দীঘিনালার বাবুছড়া বাজার থেকে এ সব কুকুর শিকার হয় বলে জানা গেছে। পরে দীঘিনালা থেকে গাড়ি ভাড়া করে এ সব কুকুর রাঙ্গামাটির মাইনী বাজারে নিয়ে যায়। মাইনী থেকে কাপ্তাই হৃদ হয়ে এ সব কুকুর চলে যায় মিজোরামে।

পাহাড় থেকে অমানবিকভাবে কুকুর নিয়ে যাওয়ার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান প্রাণী প্রেমীরা। এ সময় তারা আমানবিকভাবে কুকুর শিকার বন্ধের দাবি জানান।

বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন, ২০১২ (২০১২ সালের ৩০ নং আইন)-এর আইন অনুযায়ী কোনো কারণ ব্যতীত মালিকবিহীন কোনো প্রাণী নিধন বা অপসারণ করা যাবে না।

পিপলস ফর অ্যানিম্যাল ওয়েলফেয়ারের প্রতিষ্ঠাতা রাকিবুল হক এমিল জানান, বাংলাদেশ প্রাণিকল্যাণ আইন ২০১৯ মতে মালিকবিহীন কুকুর হত্যা বা অপসারণ করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। যার সাজা ৬ মাস জেল এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ উল্ল্যাহ জানান, বিষয়টি আমি ফেসবুকে দেখেছি। এরপর কোনো শিকারি সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য থাকলে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।

খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করে জানান, এই বিষয়টি আমি প্রথম শুনেছি। কোনো প্রাণীর সঙ্গে নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। এই বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছি।