হোলি আর্টিজানে খুনের পর মৃতদেহ বিকৃত করেছিল জঙ্গিরা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০১৯ ১২:৩৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২১ বার।

হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় নিহতদের মধ্যে কয়েকজনের মৃতদেহ জঙ্গিরা বিকৃত করেছিল বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসকরা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে আন্তর্জাতিক জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) মতাদর্শে উজ্জীবিত পাঁচ তরুণ হত্যা করে ২০ জনকে।

নিহতদের মধ্যে ছিলেন সাতজন জাপানি, নয়জন ইতালীয়, একজন ভারতীয়, একজন দ্বৈত নাগরিক (বাংলাদেশি-আমেরিকান), দুজন বাংলাদেশি, দুই পুলিশ কর্মকর্তা, হোলি আর্টিজানের দুজন কর্মী ও হামলাকারী পাঁচজন।

মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ৪ জন চিকিৎসক ও ৫ জন সহকারী। সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ৩ জুলাই সকাল ১০টা থেকে পরদিন সকাল ৮টা পর্যন্ত হোলি বেকারিতে সে রাতে নিহত ২০ জনের ময়নাতদন্ত হয়।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ ময়নাতদন্তের পর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, পাঁচজন জঙ্গির পক্ষে ২০ জন মানুষকে এভাবে খুন করা স্বাভাবিক বিষয় নয়। খুনের পর কিছু মৃতদেহকে তারা বিকৃত করে।

ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোলি আর্টিজান রেস্তোরাঁর জিম্মিদের ৭ জনকে পেছন থেকে গুলি করা হয়। তাদের মাথার পেছন থেকে গুলি ঢুকে সামনে থেকে বেরিয়ে যায়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তারা মারা যান। কারও কারও মস্তিষ্ক থেঁতলে যায়। ময়নাতদন্তের সময় ক্ষতস্থান থেকে গুলি উদ্ধার করে চিকিৎসকেরা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন।

ওই সাতজনের ৪ জন ইতালির নাগরিক, ২ জন জাপানের ও ১ জন ভারতের নাগরিক তারিশি জৈন। সবচেয়ে বীভৎস কায়দায় হত্যা করা হয় ভারতীয় এই নাগরিককে। তারিশির দুই হাতসহ সারা দেহে চল্লিশটির মতো কোপ ও ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল।

এর বাইরে ফারাজ আইয়াজ হোসেন, বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অবিন্তা কবিরসহ ১০ জনের ঘাড়ে ও গলায় ছিল চাপাতির কোপ। ফারাজের হাতেও ছিল ক্ষত। তাদের কারও কারও দেহে বোমার স্প্লিন্টারও পাওয়া যায়।

বাংলাদেশি নাগরিক ইশরাত আখন্দ, ইতালীয় অন্তঃসত্ত্বা ১ জন নারী ও জাপানের ১ জন নাগরিকের মাথায় ভারী বস্তু দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। জাপানি এক নাগরিককে হত্যার পর রেস্তোরাঁর ডিপ ফ্রিজে ভরে রেখেছিল জঙ্গিরা।

নিহত পাঁচ জঙ্গির মধ্যে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে বোমার আঘাতে। বোমায় ১ জনের হাতের কবজি, ১ জনের হাত এবং ১ জনের মুখের একপাশ থেঁতলে যায়।