নওগাঁয় দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে বিএনপির দু'গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৯, আটক ৪

নওগাঁ (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৮ নভেম্বর ২০১৯ ১৬:০৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৪ বার।

নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন চলাকালে দু'পক্ষের সংঘর্ষে ৯ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এই ঘটনায় ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা সদরের রোকেয়া কমিউনিটি সেন্টারে সম্মেলনের সময় হামলার ওই সংঘর্ষ হয়। আহতদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

হামলার ঘটনায় সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ তার সমর্থক শহিদুল ইসলাম দুলাল, শাসছুর রহমান শামিম, সাজেদুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ।

আহতরা হলেন, উপজেলা বিএনপির বিএনপি কর্মী এরশাদ আলী (৩৬), সাইফুল ইসলাম (৪৭), জাকির হোসেন (২৮), শাহিন আলম (২২), হারুনুর রশিদ রাজু (৪২), সুমন ইসলাম (২৭), সেকেন্দার আলী (৫৫) ও বাশার আলী (৩৩) এবং উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুদ হায়দার (৪৮)।

স্থানীয় ও বিএনপি নেতাকর্মী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ১০টা থেকে উপজেলা সদরের মাস্টারপাড়া এলাকার রোকেয়া কমিউনিটি সেন্টারে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন দ্বি-বার্ষিক শুরু হয়। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ন মহাসচিব হাবিব-উন-নবী সোহেল। এসময় উপস্থিত ছিলেন, নওগাঁ জেলা বিএনপির আহবায়ক মাষ্টার হাফিজুর রহমান ও যুগ্ম আহ্বয়ক নাসির উদ্দিন সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

সকাল থেকেই পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকরা সম্মেলনে যেতে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাধা দিতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে সম্মেলন স্থলে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার নান্নুর নেতৃত্বে তাদের কর্মী-সমর্থকেরা লাঠিসোঠা নিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ করা হয়। হামলায় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য রবিউল ইসলাম পক্ষের নয় নেতাকর্মী আহত হন। আহতদের উদ্ধার করে মহাদেবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। দুইজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনজন প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েচে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়।

দলীয় সূত্রে জানা যায়, গত সেপ্টেম্বর মাসে রিয়াছত হায়দার টগরকে আহ্বায়ক করে উপজেলা বিএনপির ৩৩ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বয়ক কমিটি ঘোষণা হওয়ার পর থেকে বিএনপির দু’পক্ষের বিরোধ প্রকাশ্য রূপ নেয়। পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থকেরা আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। উপজেলা বিএনপির একটি পক্ষে নেতৃত্বে রয়েছে পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী এবং অপর পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন রবিউল আলম বুলেট।

রবিউল আলম বুলেট অভিযোগ করে বলেন, পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকী সম্মেলনকে বানচাল করার উদ্দেশে সন্ত্রাসী ভাড়া করে আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমার নয়জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীর সমর্থক উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুস সাত্তার বলেন, রবিউল জেলা বিএনপি ও কেন্দ্রীয় কিছু নেতাকে ভুল বুঝিয়ে প্রকৃত বিএনপির নেতাকর্মীকে বাদ দিয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন। এখন তার লোকজন নিয়ে কমিটি ঘোষণার চেষ্টা করছেন। সম্মেলন চলাকালে প্রকৃত বিএনপির নেতাকর্মীদের কমিটিতে পদ দেয়ার দাবি জানালে রবিউলের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়।

অপরদিকে, সম্মেলন শেষে রবিউল আলম বুলেটকে সভাপতি, আব্দুল মতিনকে সাধারন সম্পাদক এবং সাজ্জাদ হোসেনকে সাংগঠনিক সম্পাদক করে আংশিক কমিটি ঘোষনা করা হয়।

মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল বলেন, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন চলাকালে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ আরেফিন সিদ্দিকীসহ চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।