২ ভাই হত্যায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৭ জনের যাবজ্জীবন

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৪০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯১ বার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় চাঞ্চল্যকর স্কুলশিক্ষক মুজিবর রহমান ও তার ভাইকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও ৭ জনের যাবজ্জীবন ও এক আসামির ১০ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এই রায় দেন। এ সময় ৩ পলাতক আসামি ছাড়া বাকিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। খবর সমকাল অনলাইন

আদালত সূত্র জানিয়েছে, নিহত স্কুলশিক্ষক মুজিবর রহমানের ৭ম শ্রেণি পড়ুয়া নাতিকে প্রায়ই উত্যক্ত করতো স্থানীয় বখাটে আরিফুল ইসলাম। পরে আরিফুলকে এই কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন মজিবুর রহমানের ছেলে ও ওই ছাত্রীর বাবা রতন। এতে আরিফসহ তার বন্ধুরা ক্ষিপ্ত হয়। ২০১৬ সালের ২৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজ শেষ করে মুজিবর রহমানসহ তার ভাই ও ছেলেরা বাড়ি ফিরছিলেন। পথে আসামি নয়ন শেখ, কমল হোসেন মালিথা, আরিফ, কামারুল মালিথা, সুমন মালিথা, নজরুল ইসলাম, রহিম শেখ ওরফে লালিম শেখ, মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, সিহাব, আশরাফ ও সম্রাটসহ আরো ৩-৪ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি তাদের গতিরোধ করেন। এ সময় আসামিরা মুজিবর রহমান ও তার ভাই মিজানুর রহমানকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে জখম করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান শিক্ষক মুজিবর রহমান। তার ভাই মিজানুর রহমানকে গুরুতর আহতাবস্থায় প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ও পরে রাজশাহী পাঠানো হয়। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনার পর মুজিবর রহমানের ছেলে জাহারুল ইসলাম বাদী হয়ে ভেড়ামারায় থানায় মামলা করেন। পুলিশ তদন্ত করে আদালতে আসামিদের অভিযুক্ত করে চার্জশিট দেয়। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে রোববার এই রায় দেন আদালত।

রায়ে বিচারক ভেড়ামারা উপজেলার গোলাপনগর গ্রামের নরুল ইসলামের ছেলে আসামি কমল হোসেন মালিথা, ফকিরাবাদ গ্রামের কাবুল প্রামানিকের দুই ছেলে কামরুল প্রামানিক ও সুমন প্রামানিক এবং একই গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে নয়ন শেখকে (পলাতক) মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া ফকিরাবাদ গ্রামের ছের আলীর দুই ছেলে নজরুল শেখ ও আব্দুর রহিম ওরফে লালিম শেখ, আকুল মন্ডলের ছেলে মাহফুজুর রহমান ওরফে কবি, বেনজির প্রামানিকের ছেলে হৃদয় আলী (পলাতক), নাজির প্রামানিকের ছেলে সম্রাট আলী প্রামানিক (পলাতক), গোলাপনগর এলাকার মৃত নরুল হক মালিথার ছেলে জিয়ারুল ইসলাম ওরফে সিহাব মালিথা এবং আশরাফ মালিথাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গোলাপনগর এলাকার আইয়ুব আলীর ছেলে আরিফ মালিথাকে ১০ বছর কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকার জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ১ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। 

কুষ্টিয়া জজকোর্টের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, মামলাটি ছিল চাঞ্চল্যকর। সরকারি পক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আদালত ন্যায়বিচার করেছেন।

মামলার বাদী জাহারুল ইসলাম বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এখন দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানচ্ছি।