বগুড়া আ’লীগে সভাপতি পদে ৮ এবং সা. সম্পাদকে ১২জনের মনোনয়ন দাখিল

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ০২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৬:৩৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৭১ বার।

আওয়ামী লীগের বগুড়া জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে সোমবার শেষদিন আরও ১১জন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। এ নিয়ে গত দু’দিনে ওই দু’টি পদে মোট ২১ জন মনোনয়নপত্র উত্তোলন করেছেন। তবে উত্তোলনকারীদের মধ্যে এক প্রার্থীর মনোনয়নপত্র সোমবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দাখিল করা হয়নি।অবশ্য সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই সোমবার নেতা-কর্মীদের নিয়ে মিছিলসহ দলীয় কার্যালয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নপত্র উত্তোলন এবং জমা দেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য গটিত নির্বাচন কমিশনের সদস্য অ্যাডভোকেট মন্তেজার রহমান মন্টু জানান, প্রথম দিন রোববার এবং পরদিন সোমবার মনোনয়নপত্র উত্তোলনকারীদের মধ্যে একজন বাদে সকলেই তাদের মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তিনি বলেন, পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার রাত ১২টা পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। তাই যে একটি মনোনয়নপত্র এখনও জমা দেওয়া হয়নি তার জন্য তিনি ওই সময়-সীমা পর্যন্ত অপেক্ষা করবেন। 
শেষদিন সভাপতি পদে একজন জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তবিবর রহমান তবি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। এদিন সাধারণ সম্পাদক পদে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ এবং জমা দিয়েছেন তারা হলেন- বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক টি জামান নিকেতা, জেলা কমিটির দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন নবাব, প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কুমার রায়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম আক্কাস, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শেরিন আনোয়ার জর্জিস, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহরিয়ার আরিফ ওপেল, জেলা আ’লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটন ও শেরপুর উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা খাতুন।
এর আগে রোববার প্রথম দিন সভাপতি পদে জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুল, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, টি এম মুছা পেস্তা, তোফাজ্জল হোসেন দুলু মাস্টার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হায়দার আলী ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শেখ শামিম মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। ওইদিন সাধারণ সম্পাদক পদে যারা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন তারা হলেন-জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, মঞ্জুরুল আলম মোহন ও সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আল রাজী জুয়েল কোন এক নেতার পক্ষে সোমবার মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। তবে তিনি কার জন্য সেই মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন সেটি জানা যায়নি। এমনকি সোমবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত সেই মনোনয়নপত্র জমাও দেওয়া হয়নি।
প্রায় পাঁচ বছর পর আগামী ৭ ডিসেম্বর বগুড়ায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাশরাফি হিরো জানিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেরনে এবার ৫১৫জন কাউন্সিলর মনোনীত হয়েছেন। এছড়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রবীণ নেতা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন অ্যাডভোকেট আল মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট মন্তেজার রহমান মন্টু।
বগুড়ায় এবার আওয়ামী লীগের সম্মেলন নানা কারণে নেতা-কর্মীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব কারণের মধ্যে অন্যতম হলো প্রায় পঁচিশ বছর পর বগুড়ায় দলটির জন্য সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ সেই ১৯৯৪ সাল থেকে সভাপতি পদে আসীন মমতাজ উদ্দিন চলতি বছরের ১৭ ফেব্রæয়ারি প্রয়াত হয়েছেন। তার মৃত্যুতে ওই পদে নতুন মুখের কোন বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আরও যে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় সেটি হলো -এতদিন প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের অনুসারীরই জেলা কমিটির সিংহভাগ পদে স্থান পেতেন কিন্তু তার অবর্তমানে কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বেশ কৌতুহল রয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, বগুড়ায় আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব কাউন্সিলরদের ভোটে নির্ধারণ করা হবে নাকি কেন্দ্রের পছন্দ অনুযায়ী হবে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বলছে,  আগামীতে দলের নেতৃত্ব যে ক্লিন ইমেজের নেতাদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে সেটি প্রায় নিশ্চিত। এখন দেখার বিষয় হলো ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব খোঁজার মহান সেই দায়িত্ব কাউন্সিলরদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে নাকি বিভিন্ন সংস্থার জরিপ রিপোর্টকে আমলে নেওয়া হবে? উত্তরটি পেতে হলে যে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।