ওই দু’টি পদে মোট প্রার্থী ১৮ জন

বগুড়া আ’লীগে সভাপতি ও সা. সম্পাদক পদে দু’জনের প্রার্থীতা বাতিল

অরূপ রতন শীল
প্রকাশ: ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:০৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৮২০ বার।


বগুড়ায় জেলা আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে দু’জনের প্রার্থীতা বাতিল হয়ে গেছে। তারা হলেন- সভাপতি পদে বগুড়া সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হায়দার আলী ও সাধারণ সম্পাদক পদে শেরপুর উপজেলা পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা বেগম। মঙ্গলবার যাচাই-বাছাইয়ে ওই দু’জনের মনোনয়ন বাতিল হয়ে যাওয়ার পর এখন সভাপতি পদে ৭জন এবং সাধারণ সম্পাদক ১১জন প্রার্থী রইলেন।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব নির্বাচন উপলক্ষে গঠিত ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট মন্তেজার রহমান মন্টু জানিয়েছেন, কাউন্সিলর তালিকায় নাম না থাকায় সভাপতি পদে হায়দার আলীর প্রার্থীতা বাতিল হয়ে গেছে। আর ফিরোজা বেগমের প্রার্থীতাও একই অভিযোগের পাশাপাশি তিনি প্রস্তাবক ও সমর্থক হিসেবে যাদের নাম উল্লেখ করেছিলেন তারা প্রার্থী হিসেবে তাকে প্রস্তাব ও সমর্থনের কথা অস্বীকার করেছেন।
সভাপতি পদের প্রার্থীরা হলেন-জেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান মজনু, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মকবুল হোসেন মুকুল, অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম মন্টু, টি এম মুছা পেস্তা, তোফাজ্জল হোসেন দুলু মাস্টার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তবিবর রহমান তবি ও শহর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক শেখ শামিম। 
সাধারণ সম্পাদক পদের প্রার্থীরা হলেন- বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, টি জামান নিকেতা, মঞ্জুরুল আলম মোহন, জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুর রহমান দুলু, প্রদীপ কুমার রায়, শাহরিয়ার আরিফ ওপেল, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন নবাব, প্রচার সম্পাদক সুলতান মাহমুদ খান রনি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম আক্কাস, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শেরিন আনোয়ার জর্জিস ও জেলা আ’লীগের সাবেক যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক এবং সোনাতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিনহাদুজ্জামান লিটন।
প্রায় পাঁচ বছর পর আগামী ৭ ডিসেম্বর বগুড়ায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।  বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মাশরাফি হিরো জানিয়েছেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেরনে এবার ৫১৫জন কাউন্সিলর মনোনীত হয়েছেন। এছড়া নির্বাচন পরিচালনার জন্য প্রবীণ নেতা ও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিনের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। কমিশনের অপর দুই সদস্য হলেন অ্যাডভোকেট আল মাহমুদ ও অ্যাডভোকেট মন্তেজার রহমান মন্টু।
বগুড়ায় এবার আওয়ামী লীগের সম্মেলন নানা কারণে নেতা-কর্মীদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এসব কারণের মধ্যে অন্যতম হলো প্রায় পঁচিশ বছর পর বগুড়ায় দলটির জন্য সভাপতি পদে নতুন নেতৃত্ব বেছে নেওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। কারণ সেই ১৯৯৪ সাল থেকে সভাপতি পদে আসীন মমতাজ উদ্দিন চলতি বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি প্রয়াত হয়েছেন। তার মৃত্যুতে ওই পদে নতুন মুখের কোন বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের পুনর্গঠনের ক্ষেত্রে আরও যে বিষয়টি লক্ষ্যণীয় সেটি হলো -এতদিন প্রয়াত মমতাজ উদ্দিনের অনুসারীরই জেলা কমিটির সিংহভাগ পদে স্থান পেতেন কিন্তু তার অবর্তমানে কি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে তা নিয়ে নেতা-কর্মীদের মধ্যে বেশ কৌতুহল রয়েছে।
সূত্রগুলো জানায়, বগুড়ায় আওয়ামী লীগে নেতৃত্ব কাউন্সিলরদের ভোটে নির্ধারণ করা হবে নাকি কেন্দ্রের পছন্দ অনুযায়ী হবে সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র বলছে,  আগামীতে দলের নেতৃত্ব যে ক্লিন ইমেজের নেতাদের হাতেই তুলে দেওয়া হবে সেটি প্রায় নিশ্চিত। এখন দেখার বিষয় হলো ক্লিন ইমেজের নেতৃত্ব খোঁজার মহান সেই দায়িত্ব কাউন্সিলরদের হাতেই ছেড়ে দেওয়া হবে নাকি বিভিন্ন সংস্থার জরিপ রিপোর্টকে আমলে নেওয়া হবে? উত্তরটি পেতে হলে যে ৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকতে হবে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।