সে তো রাজার হালেই আছে: খালেদাকে নিয়ে হাসিনা

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:০০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৮০ বার।
দুর্নীতিতে দণ্ডিত খালেদা জিয়ার গৃহকর্মীসহ হাসপাতালে অবস্থান নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি তো ‘রাজার হালেই’ আছেন।

বিএনপি চেয়ারপারসন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে তার দলের নেতারা যে দাবি করছেন সে বিষয়ে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেছেন, “তার অসুস্থতা, সেটা তো পুরানো। ’৯১ সালে সরকারে এসে তার ‘নি’ (হাঁটু) রিপ্লেস করা হয়েছিল। পরবর্তীতে সৌদি আরবে আবার অপারেশন করা হয়।

“বিদেশে যাওয়ার পরে সে যখন শপিং করে তখন হুইল চেয়ারে শপিং করত, ফালু ঠেলত, আর সে গিয়ে শপিং করত। সে যখন হজ করে সেখানেও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলে সে হজ করে। হুইল চেয়ারে বসা সেটা নতুন কিছু হয়। এটাতো বহু যুগ ধরে দেখে আসছি।” খবর বিডিনিউজটোয়েন্টিফোর ডটকম  

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া এতিমখানা মামলায় ১৭ বছরের কারাদণ্ড নিয়ে গত বছর ফেব্রুয়ারি থেকে কারাবন্দি আছেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। প্রথম দিন থেকেই কারাগারে তার সঙ্গে আছেন দীর্ঘদিনের গৃহ পরিচারিকা ফাতেমা বেগম। এরমধ্যে অসুস্থ হওয়ায় গত আট মাস ধরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন খালেদা জিয়া।

সেখানে তার সুষ্ঠু চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে ৭৩ বছর বয়সী খালেদাকে ‘পঙ্গুত্ব’ থেকে রক্ষায় তার জামিনের দাবি জানাচ্ছেন বিএনপি নেতারা। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে খালেদার জামিন শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে। সেজন্য বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কর্তৃপক্ষের কাছে খালেদার শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদনও চেয়েছে আদালত।

এদিনই দলীয় চেয়ারপারসনের জামিন হবে বলে আশাবাদী বিএনপির একাধিক নেতা তা না হলে নেত্রীকে মুক্ত করতে আন্দোলনে নামার হুমকি দিয়েছেন।

তার আগের দিন বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে আওয়ামী লীগের ২১তম জাতীয় সম্মেলন উপলক্ষে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে বক্তব্যে এ বিষয়ে কথা বলেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “খালেদা জিয়া যে জেলে আছে, সে তো ভালো, রাজার হালেই আছে। জেলখানা থেকে এখন হাসপাতালে। তার জন্য আবার মেইড সার্ভেন্ট দেওয়া হয়েছে। মানুষ এমনিতে কাজের বুয়া পায় না। আর খালেদা জিয়ার জন্য স্বেচ্ছায় একজন কারাবরণ করছে, তার সেবা করার জন্য। এতটুকু সুবিধা তাকে দেওয়া হয়েছে।

“আমাদের ভিতরে কোনো প্রতিহিংসাপরায়ণতা নাই। কিন্তু পৃথিবীর কোন দেশে এই দৃষ্টান্ত দেখাতে পারবেন, জেলে সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবার জন্য কোনো কাজের বুয়া যায়? সেটাও কিন্তু সে পাচ্ছে।”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের একটা কথা সবাইকে মনে রাখতে হবে, সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত রেখেছি। এই সন্ত্রাসের গডমাদারই হচ্ছে খালেদা জিয়া। সে এই বাংলা ভাই সৃষ্টি থেকে শুরু করে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মেরে ফেলা, এর চেয়ে বড় সন্ত্রাসী কাজ তো হয় না। জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা, এর চেয়ে বড় সন্ত্রাসী কাজ আর কি হতে পারে? ঠাণ্ডা মাথায় হরতাল অবরোধ ডেকে, যে অবরোধ এখনও তিনি তোলেননি।”

স্বাধীন বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাক, তা দেশি-বিদেশি স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনও চাননি এবং নানাভাবে ষড়যন্ত্র করে এসেছে বলে মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

“যে কারণে বাংলাদেশ যখনই সুষ্ঠুভাবে চলতে শুরু করেছে তখনই আসল ১৫ অগাস্ট। ১৫ অগাস্টে যে জিয়াউর রহমান জড়িত ছিলেন, সেটা খুনি রশিদ ও ফারুকের বক্তব্যেই প্রমাণিত।”

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকাণ্ডের ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দেশকে এগিয়ে নিতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়, সেগুলো তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, “১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমরা বাংলাদেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করেছিলাম, স্বাক্ষরতার হার, বিদ্যুতের উৎপাদন বাড়িয়েছিলাম, বিদেশি বিনিয়োগ এসেছিল। আমরা প্রতিটি সেক্টরকে বেসরকারি খাতে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলাম। এতে আমাদের অর্থনীতির চাকা আরও সচল হয়। দুর্ভাগ্য হলো ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসতে পারি নাই। আমাদের আসতে দেওয়া হয়নি, সেটা একটা গভীর চক্রান্ত ছিল।

“২০০১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসার পরে অমানবিক নির্যাতন শুরু করেছিল। এই নির্যাতনের শিকার শুধু আমাদের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী তা না, একদিনে ১৩ জন সচিবের চাকুরি নাই। শত শত সেনা অফিসার, সিভিল প্রাশসকদের চাকুরিচ্যুত করা হল। আর যাদের চাকুরিচ্যুত করা হয়নি তাদের ওএসডি করা হয়েছিল, যতদিন খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিল তারা ওএসডি ছিল। এভাবে তারা অত্যাচারের ‘স্টিম রোলার’ চালাতে থাকে।”