প্রথম দিনের শুনানিতে আদালতে চুপচাপ সু চি

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:৫৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১২৬ বার।

নেদারল্যান্ডসের হেগে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়েছে।

মামলায় মিয়ানমারের পক্ষে লড়তে এদিন আদালতে আসেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি। ২০১৬ সালে সু চি যখন পশ্চিম ইউরোপ সফরে যান, তখন তাকে বরণ করা হয়েছিল 'গণতন্ত্রের মানসকন্যা' ও 'আশা-ভরসার প্রতীক' হিসেবে। আর এখন তিনি নিন্দিত রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুকে হত্যার জন্য। শান্তিতে নোবেল পাওয়া এই নেত্রীর যেখানে গণহত্যার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেওয়ার কথা, সেখানে তার ভূমিকা বিপরীত।

মঙ্গলবার শুনানি শুরুর আগে সু চি আদালতে আসেন মিয়ানমারের ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে। আদালতে ঢোকার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেননি তিনি। গণহত্যার অভিযোগ মাথায় নিয়ে তিনি বেশ স্বাভাবিক ভাবেই আদালতে প্রবেশ করেন। শুনানিতে গাম্বিয়ার আইনজীবীরা যখন রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর  নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরে তখন সেখানে চুপচাপ বসে ছিলেন সু চি।

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গাম্বিয়ার দায়ের করা ওই মামলায় শুনানি চলবে তিন দিন। মামলায় গণহত্যার আন্তর্জাতিক সনদ লঙ্ঘন করে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে।

ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সমর্থনে গাম্বিয়া আইসিজেতে ওই মামলা করে। রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা প্রদান ও রাখাইনে গণহত্যার আলামত নষ্টের বিভিন্ন অভিযোগের ওপর এই শুনানি হচ্ছে।

মঙ্গলবার আদালতে গাম্বিয়ার বক্তব্য উপস্থাপনের পর বুধবার মিয়ানমার তাদের অবস্থান তুলে ধরবে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে গাম্বিয়া এবং বিকেলে মিয়ানমার প্রতিপক্ষের যুক্তি খণ্ডন ও চূড়ান্ত বক্তব্য পেশের সুযোগ পাবে।

দ্য হেগের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, রোহিঙ্গা এবং মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে শুনানি শুরু হয়। গাম্বিয়ার প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সে দেশের আইন ও বিচারমন্ত্রী আবুবকর মারি তামবাদু। মিয়ানমারের নেতৃত্বে থাকছেন দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি।

শুনানিতে গাম্বিয়ার বিচারমন্ত্রী বলেন, আধুনিক যুগে এই গণহত্যা কোনোভাবেই গ্রহণ করা যায় না। রোহিঙ্গারাও মানুষ। খাদ্য বস্ত্র বাসস্থানসহ বাঁচার অধিকার তাদের রয়েছে। রোহিঙ্গা শিশুদের অধিকার রয়েছে শিক্ষা লাভ করে ডাক্তার হওয়ার।

শুনানিতে গ্যাম্বিয়ার নিযুক্ত কৌঁসুলি অ্যান্ড্রু লোয়েনস্টিন রাখাইনের মংডু শহরে বেশ কয়েকটি খুনের বিবরণ পেশ করেন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ওই শহরের শত শত রোহিঙ্গা পুরুষকে হত্যা ও নারীদের ধর্ষণ করে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

শুনানিতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে যখন একের পর এক অভিযোগ তুলে ধরা হয়, তখন সু চির বিশেষ কোন অভিব্যক্তি লক্ষ্য করা যায়নি। কখনও সামনে আবার কখনও নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলেন তিনি।