খুলনায় অনশনরত পাটকল শ্রমিকের মৃত্যু

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:৩৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০৮ বার।

খুলনায় আমরণ অনশনে অসুস্থ হয়ে আব্দুস সাত্তার (৪৫) নামে প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। খবর দেশ রুপান্তর অনলাইন 

শ্রমিকরা জানান, তিন দিনে শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাদের অনেককে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ছাড়া অসুস্থ অনেকে অনশনস্থলে স্যালাইন নিচ্ছেন।

অনশনরত পাটকল শ্রমিকের মৃত্যুতে নগরীর খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের সিবিএ সভাপতি সাহানা শারমিন জানান, আমরণ অনশন চলাকালে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের গেটের সামনে বিআইডিসি সড়কে শ্রমিক আব্দুস সাত্তার অসুস্থ হয়ে পড়েন। সঙ্গে সঙ্গে তাকে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিলের প্রকল্প কর্মকর্তা গোলাম রব্বানী মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, মিলের তাঁত বিভাগের শ্রমিক অনশন চলাকালে সকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

বৃহস্পতিবার  বেলা ১২টার দিকে নগরীর খালিশপুর শিল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাস্তার ওপর তাবু টানিয়ে শ্রমিকদের কেউ শুয়ে আছেন, আবার কেউ বসে আছেন। শ্রমিক নেতারা বক্তৃতা করছেন। কেউ কেউ গান গেয়ে সময় কাটাচ্ছেন। তাবুর খুঁটিতে টানানো হয়েছে সুতলি। সেই সুতলিতে স্যালাইনের পাইপ বেধে অসুস্থদের দেওয়া হচ্ছে স্যালাইন। এরই মধ্যে দুই শ্রমিক অচেতন হয়ে পড়েন। তাদের ধরাধরি করে ইজিবাইকে করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।

খালিশপুর জুট মিলের আমরণ অনশনরত শ্রমিক আকবর আলী মিয়া ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন, শ্রমিকরা নিজেদের কাঁথা-কম্বল নিয়ে অনশনে নেমেছে। সমস্যার সমাধান করতে যদি মরতে হয় তবুও দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আমরণ অনশন কর্মসূচি চলবে।

শ্রমিক নেতা মো. মুরাদ হোসেন বলেন, ১৫ ডিসেম্বর সকাল ১১টায় পাট মন্ত্রণালয়ে আন্দোলনরত পাটকল শ্রমিকদের সঙ্গে পাটমন্ত্রী ও শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এজন্য বুধবার রাতে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনার কর্মসূচি স্থগিত করার অনুরোধ করেছেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান। কিন্তু শ্রমিকরা তা মানেনি।

এর আগে মঙ্গলবার থেকে মজুরি কমিশন বাস্তবায়সহ ১১ দফা দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকলের শ্রমিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের ডাকে তারা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছে।

আন্দোলনরত পাটকলগুলো হচ্ছে, ক্রিসেন্ট জুট মিল, খালিশপুর জুট মিল, দৌলতপুর জুট মিল, প্লাটিনাম জুবিলি জুট মিল, স্টার জুট মিল, আলিম জুট মিল, ইস্টার্ন জুট মিল, কার্পেটিং জুট মিল ও জেজেআই জুট মিল।

মজুরি কমিশন বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবিতে ১৭ নভেম্বর ৬ দিনের কর্মসূচির ডাক দেয় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদ।