দুর্নীতিবাজরা মাটির নিচে থাকলেও তাদের খুঁজে বের করতে হবে: হাইকোর্ট

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১০:৩৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৪২ বার।

‘দুর্নীতি মামলার আসামিরা মাটির নিচে থাকলেও সেখান থেকে তাদের খুঁজে বের করতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট। অর্থ আত্মসাতের মামলায় একটি জামিন আবেদনের শুনানিকালে রোববার বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন। খবর যুগান্তর অনলাইন 

আদালত আরও বলেন, দুর্নীতিবাজরা দেশের রক্ত চুষে খাচ্ছে। এদের কোনো ক্ষমা নেই।

আদালত বলেন, দুর্নীতি মামলার আসামিরা মাটির নিচে থাকলেও সেখান থেকে তাদের খুঁজে বের করতে হবে। কারণ, ব্যাংকের অর্থ জনগণের সম্পদ। যেকোনো মূল্যে ব্যাংকের আত্মসাৎ হওয়া টাকা উদ্ধার করতে হবে। প্রয়োজনে আসামিদের সম্পত্তি বিক্রি করে ব্যাংকের টাকা আদায় করতে হবে।

এসময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ আশরাফ উদ্দিন ভুঁইয়া। আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী হোসাইন মোহাম্মদ ইসলাম।

পরস্পর যোগসাজশে জাল রেকর্ডপত্র তৈরি করে প্রতারণামূলকভাবে ও ভুয়া রফতানি দেখিয়ে ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডের ধানমন্ডি শাখায় ২৬টি বিল জমা দেয়া হয়। পরে ১৭টি বিলের বিপরীতে ২৬ কোটি ৮৫ লাখ ৯৮ হাজার ১২৬ টাকা উত্তোলন করে আসামিরা। এর মধ্যে ৩টি বিলের মূল্যসহ ও চতুর্থ বিলের আংশিক মূল্যসহ মোট পাঁচ কোটি ৬১ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যাংকে ফেরত দেয়া হয় এবং অবশিষ্ট ১৪টি বিলের মূল্য ২১ কোটি ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৪৭১ টাকা ব্যাংকে ফেরত না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। পরে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. ইকবাল হোসেন সাত জনকে আসামি করে ধানমন্ডি থানায় ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর মামলা করেন। মামলাটি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্তাধীন রয়েছে।

ওই মামলার আসামিরা হলেন— সাইমেক্স লেদার প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব টি এস আইয়ুব, তার স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমান, ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার ভিপি ও ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম, ব্যাংকটির এভিপি ও সিপিসি সুলতানা ফাহমিদা, মেসার্স এস অ্যান্ড এস এজেন্সির মালিক বিভূতি ভূষণ বালা, মেসার্স জামান এন্টারপ্রাইজের মালিক শেখ আসাদুজ্জামান মিন্টু এবং মেসার্স সাদাত এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. আমিনুল ইসলাম।

ওই মামলায় গত জানুয়ারিতে সাইমেক্স লেদার প্রাইভেট লিমিটেডের চেয়ারম্যান তালহা শাহরিয়ার আইয়ুব (টি এস আইয়ুব) এবং তার স্ত্রী পরিচালক তানিয়া রহমান হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন। আদালত তাদের আবেদন নামঞ্জুর করে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন। তারা গত ২১ মার্চে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন পান। পরে ওই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক আবেদন জানালে গত ৯ ডিসেম্বর তাদের জামিন বাতিল করেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯। একইসঙ্গে তাদেরকে এক সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন ওই আদালত।

এরপর একই মামলার আসামি ঢাকা ব্যাংকের ধানমন্ডি শাখার ভিপি ও ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান। কিন্তু আমিনুল ইসলাম তার জামিন নথিতে সাইমেক্স লেদারের চেয়ারম্যান ও পরিচালক জামিন পেয়েছে বলে তথ্য দিলেও তাদেরকে পুনরায় আত্মসমর্পণ করতে বলার নতুন তথ্য উল্লেখ করেনি।

পরে আমিনুল ইসলামের জামিন আবেদনের শুনানিকালে সাইমেক্স লেদারের চেয়ারম্যান ও পরিচালকের জামিন না হওয়ার বিষয়ে প্রকাশিত একটি টেলিভিশন চ্যানেলের প্রতিবেদন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীরা আদালতে পেশ করেন। তখন আদালত আমিনুল ইসলামকে কেন জামিন দেওয়া হবে না জানতে চেয়ে পূর্বের রুল খারিজ করে দেন