বগুড়ায় ছাদ থেকে ঝাঁপ দেয়া সেই মাদ্রাসা ছাত্রীর মৃত্যু

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০১৯ ১২:২২ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৬৩ বার।

অবশেষে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবনের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে গুরুতর আহত হওয়া সেই ছাত্রী। প্রায় ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে সোমবার  বিকেলে মারা যান তৃতীয় শ্রেণীর ওই ছাত্রী। তার নাম মোছা. জান্নাতি খাতুন (১২)। সে ধুনট উপজেলার গোসাইবাড়ী ইউনিয়নের জোরখালী মধ্যপাড়া গ্রামের মো. মিলন রহমানের মেয়ে।


গত ০৯ ডিসেম্বর দিনগত রাত অনুমান সাড়ে ১২টার দিকে পৌরশহরের ধুনটমোড়স্থ শেখ হাফিজার প্লাজায় অবস্থিত হযরত ফাতেমা (রা:) বালিকা মাদ্রাসার পাঁচতলা ভবন থেকে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাঁকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কিন্তু সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাৎক্ষণিক তাঁকে বগুড়ায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এরপর থেকে বগুড়ার শজিমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) লাইফ সার্পোটে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় মারা যান মাদ্রাসা ছাত্রী জান্নাতি খাতুন।

চলতি বছরের গত ৩০নভেম্বর গার্মেন্টস্ কর্মী মিলন রহমান তার মেয়েকে ওই মাদ্রাসায় তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করে দেন। একইসঙ্গে মাদ্রাসার আবাসিক হোটেলে রাখেন। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করতে অস্বীকৃতি জানায়। এরপরও অনেকটা জোরপূর্বক তাকে মাদ্রাসার ওই বোর্ডিংয়ে রাখা হয়। এতে ক্ষোভ ও অভিমান করে ঘটনার রাতে মাদ্রাসা ভবনের পাঁচতলার ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায় সে।


মাদ্রাসা পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিগত ২০১৬সালে উপজেলার শাহ বন্দেগী ইউনিয়নের হামছায়াপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন ওই ভবনের তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়ে মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকে তিনিসহ নিকট স্বজনদের নিয়ে কওমী ও আলীয়া মাদ্রাসার পৃথক সিলেবাস অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করে আসছেন।


এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অত্র মাদ্রাসার পরিচালক মাওলানা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ছাত্রীটিকে দাফন করার কাজে ব্যস্ত আছি। তাই ঘটনাটি নিয়ে এই মুহূর্তে আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কথা বলতে পারছি না। পরে কথা হবে- এমন মন্তব্য করে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে শেরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির বলেন, কেন ওই মাদ্রাসা ছাত্রী পাঁচতলা ভবন থেকে ঝাপ দিয়ে আত্মহত্যা করলো তা গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তপূর্বক আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।