বগুড়ায় ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত দপ্তরিকে শোকজ

শেরপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:৩৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৬৩ বার।

বগুড়ার শেরপুরে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টায় অভিযুক্ত দপ্তরিকে শোকজ করা হয়েছে। কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কারণে দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরী মাসুদ রানাকে শোকজ করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি। একইসঙ্গে আগামি তিন কার্যদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দিতে নির্দেশও দেয়া হয় তাকে।

গত ১০ ডিসেম্বর চতুর্থ শ্রেণীর ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় লম্পট দপ্তরি মাসুদ রানা। পরে ঘটনার বিচার চেয়ে পরদিন ১১ ডিসেম্বর ওই ছাত্রীর মা প্রধান শিক্ষক সুমিতা চ্যাটার্জীর কাছে অভিযোগ করেন। কিন্তু ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে চলে যান ওই দপ্তরি। পাশাপাশি ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্রের দ্বাড়স্থ হন।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবুল কাশেম মন্ডল বলেন, শুনেছি বাদি-বিবাদী আপোষ-রফা হয়ে গেছে। এক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের টাকাও লেনদেন হয়। তাই প্রভাবশালী চক্রটির পরামর্শে বাদি-বিবাদী উভয় আত্মগোপনে চলে গেছেন। কাউকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। যাতে করে ঘটনাটি ধামাচাপা পড়ে যায়। কিন্তু এহেন কর্মকাণ্ডের পর টাকার জোরে সব মহলকে ম্যানেজ করে পার পেতে চায়। তবে ধর্ষণ চেষ্টা ধামাচাপা দিলেও কোন প্রকার ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় তাকে শোকজ করা হয়েছে। সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুমিতা চ্যাটার্জ্জী জানান, স্কুলের ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার ঘটনাটি নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মাঝে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। এছাড়া ছুটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকায় তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতেও নোটিশ দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ওই দপ্তরির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রেজুলেশনের মাধ্যমে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে অনুরোধ জানানো হয়েছে বলে দাবি করেন এই প্রধান শিক্ষক। 

এদিকে স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগ করে বলেন, ঘটনাটি আপোষ-রফার নামে ধামাচাপা দিতে দুই লাখ টাকার লেনদেন হয়। এর মধ্যে ৬০ হাজার টাকা বাদি পক্ষের লোকজনকে দেয়া হয়। আর বাকি টাকা সব মহলকে ম্যানেজ করতে ব্যয় করা হয়। ফলে ভয়ভীতি দেখিয়ে অনেকটা জোরপূর্বকই ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর পরিবারকে এলাকা ছাড়া করা হয়েছে। যাতে করে থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করতে না পারে। 

প্রসঙ্গত: গত ১০ডিসেম্বর বিকেলে বিদ্যালয়ের বার্ষিক পরীক্ষা শেষে ওই ছাত্রীকে বাড়ি যেতে নিষেধ করেন লম্পট দপ্তরি মাসুদ রানা। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার কৌশল শেখাবেন বলে জানান। কিন্তু বিদ্যালয় থেকে সবাই চলে গেলে ওই ছাত্রীকে স্কুলের একটি শ্রেণী কক্ষে নিয়ে দপ্তরি মাসুদ জোরপূর্বক তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। একপর্যায়ে চিৎকার শুরু করলে ওই ছাত্রীকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। পরে বিষয়টি তার বাবা-মা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের জানানো হলে স্কুলের প্রধান শিক্ষককের নিকট অভিযোগ করা হয়।