বগুড়ায় ৪৫০ অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে

স্বাধীনতা বিরোধীদের নৃশংসতার কাহিনীও পাঠ্য বইয়ে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে-মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৩:০৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৫৫ বার।

পাঠ্য বইয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্ব বর্ণনার পাশাপাশি স্বাধীনতা বিরোধীদের নৃশংসতার কাহিনীও অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম মোজাম্মেল হক। বুধবার বিকেলে বগুড়ায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘পাকিস্তান হানাদার বাহিনী ও তাদের দোসরদের অত্যাচারের রূপটা কত ভয়াবহ ছিল তা নতুন প্রজন্ম জানে না। কারণ আমাদের পাঠ্য পুস্তুকে সেগুলো লেখা নাই। তাই পাঠ্য পুস্তকে মুক্তিযোদ্ধাদের গৌরব গাঁথার পাশাপাশি পাকিস্তান হানাদার বাাহিনীর দোসর- জামায়াতে ইসলামী, আল-বদর আল শামস্ ও রাজাকারদের বিভৎস নির্যাতনের কাহিনী লেখা থাকতে হবে। যাতে তারা বুঝতে পারে কারা আমাদের ভাল করেছে আর কারা মন্দ করেছে।’
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী বগুড়া শহরের কারবালা এলাকায় সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উদ্বোধনকালে একই সঙ্গে জেলার গাবতলী ও আদমদীঘি উপজেলায় নবনির্মিত অপর দু’টি ভবনেরও উদ্বোধন করেন। পরে তিনি মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বগুড়া জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ। স্বাগত বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক আব্দুল হাকিম। সভায় মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু দাবি-দাওয়া তুলে ধরা হয়।
আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমালোচনা করে বলেন, ‘তিনি সেক্টর কমান্ডার হলেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে ছিলেন না। তার সব কাজই ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী। যে কারণে তিনি তার মন্ত্রী সভায় স্বাধীনতার পক্ষের কোন লোককে স্থান দেননি। মুক্তিযোদ্ধাদের উদাসীনতা পরিহার করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নে আবারও গর্জে ওঠার আহবান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের (মুক্তিযোদ্ধা) সন্তানদের যদি কেউ জিজ্ঞাসা করে তোমার বাবা কোন সেক্টরে যুদ্ধ করেছে তাহলে সে বলতে পারে না। এটা আমাদের উদাসীনতার কারণেই এমনটা হচ্ছে। এটা পরিহার করতে হবে। আমি ও আমরা যে ধারায় চলি আমার আত্মীয়-স্বজনদের সেই ধারায় চলতে হবে। যদি তারা অন্য ধারায় চলে তাহলে সেটা শোভনীয় হবে না। আমাদের মনে রাখতে হবে আমরা বঙ্গবন্ধুর ডাকে অস্ত্র জমা দিয়েছি কিন্তু চেতনা ও টেনিং কিন্তু জমা দেইনি।’
সারাদেশে অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বাড়ি নির্মাণের ঘোষণা দিয়ে আ.ক. ম মোজাম্মেল হক বলেন, যারা অস্বচ্ছল মুক্তিযোদ্ধা তাদেরকে বাড়ি নির্মাণের জন্য ১৬ লাখ টাকা করে বরাদ্দ দেওয়া হবে। ২০২০ ও ২০২১ সালে ১৪ হাজার করে সারাদেশে একই ডিজাইনের মোট ২৮ হাজার বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। যাতে ডিজাইন দেখে সকলেই দেখলে বুঝতে পারে সেটি একজন মুক্তিযোদ্ধার বাড়ি। ওই প্রকল্পের আওতায় বগুড়ায় ৪৫০টি বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হবে। আগামী ফেব্রুয়ারিতে ফরম ছাড়া হবে। তবে অস্বচ্ছল নয় এমন মুক্তিযোদ্ধাদেরকে বাড়ি নির্মাণের জন্য ১৫ লাখ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে। 
মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অন্যান্যের মধ্যে বগুড়া-৭ আসনের সাংসদ রেজাউল করিম বাবলু, বগুড়া জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ডা. মকবুল হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সনাতন চক্রবর্তী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান রিপু, সহ-সভাপতি টি জামান নিকেতা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদ বগুড়া কমান্ডের সাবেক কমান্ডার রুহুল আমিন বাবলু।