ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন

ঢাকার স্বকীয়তা ফেরাবেন তাপস, স্মার্ট সিটি গড়বেন আতিক

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০১৯ ১৪:১১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৪ বার।

আসন্ন ৩০ জানুয়ারি ভোট অনুষ্ঠিত হবে ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে। এ নির্বাচনে রোববার ঢাকা উত্তরে বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম ও দক্ষিণে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসকে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। খবর যুগান্তর অনলাইন।

রোববার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেন এই দুই মেয়র প্রার্থী।

পুনরায় নির্বাচিত হলে রাজধানী ঢাকাকে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত ক্লিন, গ্রিন এবং স্মার্ট সিটি হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আতিকুল ইসলাম।

অপরদিকে একটা মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করে ঐতিহ্যবাহী ঢাকার স্বকীয়তা, বৈশিষ্ট্য আর স্বমহিমায় যে সৌন্দর্য ছিল সেটাকে আবার পুনরুদ্ধার এবং প্রস্ফূটিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস।

রোববার দুপুরে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আতিকুল ইসলাম বলেন, পুনরায় দল আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন দিয়েছেন। এ জন্য আমার ও ঢাকা উত্তর সিটির জনগণের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দিতে চাই।

তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, স্মার্ট সিটি গড়ার কাজ শুরু হয়েছে। ঢাকাকে ক্লিন, গ্রিন এবং স্মার্ট সিটি করাই আমার লক্ষ্য। মানুষ যেন ঘরে বসেই ভার্চুয়াল প্রক্রিয়ায় ট্যাক্স প্রদান করতে পারে সেদিকেও লক্ষ্য রেখে কাজ করব। আমি সাবাইকে নিয়ে সবার ঢাকা গড়ে তুলতে চাই। যা হবে আধুনিক, পরিছন্ন ও পরিকল্পিত।

নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে আতিকুল বলেন,গত নয় মাসে যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছি, আপনার সবাই সেটা জানেন। যে দিন থেকে দায়িত্ব পেয়েছি সে দিন থেকে একটি দিনও সময় নষ্ট করিনি। আমি উত্তর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে সব জনগণের সহযোগিতা চাই। সবাই মিলে, সবার ঢাকা গড়তে চাই। আমরা জানি আমাদের কি চ্যালেঞ্জ রয়েছে। সবার সহযোগিতায় এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে।

ঢাকা সিটি নির্বাচনে ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপসকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া প্রসঙ্গে উত্তরের প্রার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, আমি অত্যন্ত খুশি হয়েছি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে শেখ তাপস নৌকার প্রতীক পেয়েছেন। আমি মনে করি- আমরা একসঙ্গে কাজ করব। উত্তর-দক্ষিণ সিটি মিলে আমরা একটি সুন্দর ঢাকা শহর উপহার দিতে পারব।

এ দিকে রোববার দুপুরে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পরে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমণ্ডির কার্যালয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আসার আগ্রহ ও নির্বাচিত হলে কি করবেন- সে বিষয়ে নিজের মহাপরিকল্পনার কথা জানান শেখ ফজলে নূর তাপস।

তিনি বলেন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় আমি আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করছি। এবং কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি। আরও ধন্যবাদ জানাই আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার নির্বাচন মনোনয়ন বোর্ড সভার সদস্যদের যারা আমাকে দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়ের পদে মনোনীত করেছেন। ধন্যবাদ জানাতে চাই ঢাকা-১০ আসনের জনগণের প্রতি। তারা আমার ওপরে আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন।

সংসদ সদস্য থেকে হঠাৎ মেয়র হওয়ার জন্য আগ্রহ কেন জাগল- এমন প্রশ্নের জবাবে তাপস বলেন, ঢাকা-১০ আসনের জনগণের জন্য কাজ করতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি যে, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে উন্নত বাংলাদেশের জন্য নিরলস কাজ করে চলছেন; আমাদের রূপকল্প দিয়েছেন ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত বাংলাদেশ নির্মাণের। উন্নত বাংলাদেশের জন্য উন্নত রাজধানী প্রয়োজন। সেই উন্নত রাজধানী গড়ার লক্ষ্যে আমি মনে করেছি যে, এই সুযোগটা গ্রহণ করব। জনগণের কাছে যাব। জনগণ যদি আমাকে নির্বাচিত করে তাহলে বৃহত্তর পরিসরে ঐতিহ্যবাহী পুরান ঢাকার ঐতিহ্য সংরক্ষণ করে তাকে নিজ স্বকীয়তায়, স্বীয় মহিমায় প্রস্ফূটিত করব। পুরান ঢাকার বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত। সেই অবহেলা মোচন করে তাদের একটি উন্নত রাজধানী সব নাগরিক সুযোগ-সুবিধা দেয়ার জন্য আমি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি।

তিনি বলেন, আমার এলাকার জনগণ যেভাবে ভালোবেসে আস্থা রেখেছেন, দক্ষিণ সিটির সব জনগণ সেভাবে আস্থা রাখবে বলে আমি মনে করি। তারা আমাকে কাজের সুযোগ দেবেন। আমার ইচ্ছা রয়েছে ৩০ বছরমেয়াদি দীর্ঘ পরিকল্পনা গ্রহণ করার। ২০৪১ সালে সামনে রেখে উন্নত রাজধানী উপহার দেয়ার।

এক প্রতিক্রিয়ায় ফজলে নূর তাপস বলেন, এখন চিন্তা করলে মনে হবে এটা খুব কঠিন কাজ, অবশ্যই এটা কঠিন কাজ। তবে এই নজির আমাদের ঢাকা উত্তরের প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক সাহেব দেখিয়েছেন, যে অল্প সময়ের মধ্যে চাইলে পরিবর্তন আনা যায়। আমি মনে করি, সবার সমর্থন পেলে আমিও সেটা করতে সক্ষম হব। আমি বিশ্বাস করি যে, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে কাজ করলে সবই সম্ভব।