যুক্তরাষ্ট্রে 'ঈগল' মারা গেলে কী হয়?

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ৩০ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৫:৩৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১৩৪ বার।

ঈগল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পাখি। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রে এই পাখি মারা গেলে কী হয়?যুক্তরাষ্ট্রে গোল্ডেন ঈগল আর বল্ড ঈগল রাখা, তাদের উপর নির্যাতন করা এবং মারা যাওয়ার পর তা সংগ্রহ করা নিষিদ্ধ। যদি না কোনও বিশেষ ছাড় থাকে। 'বল্ড অ্যান্ড গোল্ডেন ঈগল প্রটেকশন অ্যাক্ট, ১৯৪০' অনুযায়ী ঈগলের পড়ে যাওয়া পালক সংগ্রহে রাখাও বৈধ নয়। 

কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র আর আলাস্কার অনেক অধিবাসীর মতে ঈগল পবিত্র। তাই নানা অনুষ্ঠানে এই পাখির বিভিন্ন অংশ রাখার চল রয়েছে। আর এখান থেকেই কাজ শুরু হয় 'ন্যাশনাল রিপোজিটরি ইন কলোরাডো'র। প্রতিদিন প্রায় ৩০-৪০টি ঈগলের মৃতদেহ সেন্টারে আসে। পরের যাত্রাপথ কী হবে তা ঠিক করে এই সেন্টার। যা যুক্তরাষ্ট্রের ‘ফিশ অ্যান্ড ওয়াইল্ডলাইফ সার্ভিস’ দ্বারা পরিচালিত। চারজনের একটি দল হাওয়াই ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের অন্যান্য জায়গাগুলো থেকে পাখি সংগ্রহ করে তা দেশটির বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে বন্টন করে দেয়।

লিজা রোমান এই রিপোজিটরিতে ৬ বছর কাজ করেছেন। তার দায়িত্ব ছিল আবেদন দেখে এই পদ্ধতি যাতে ঠিকমতো চলে সে দিকে নজর রাখা। তিনি জানান, ‘আমরা মাসে ৫০০ অর্ডার নেই। প্রথমে আবেদনকারীকে উপযুক্ত পরিচয়পত্র দেখাতে হবে। এবং তাদের বয়স হতে হবে ১৮ বছরের উপরে। 

 

তিনি আরও বলেন, 'ন্যাশনাল ঈগল প্রোগ্রাম' বিভিন্ন জনজাতির ধর্মীয় এবং উৎসব উদযাপনের জন্যেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তারা পুরো পাখি বা পাখির একটি পালক সংগ্রহ করতে পারেন। পাখির বয়স এবং কোন ধরনের ঈগল চান তাও জানিয়ে দিতে পারেন। চাহিদা অনুযায়ী জিনিস দেওয়াই আমাদের রিপোজিটরির কাজ। এখন সব থেকে চাহিদা ছোট গোল্ডেন ঈগলের। যার জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রায় সাড়ে সাত বছর। যত তাড়াতাড়ি আবেদন জমা পড়বে, যত তাড়াতাড়ি ঈগল পাওয়া যাবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ‘ইন্ডিয়ান ট্রাইব ইন কলোরাডো’ সাংস্কৃতিক সমিতির সদস্য হ্যানলি ফ্রস্টের বক্তব্য, আমাদের কাছে ঈগল আধ্যাত্মিকতার প্রতীক। আমরা মনে করি ঈগল আমাদের প্রার্থনা ঈশ্বরের কাছে পৌঁছে দেয়। কারণ একমাত্র এই পাখিই অত উঁচুতে উড়তে পারে। অনেক দূর দেখতে পারে ঈগল।

রেপোজিটরির সদস্যরা জানাচ্ছেন, তারা মৃত ঈগল সংরক্ষণের কাজটি পছন্দ করেন দু'টো কারণে। এক- ঈগল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পাখি। আর দুই- মানুষ যেহেতু এই পাখি পছন্দ করে, তাই গোটা বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে বন্টন করায় তারা তৃপ্তি পান।

পরিসংখ্যান বলছে, গত পঞ্চাশ বছরে কোনও-কোনও প্রজাতির ঈগলের সংখ্যা কমেছে। গোল্ডেন ঈগল সাধরণত উঁচু পাহাড়ে থাকে। আইন করে সংরক্ষেণের আওতায় আনা হয়েছে। রিপোজিটরি স্থাপিত হয় ১৯৭০ সালে। সংরক্ষণের নানা বিষয়েও তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে থাকেন।