তেলআবিবসহ ৩৫ মার্কিন লক্ষ্যবস্তু আমাদের আওতায়: ইরানি জেনারেল

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৪ জানুয়ারী ২০২০ ১৫:০১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৯৬ বার।

বিপ্লবী গার্ডস কমান্ডার জেনারেল গুলামআলী আবু হামজাহ বলেছেন, ইসরাইলের তেলআবিবসহ ৩৫টি লক্ষ্যবস্তু আমাদের আওতায়। কাজেই কাসেম সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ নিতে যেখানে আমেরিকানরা আমাদের আওতায় থাকবে, সেখানেই তাদের শাস্তি দেয়া হবে।

ইরানি বার্তা সংস্থা তাসনিমের বরাতে রয়টার্স এমন খবর দিয়েছে।

পারস্য উপসাগরের জাহাজগুলো সম্ভাব্য হামলার লক্ষ্যবস্তু হতে পারে বলে আশঙ্কা জাগিয়েছেন সোলাইমানির নিজ শহর কেরমানের বিপ্লবী গার্ডসের এই কমান্ডার।

শক্রবার তিনি বলেন, সোলাইমানির হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে।

তিনি বলেন, পশ্চিমাদের জন্য হরমুজ প্রণালী খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জলপথ। এখান দিয়ে মার্কিন ডেস্ট্রয়ার ও যুদ্ধজাহাজের বড় একটা সংখ্যক চলাচল করে। বহু আগেই এ অঞ্চলে মার্কিন লক্ষ্যবস্তুগুলো শনাক্ত করে রেখেছে ইরান।

এদিকে শনিবার লেবাননের এক হিজবুল্লাহ কর্মকর্তা বলেন, সোলাইমানি হত্যার ঘটনায় ইরান সমর্থিত জোট প্রতিরোধের অক্ষের জবাব হবে চূড়ান্ত।

শুক্রবার ভোরে বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে বের হওয়ার সময় ড্রোন হামলা চালিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বাহিনী।

এতে ইরাকসহ এ অঞ্চলে দুই শক্তির মধ্য ছায়াযুদ্ধের আশঙ্কা বাড়ছে। ইরানও ইতিমধ্যে কঠিন প্রতিশোধের হুমকি দিয়েছে।

এদিকে সোলাইমানিকে হত্যার জবাব সামরিক হামলায় দেয়া হবে বলে হুশিয়ারি করেছেন জাতিসংঘে ইরানি রাষ্ট্রদূত মাজিদ তাখত রাভানচি। বলেছেন, আল-কুদস ফোর্সের প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা যুদ্ধের শামিল। সামরিক হামলার জবাব সামরিক হামলায় দেয়া হবে।

বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় ড্রোন হামলা চালিয়ে কাসেম সোলাইমানিকে হত্যা করে মার্কিন বিমান বাহিনী। এতে মধ্যপ্রাচ্যে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে ছায়াযুদ্ধের শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি কোনো যুদ্ধ চাচ্ছেন না।

তবে মার্কিন হামলায় শীর্ষ জেনারেল নিহত হওয়ার ঘটনা চরম ক্ষুব্ধ করেছে ইরানিদের। শুক্রবার রাতে সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে ইরানের দূত মজিদ তাখত বলেন, ইরানের জনগণের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে এটা একটা যুদ্ধের শামিল।

‘আমাদের এক শীর্ষ জেনারেলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে তাকে গুপ্তহত্যার মাধ্যমে গত রাতে তারা (যুক্তরাষ্ট্র) সামরিক যুদ্ধ শুরু করেছে। এর জবাবে ইরান কী করবে বলে আশা করা যায়? আমরা নীরব থাকতে পারি না। আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে, আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। ’

ইরানি এই কূটনীতিক আরও বলেন, গত রাতে যা ঘটেছে, তাতে আমরা চোখ বন্ধ রাখতে পারি না। নিশ্চিতভাবেই এর প্রতিশোধ নেয়া হবে, কঠিন প্রতিশোধ।

সাক্ষাতকারে শেষে তিনি বলেন, সামরিক হামলার জবাব সামরিক হামলা। কে, কখন, কোথায়? (হামলার শিকার হবে) সেটা ভবিষ্যতে দেখা যাবে।

এর আগে মিয়ামিতে ইভ্যানজিলিক্যাল সমর্থকদের উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, সোলাইমানি একটি বড় হামলার পরিকল্পনা করেছিলেন। এছাড়া আমেরিকানদের বিরুদ্ধে আরও বহু হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সবচেয়ে বড় শত্রু সোলাইমানি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারের মূলভূমিকা রেখেছিলেন। এছাড়া সিরিয়া, ইরাক ও ইয়েমেনে সামরিক ও রাজনৈতিক এজেন্ডা নির্ধারণ করে দিতেন এই জেনারেল।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই অবৈধ আগ্রাসনের পাল্টা প্রতিশোধ নেবে ইরান। আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন করে এই অবৈধ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে এই ইরানি কূটনীতিক দাবি করেন।

গত মাসের শেষ দিকে বাগদাদে মার্কিন দূতাবাসে হামলার ঘটনায় ইরানের দিকে আঙুল তুলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

মার-আ-লাগো রিসোর্টে শুক্রবার ট্রাম্প বলেন, কয়েক বছর ধরে কয়েকশ মার্কিন বেসামরিক লোক ও সেনা সদস্যকে হত্যা, হামলার লক্ষ্যবস্তু ও আহত করেছে সোলাইমানির অধীন বিপ্লবী গার্ড বাহিনী ও তাদের নিষ্ঠুর কুদস ফোর্স। মধ্যপ্রাচ্যে সাম্প্রতিক মার্কিন স্বার্থে হামলা সোলাইমানির নির্দেশনায়ই হয়েছে।

তার এই দাবি অস্বীকার করে রাভানচি বলেন, তাদের যুক্তির সমর্থনে কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারবেন না। যদি তাদের হাতে কোনো প্রমাণ থাকে, তবে তারা দেখাক।