মার্কিন সেনাদের কফিনে শুয়ে বাড়ি ফিরতে হবে: হিজবুল্লাহ

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারী ২০২০ ১০:৫৩ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬২ বার।

ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলেমানিকে হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার দীপ্ত শপথ নিয়েছে লেবাননের হিজবুল্লাহ। মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থান করা মার্কিন সেনা সদস্যদের কফিনে ভরে যুক্তরাষ্ট্রে নিতে হবে বলে হুমকি দিয়েছেন সংগঠনটির প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরুল্লাহ। রোববার লেবাননে স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ হুঙ্কার দেন।

নাসরুল্লাহ বলেন, জেনারেল কাসেম সোলাইমানির হত্যার বদলা নেয়ার দায় কেবল ইরানের নয়, তাদের মিত্রদের ওপরেও বর্তায়। আমাদের দেশগুলোতে মোতায়েন মার্কিন সামরিক ঘাঁটি, নৌ-জাহাজ এবং প্রত্যেক মার্কিন কর্মকর্তা ও সেনার কাছ থেকে সোলাইমানি হত্যার হিসাব পাই পাই করে বুঝে নেয়া হবে। এ হত্যার ন্যায্য বদলা নেয়া হবে।

‘যখন কফিনে করে মার্কিন সেনা ও কর্মকর্তাদের লাশ আমেরিকায় পৌঁছাবে, তখন ট্রাম্প ও তার প্রশাসন অনুধাবন করতে পারবে যে, সত্যিই মধ্যপ্রাচ্য বেহাত হয়ে গেছে, আর (২০২০ সালের) নির্বাচনেও তাদের ভরাডুবি হবে’-যোগ করেন নাসরুল্লাহ।

১৯৮২ সালে ইরানের বিপ্লবী গার্ড লেবাননে শিয়াপন্থী হিজবুল্লাহকে সংগঠিত করে। তারপর থেকেই এ গোষ্ঠী আমেরিকা ও ইসরাইলের বিরুদ্ধে ইরানের সঙ্গে কাধে কাধ মিলিয়ে লড়াই চালিয়ে আসছে।

১৯৮৩ সালে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে লেবাননের বৈরুতে মার্কিন সামুদ্রিক সদর দফতর ধ্বংস করে হিজবুল্লাহ। ওই হামলায় ২৪১ কর্মকর্তা নিহত হন। একই বছর মার্কিন দূতাবাসেও আত্মঘাতী হামলা চালায় তারা। পরে ওই বছরই লেবানন থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেয়া হয়।

সেই ইতিহাস সামনে এনে নাসরুল্লাহ বলেন, পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সম্ভাব্য আত্মঘাতী বোমা হামলাকারীর সংখ্যা এখন বেশি। সোলাইমানি ও অন্যদের হত্যার মধ্য দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। এ অঞ্চলে মোতায়েন মার্কিন সেনাদের ওপর আমাদের হামলা তাদের পূর্বের মতই বিভীষিকা পৌঁছে দেবে। অপদস্থ আর পরাজিত হয়ে সরে যেতে বাধ্য হবে তারা। আমাদেরকে অবশ্যই কাসেমি হত্যার বদলা নিতে হবে।

তবে মার্কিন সেনাদের ওপর বদলা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিলেও সাধারণ মার্কিনিদের ওপর কোনোভাবেই হামলা চালানো যাবে না বলে সতর্ক করেন নাসরুল্লাহ। তিনি বলেন, মার্কিন সেনারাই সোলাইমানি ও অন্যদের হত্যা করেছে। ফলে এর দাম শোধ করবে কেবল তারাই। মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে কোনো সাধারণ মার্কিন নাগরিককে স্পর্শও করা যাবে না। তাহলে তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পেরই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করা হবে।

ইরান সমর্থিত আঞ্চলিক সামরিক জোটের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ লেবাননের হিজবুল্লাহ বাহিনী। আর আগে থেকেই হিজবুল্লাহকে জঙ্গি সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, শুক্রবার ভোরে ইরানের শীর্ষ জেনারেল কাসেম সোলাইমানি বাগদাদে মার্কিন বাহিনীর গুপ্তহত্যার শিকার হন। আজ তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। ইরানে জানাজা নামাজে ইমামতি করেন ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি।