নির্বাচনে এমপিদের প্রচারণার সুযোগ দিতে হবে: নাসিম

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারী ২০২০ ১২:২৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৫ বার।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সংসদ সদস্যদের প্রচারণা চালানোর সুযোগ রাখতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এমপি। তিনি বলেছেন, দলের নেতা অথচ সংসদ সদস্য হওয়ার কারণে কেউ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণায় নামতে পারবেন না- এটা সমতা হলো না। এটা লজ্জাজনক। এই আইন অবশ্যই সংশোধন করতে হবে। খবর সমকাল অনলাইন 

সোমবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরের নব-নির্বাচিত কমিটির সঙ্গে ১৪ দলের শুভেচ্ছা বিনিময় সভায় মোহাম্মদ নাসিম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, 'আমি একটি দলের নেতা, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য হয়েও নির্বাচনের প্রচারণা চালাতে পারবো না। আমু ভাই, তোফায়েল ভাই- আমরা কেউই প্রচার করতে পারবো না। অথচ বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, মওদুদ আহমদ, ড. খোন্দকার মোশাররফ হোসেন- তারা প্রচারণা চালাতে পারবেন। তাহলে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড হলো কীভাবে? সমতা আনার জন্য নির্বাচনী আইনের অবশ্যই সংশোধন আনতে হবে।'

নাসিম বলেন, 'দুনিয়ার কোন জায়গায় আছে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের প্রচারে থাকতে পারবেন না। ভারতের নির্বাচনে মন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত নির্বাচনের প্রচার করেছেন প্রার্থীর পক্ষে। আর আমি, মেনন সাহেব (রাশেদ খান মেনন), এখন ঘরের মধ্যে বলে যাচ্ছি। বাইরে গিয়ে বলতে পারবো না, নৌকার পক্ষে কথা বলতে পারবো না। বাইরে গিয়ে কথা বলতে গেলে আইন লঙ্ঘন হবে। আইন করে দেওয়া হয়েছে জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচনের প্রচার করতে পারবেন না। কোন আইনে আছে বলুন তো?'

তিনি বলেন, মন্ত্রীরা প্রচারের বাইরে থাকবেন, সেটা থাক। কিন্তু যিনি এমপি, তিনি যেন প্রচারে নামতে পারেন। ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে আমরা যাতে প্রচার চালাতে পারি, সে ব্যবস্থা করার জন্য নির্বাচন কমিশনের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি।

১৪ দলের মুখপাত্র বলেন, নির্বাচন শুরুই হয়নি। অথচ আগেই বিএনপি বলছে 'কারচুপি, কারচুপি'। এটা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। বিএনপির দু'জন মেয়র প্রার্থীর প্রশংসা করবো। তারা বলেছেন, নির্বাচনের মাঠ ছেড়ে যাবেন না তারা। মাঠ ছেড়ে তারা যাবেন না ভালো কথা। তারা নিজেরা নির্বাচন করুন আর জনগণের কাছে গিয়ে বলেন, যে রায় দেবে তারা মেনে নেবেন। কিন্তু তারা যেন তাদের বড় বড় নেতাদের কথা না শোনেন। কেননা বড় বড় নেতারা হচ্ছেন পালানোর ওস্তাদ। জাতীয় নির্বাচন তো দেখেছি।

তিনি বলেন, এই নির্বাচনে জনগণ যে রায় দেবে, আমরা সেটা মাথা পেতে নেবো। আমরা ১৪ দল চাই সুষ্ঠভাবে যাতে নির্বাচন হয়। এর জন্য নির্বাচন কমিশন কঠোরভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবে। আমরা ১৪ দল সব ধরনের সহযোগিতা করবো। আসন্ন ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রার্থীর জন্য ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।

সভায় ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এমপি বলেন, ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য হয়ে গেছে। আছে বায়ু দূষণ, রাস্তাঘাট দিয়ে চলা যায় না। আমরা মানুষের কাছে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম তা পূররণ করতে পারিনি। সবচেয়ে বড় কথা এই শহরে ডেঙ্গু আতঙ্ক রয়েছে। আগামীতে ডেঙ্গু আরও বড় আকারে আসবে। আমরা এর সমাধান করতে পারিনি। এই ঢাকা মহানগরকে পরিবেশবান্ধব করে গড়তে হবে। ঢাকা উত্তর সিটি করেপারেশনের সঙ্গে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈষম্য আছে। এগুলো দূর হওয়া দরকার।

তিনি বলেন, এবারের ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেধার লড়াই হবে। অন্য কোনো বিষয় এখানে কাজে আসবে না। সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামতে হবে। মনে রাখতে হবে ষড়যন্ত্র এখনও শেষ হয়নি। জামায়াতে ইসলাম ভেতরে ভেতরে সংগঠিত হচ্ছে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।

ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগর সভাপতি আবুল হোসাইনের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়া, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবীর, নগর ওয়ার্কাার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক কিশোর রায় প্রমুখ।