ঢাবির ছাত্রী ধর্ষণের ঘটনায় ফেসবুকে প্রতিবাদ

'এই শহরে আমার কন্যার নিরাপত্তা দেবে কে?'

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ জানুয়ারী ২০২০ ১৪:৪৮ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৬৪ বার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে রাজধানীর কুর্মিটোলা এলাকায় রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।

ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে সোমবার সকাল থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে মিছিল-সমাবেশ, শাহবাগ ও কুর্মিটোলায় অবরোধসহ দেশের বিভিন্নস্থানে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় সোশ্যাল মিডিয়াও এখন প্রতিবাদ চলছে। খবর সমকাল অনলাইন

আরিফুজ্জান তুহিন ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের প্রতিবাদ জানিয়ে লিখেছেন, 'চারপাশে যেভাবে তৎপরতা দেখছি তাতে দ্রুত ধর্ষক বা ধর্ষকদল ধরা পড়বে। এমন কি ক্রসফায়ারে ধর্ষক নিহত হলেও আশ্চর্য্য হব না। কিন্তু প্রতিদিন যেসব নারী ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন, যারা ঢাকা বিশ্বিবদ্যালয়ে পড়েন না তাদের বেলায় যদি এমন তৎপরতা দেখাত রাষ্ট্র। এটলিস্ট তনুর ব্যাপারে রাষ্ট্র একটা স্টেপ নিত। নাকি তনু ধর্ষণের শিকার হয়নি অথবা তনু নামে কেউ ছিল না। রাষ্ট্র শ্রেণি চেনে। কিন্তু জনগণ রাষ্ট্র চিনে না।'

নূর জামান মধু ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষুব্ধ এবং হতাশ। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, 'আমরা প্রায়ই মানুষের কুৎসিত আচরণ দেখে বলে থাকি- মানুষ নামের পশু একটা! মানব চরিত্রের কদাকার রূপটিকে বোঝানোর জন্যে আমরা প্রায়ই পশুত্ব শব্দটি ব্যবহার করি। কিন্তু আসলে কি তাই? মানুষ যতটা হিংস্র আর চরিত্রহীন হতে পারে, কোনো পশুও কি তা পারে? তবু কেন বলি মানুষ সেরা জীব? বিচারহীনতার সমাজে বেড়ে উঠা ভয়ংকর মানুষগুলোকে পশুর সাথে তুলনা করা নিষ্পাপ পশুর প্রতি অবিচার নয়? ধর্ষণ রোধে আমাদের অপর্যাপ্ত আইন দেখে আমার আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে করছে৷ কোথায় আমাদের আইন প্রণেতারা? এখন কী করছেন তাঁরা? টেলিভিশনে গেলেই তাঁরা বাচাল হয়ে পড়েন৷ ধর্ষকদের ফাঁসিই হওয়া উচিত৷'

ধর্ষণের খবর এলেই শুরু হয় সাময়িক তোলপাড়। তারপর ধীরে ধীরে সবাই তা ভুলে যান। এই বিষয়টি লক্ষ্য করে তীব্র হতাশা নিয়ে ফেসবুকে সারা দিনা লিখেছেন, 'কাল বেশ রাতে খবরে আসে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ধর্ষিত! তখন অনেকেই ঘুমাচ্ছিল! হিসাব ছিল না! সকাল হয়েছে বলে ভুলেও ভাবার দরকার নাই যে তাদের ঘুম ভেঙ্গেছে! ভাঙ্গে নাই!! অনেক আগে থেকেই এই দেশের মানুষের ঘুম ভাঙ্গে না! ইউনিভার্সিটির জাগ্রত বিবেকদের কর্মসূচি খবরে দেখলাম!! বাহ! মানববন্ধন আর বিক্ষোভেই দায় শেষ? কিভাবে আজকেও বাকি সব স্বাভাবিক সেখানে?'

অনেকের মতো মাহফুজুল ইসলামও এ অবস্থার অবসান চান৷ চান ধর্ষকদের কঠোর সাজা। দেশে আর কেউ ধর্ষণের শিকার না হোক – এ-ও চান তিনি। কিন্তু কবে আসবে সেদিন? ফেসবুকে সেই প্রশ্নটা রেখেছেন তিনি এভাবে, 'আচ্ছা, এই শহরে আমার কন্যার নিরাপত্তা দেবে কে? খুব প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করে, কিন্তু কাকে করবো? পুলিশ, আমজনতা, নগরপিতা, কার কাছে?'

মির্জা তারিকুল কাদের লিখেছেন, 'বন্ধ হোক ধর্ষণ। এই শহর কি ধর্ষকদের? এক্ষুনি গ্রেপ্তার করা হোক ওদেরকে। বিচার হোক অতি দ্রুত।'

পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বায়েজিদ আহমেদ লিখেছেন, 'দেশপ্রেমিক পুলিশ ভাইয়েরা, কুর্মিটোলার ধর্ষকদের খুঁজে বের করে পুলিশ সপ্তাহের কার্যকারিতা প্রমাণ করুণ!'

একই আহ্বান জানিয়ে এসএম ফয়েজ লিখেছেন, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর ধর্ষকদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়ার জোর দাবি জানাচ্ছি। পুলিশ সপ্তাহ চলার মধ্যেই অনিরাপদ শহর রাজধানী। আমাদের বোন, কন্যাদের জন্য বেশি কিছু চাই না, চাই একটা নিরাপদ শহর।'