ভাষা সংগ্রামী প্রফেসর ড. ওয়াজেদ আলী আর নেই

নওগাঁ (বগুড়া) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারী ২০২০ ১২:৪০ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২১১ বার।

নওগাঁ সদর উপজেলার হাপানিয়া ইউনিয়নের লক্ষ্মনপুর গ্রামের বাসিন্দা ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ভাষা সংগ্রামী প্রফেসর ড. এম.ওয়াজেদ আলী আর নেই।

সোমবার  সকাল ৭টায় রাজশাহীর নিজ বাসায় তিনি ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। তিনি রাবির ইতিহাস বিভাগের সভাপতি, শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি, কলা অনুষদের ডীন সিনেট ও সিন্ডিকেট সদস্যসহ জাতীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ  পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন।

১৯৫৪ সালে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় দ্বিতীয় বিভাগে, ১৯৫৬ সালে আই.এ .পরীক্ষায় ্প্রথম বিভাগে, ১৯৫৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হতে ইতিহাসে অনার্সসহ বি.এ. পরীক্ষায় প্রথম স্থান, ১৯৬০ সালে এম. এ. তে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম স্থান  অধিকার করেন। ১৯৭৬ সালে গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় হতে অর্থনৈতিক ইতিহাস বিষয়ে এম. লিট. এবং ১৯৮৭ সালে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয় হতে পিএইচ. ডি. ডিগ্রি লাভ করেন। ড. এম. ওয়াজেদ আলী ১৯৬১ সালের ১ লা জুলাইয়ে ফজলুল হক কলেজে ইতিহাসের প্রভাষক হিসাবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৮ ই জানুয়ারী ১৯৬৩ তে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং ১২ই  নভেম্বর ১৯৯৯ পর্যন্ত অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।

তিনি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে প্রত্যক্ষ সমর্থন দানসহ সকল প্রকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত ছিলেন এবং বঙ্গবন্ধু পরিষদ, রাজশাহী জেলা শাখার সম্মানিত সদস্য ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে তিনি জীবনের প্রতিটি কর্মধারায় তার ছাপ রেখেছেন, আমৃত্যু তিনি লালন করেছেন সেই চেতনা। ড. এম. ওয়াজেদ আলী ১৯৫২-র রাষ্টভাষা আন্দোলনে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ভাষা আন্দোলনের জন্য কাজ করেছেন এবং দেশের শিক্ষা বিস্তারের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। তিনি ২০০৯ সালে ভাষা সংগ্রামের আবদানের জন্য স্থানীয় সামাজিক সংগঠন একুশে পরিষদ নওগাঁ’ তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করেন।

সোমবার বিকেলে নওগাঁর সদর উপজেলার হাপানিয়া স্কুল মাঠে একুশে পরিষদ নওগাঁসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে।

ওইদিন বাদ মাগরিব হাপানিয়া স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে নামাজে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। তাঁর নামাজে জানাজায় নওগাঁ’র বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক,সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশগ্রহন করেন। তিনি মৃত্যুকালে স্ত্রী ও এক ছেলে এবং এক মেয়ে রেখে গেছেন।