ভারতে এবার মুসলিম জনসংখ্যা কমানোর চাপ!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ জানুয়ারী ২০২০ ০৬:৩৬ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৫২ বার।

ভারতে বিতর্কিত ও ধর্মীয় বৈষম্যমূলক নাগরিকত্ব আইনের পর এবার মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের ফন্দিফিকির করছে মোদি সরকার।

ক্ষমতাসীন জোটের শরিক দল আরএসএসপ্রধান মোহন ভাগবত চাচ্ছেন, যেকোন মূল্যে ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে। খবর এনডিটিভির।

রাষ্ট্রীয় সেবকসংঘ কোনো রাখঢাক না রেখেই ভারতে জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য মুসলিমদের দায়ী করে সরকারকে তা নিয়ন্ত্রণের কথা বলছে।

আরএসএসের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ১৯৫১ থেকে ২০১১ সালে ভারতে মোট জনসংখ্যার ৯.৮ থেকে ১৮.২৩ শতাংশ ছিল মুসলিম।

কিন্তু জনগণনার হিসাব বলছে, ২০০১ সালের তুলনায় ২০১১ সালে মুসলিমদের সংখ্যা ২৪.৬ শতাংশ বেড়েছে। যেখানে তার আগের দশকে, অর্থাৎ ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০০১-তে মুসলিম জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার ছিল ২৯.৫ শতাংশ। আগের দশকগুলোতে এই হার ৩০ শতাংশের বেশি।

কিন্তু ভারতে ১০ বছর অন্তর অন্তর যে জনগণনা হয়, তার পরিসংখ্যান বলছে– প্রতি ১০ বছরে মুসলিমদের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ধাপে ধাপে কমে আসছে।

গত বছরের ১৫ আগস্ট লালকেল্লায় জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছিলেন– প্রত্যেকের উচিত পরিবারকে ছোট রাখা।

সবার জন্য শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা না গেলে দেশ সমৃদ্ধ হতে পারবে না। মোদি তার বক্তৃতায় বিশেষ কোনো সম্প্রদায়ের দিকে আঙুল তোলেননি।

কিন্তু এবার রাষ্ট্রীয় সেবকসংঘ বা আরএসএস দেশে জনসংখ্যা বেড়ে যাওয়ার জন্য সরাসরি মুসলিমদের দায়ী করছে।

ভারতের ২০১১ সালের রাষ্ট্রীয় জনগণনায় ১২১.০৯ কোটি মানুষের মধ্যে হিন্দু ছিল ৯৬.৬৩ কোটি (৭৯.৮ শতাংশ) এবং মুসলিম ছিল ১৭.২২ কোটি (১৪.২ শতাংশ)।

১৯৫১-৬১ সালে মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল ৩২.৪ শতাংশ, ১৯৬১-৭১ সালে ৩০.৯ শতাংশ, ১৯৭১-৮১ সালে ৩০.৭ শতাংশ, ১৯৮১-৯১ সালে ৩২.৮ শতাংশ, ১৯৯১-২০০১ সালে ছিল ২৯.৫ শতাংশ, ২০০১-২০১১ সালে ছিল ২৪.৬ শতাংশ।

জনসংখ্যা বৃদ্ধি কি আদৌ ভারতের চিন্তার কারণ? দ্বিতীয়বার মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর গত বছরের জুলাইয়ে কেন্দ্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সমীক্ষা কিন্তু উল্টো কথাই বলেছিল।

আর্থিক সমীক্ষা বলেছিল– গোটা দেশে জন্মের হার কমছে। তার ফলে দেশের জনসংখ্যায় বয়স্কদের হার বেড়ে যাচ্ছে।

আরএসএসের আশঙ্কা, ভারতে হিন্দুরা একসময় সংখ্যালঘু হয়ে পড়বে। তাই দুটির বেশি যাতে সন্তান নিতে না পারে, এ জন্য নীতিমালা প্রণয়নের জন্য সরকারকে চাপ দিচ্ছে আরএসএস।

কিন্তু আরএসএসের প্রস্তাব নিয়ে এবার তীব্র আক্রমণ শানালেন এআইএমআইএমপ্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসি।

ভারতে দুই সন্তানের নীতি বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে এআইএমআইএমপ্রধান আসাউদ্দিন ওয়াইসি বলেন, এনডিএ সরকার গত পাঁচ বছরে দেশের বেকার সমস্যা মোকাবেলায় ব্যর্থ হয়েছে।

বর্তমানে দেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশই ৪০ বছরের কম বয়সী বলে উল্লেখ করে ওয়াইসি অভিযোগ করেন, সরকার তরুণদের চাকরি দিতে ব্যর্থ হয়েছে।

২০১৮ সালে ৩৬ জন বেকার যুবক আত্মহত্যা করেছে। আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিত। আমার নিজেরই তো দুটির বেশি সন্তান রয়েছে, বলেন এআইএমআইএমপ্রধান।