নওগাঁর রানীনগর সনাতন ধর্মাম্বল্বীদের প্রাচীন যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্বশ্মান ঘাট নানা সমস্যায় জর্জরিত

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী ২০২০ ১০:৪১ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১০৪ বার।

নওগাঁর রাণীনগরের একডালা ইউনিয়নের সনাতন ধর্মের লোকজনের সবচেয়ে প্রাচীনতম ঘাটাগন যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্বশ্মান ঘাট নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ঐতিহ্য হারাচ্ছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার নাজুক পরিস্থিতি, চুল্লি ও পানি সংকট থাকায় ধর্মীয় কর্মকান্ডসহ মৃত দেহ দাহ করতে গিয়ে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হচ্ছে তাদের। এছাড়াও কোন রকম আলোর ব্যবস্থা না থাকায় রাত নামলেই কুটকুটে অন্ধকার অবস্থায় থাকে যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্বশ্মান ঘাট।
জানা গেছে, উপজেলা সদর হতে প্রায় ২৩কিলোমিটার দূরে রাণীনগর উপজেলা ও পার্শ্ববর্তি বগুড়ার আদমদিঘী ও নন্দীগ্রাম উপজেলার শেষ সীমান্তে নাগরনদীর পাড়ে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহি যুগ্নীতলা মন্দির ও মহাশ্বশ্মান ঘাট। উপজেলার ঘাটাগন মৌজায় কয়েক জনের দানকৃত প্রায় ১৭শতক জায়গার উপর অবস্থিত মন্দির ও মহাশ্বশান ঘাট। মন্দিরের অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারী কোন সহযোগীতা না পাওয়ায় মন্দিরটি দিনদিন তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলছে। বছরের প্রতিটি পূজা-পর্বন অনুষ্ঠানে সনাতন ধর্মের লোকজনের প্রচুর সমাগম হলেও অবকাঠামোর কোন উন্নয়ন না হওয়ায় মন্দির প্রাঙ্গনে এসে পূণার্থীদের নানা সমস্যায় ও ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বিশেষ করে মহাদেবের পূজা ও সন্ন্যাস ঠাকুরের পূজা প্রতি বছরই জাকজমক ভাবে অনুষ্ঠিত হয় এই মন্দিরে। পূজায় এলাকার নারী পুরুষের ঢল নামে। কিন্তু ঘাটাগন গ্রাম থেকে মন্দির পর্যন্ত প্রায় ২কিলোমিটার রাস্তা মেঠো পথ হওয়ায় একটু বৃষ্টি হলেই হাটু কাদায় পরিণত হয়। পায়ে হেটে যাওয়ার কোন উপায় থাকে না। রাস্তার বেহাল দশার কারণে অনেক দর্শনার্থীরা মন্দির ও মহাশ্বশানে আসতে পারেন না। এছাড়াও মন্দিরে আসা লোকজনের স্যানিটেশন ব্যবস্থা, বসার জায়গাসহ সন্ধ্যার পরে কোন আলোর ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিনিয়তই চরম দুর্ভোগে পড়তে হয় তাদের। অবহেলা আর অযত্নে ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য্য হারিয়ে ফেলছে মন্দির ও শ্বশ্মানঘাট। এলাকাবাসীর সার্বিক ব্যবস্থাপনায় মন্দিরের সকল উৎসব পরিচালিত হলেও আর্থিক সংকটের কারণে তা থমকে যেতে বসেছে।
মন্দির ও শ্বশ্মানঘাট পরিচালনা কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রবিন্দ্রনাথ রায় জানান, ঐতিহ্যবাহি প্রাচীনতম এই মন্দির ও মহাশ্বশান ঘাট দীর্ঘদিন যাবত অবহেলিত। প্রতিনিয়ত ধর্মীয় কর্মকান্ড পরিচালনা করতে নানা সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। দীর্ঘদিন যাবত মন্দির ও শ্বশ্মানের সংস্কার ও সংরক্ষনের কোন কাজ না করায় আজ ধ্বংস ও নষ্টের পথে ঐতিহ্য। পূণ্যার্থীদের ধর্মীয় কাজ সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে পালন করার নিমিত্তে দ্রুত মন্দির ও শ্বশ্মানের সংস্কার ও সংরক্ষন করা প্রয়োজন। 
একডালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেজাউল ইসলাম জানান, এই মন্দির ও শ্বশ্মানের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য উপজেলা প্রশাসনসহ উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ বরাবর লিখিত আবেদন দিয়েছি। নির্দেশনা ও অর্থের বরাদ্দ পেলেই পরিষদের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সংস্কার ও সংরক্ষনের কাজ শুরু করবো।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল মামুন বলেন এই বিষয়ে আমি জেনেছি। আমি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। আশা করছি বরাদ্দ এলেই দ্রুত এর সংস্কার ও আধুনিকায়নের কাজ শুরু করা হবে।