পুলিশের ভুলে জেল খাটছেন শ্রীপুরের নিরীহ চা বিক্রেতা!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২১ জানুয়ারী ২০২০ ১৩:৪৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ১১০ বার।

নামের সঙ্গে মিল থাকায় করাত কলের মালিকের পরিবর্তে এক চা বিক্রেতাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। পাঁচদিন যাবত চা বিক্রেতা ওই যুবক জেলখানায় রয়েছেন। বন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত এক আসামির নামের সঙ্গে মিল থাকায় তাকে গ্রেফতার করে। খবর যুগান্তর অনলাইন 

জেলহাজতে থাকা ওই যুবক গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার কেওয়া পশ্চিমখণ্ড দারগারচালা (মসজিদ মোড়) এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম।

শুক্রবার বিকালে শ্রীপুর থানার এএসআই কফিল উদ্দিন যুবককে তার চা স্টল থেকে গ্রেফতার করেন।

মামলার মূল আসামি জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী রফিকুল ইসলামের জন্ম তারিখ ১৯৮০ সালের ১৬ জানুয়ারি, বাবা-নুর মোহাম্মদ, মা-রহিমা খাতুন।

পুলিশের ভুলে গ্রেফতার হওয়া মো. রফিকুল ইসলামের জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৭৭ সালের ২ এপ্রিল। তার বাবার নামও নূর মোহাম্মদ, মায়ের নাম জামিনা খাতুন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামের বাবা নূর মোহাম্মদ বলেন, আমার ছেলের নামে কখনো কোনো মামলা নেই। তার চা বিক্রি দিয়েই আমাদের সংসার চলে। কথা নেই, বার্তা নেই শুক্রবার বিকালে পুলিশ এসে তার কাছে তার নাম ও বাবার নাম জানতে চায়। এটি শুনেই তার নামে ওয়ারেন্ট রয়েছে বলে তার হাতে পুলিশ হাতকড়া লাগিয়ে দেয়।

তিনি বলেন, এলাকার লোকজন বারবার বিষয়টি বলার পরও চা বিক্রেতা রফিকুলকে গ্রেফতার করে নিয়ে যায় পুলিশ। রফিকও এ সময় অনেকবার কাকুতি মিনতি ও কান্নাকাটি করে তার নামে কোনো মামলা না থাকার কথা বলছিলেন। কিন্তু পুলিশ কর্মকর্তা এএসআই কফিল কারও কথা আমলে না নিয়ে এমনকি যাচাই না করে তাকে নিয়ে যান।

শ্রীপুর বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, লাইসেন্সবিহীন করাতকলে গজারি গাছ চেরাই করার অভিযোগে ২০১৫ সালের ৮ জুলাই শ্রীপুর সদর বন বিট অফিসার সহিদুর রহমান কেওয়া পশ্চিমখণ্ডের বেগুন বাড়ি এলাকার নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলামকে আসামি করে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বন) আদালতে একটি মামলা করেন। এ মামলায় রফিকুলের বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করে শ্রীপুর থানাকে গ্রেফতারের নির্দেশ পাঠানো হয়।

এদিকে এ মামলার প্রকৃত আসামি নূর মোহাম্মদের ছেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি করাত কলের ব্যবসা করেন। মামলাটি তার বিরুদ্ধেই করা হয়েছিল। উচ্চ আদালত থেকে তিনি জামিনে রয়েছেন।

এ বিষয়ে শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আনিছুর রহমান বলেন, পুলিশের একটু ভুলের কারণে একজন সাধারণ নিরপরাধ মানুষ জেল খাটছেন। এর দায় কে নেবে?

শ্রীপুর থানার এএসআই কফিল উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, চা বিক্রেতা রফিকুল ইসলামকে গ্রেফতারের পর দীর্ঘ সময় থানায় রাখা হয়। তখন কেউ ব্যাপারটি জানাননি।

শ্রীপুর থানার ওসি লিয়াকত আলী বলেন, মামলাটি আদালতে দায়ের করা। দুই জনের নাম, বাবার নাম ও এলাকা একই। থানার মামলা হলে সে ক্ষেত্রে আমাদের কিছু করার ছিল। এখন আদালত ডিসাইড করবে সে প্রকৃত আসামি কি না।

তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃত রফিকুল চা বিক্রেতা। অপর রফিকুল করাত কলের মালিক।