গোলান মালভূমিতে ইসরায়েলি কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিশ্ব, পক্ষে শুধু যুক্তরাষ্ট্র

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০১৮ ১৫:২৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২০০ বার।

অধিকৃত গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলি কর্তৃত্বকে অবৈধ ঘোষণা করে জাতিসংঘে আনা খসড়া প্রস্তাবের বিরুদ্ধে এই প্রথমবারের মতো ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। তার সঙ্গে ছিল শুধু ইসরায়েল। বাকি দেশগুলো হয় ভোট দানে বিরত ছিল (১৪) আর না হয় প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছে (১৫১)। বিগত বছরগুলোতে ওই একই প্রস্তাবে ভোট দানে বিরত থাকত যুক্তরাষ্ট্র। বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ আখ্যায়িত করেছে ইসরায়েল। 

গোলান মালভূমি সিরিয়ার অংশ। ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে সেটি দখলে নেয় ইসরায়েল। এক হাজার ২০০ বর্গ কিলোমিটার এলাকার গোলান মালভূমি এখন কার্যত সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’ হিসেবে কাজ করে। ১৯৮১ সালে ইসরায়েল গোলান মালভূমিকে তার নিজের অংশ হিসেবে ঘোষণা দিলেও তা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত নয়।

এর আগের বছরগুলোতে যতবার ‘অধিকৃত সিরীয় গোলান’ প্রস্তাব উত্থাপিত হয়েছে জাতিসংঘে ততবারই বলা হয়েছে, জাতিসংঘের দৃষ্টিতে গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলের কর্তৃত্ব অবৈধ। কিন্তু গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ী প্রতিনিধি নিকি হ্যালি বলে দিয়েছিলেন, এ বছর এ প্রস্তবের বিরোধিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র।

হ্যালির ভাষ্য, ‘এবার যখন জাতিসংঘ গোলান মালভূমি সংক্রান্ত তাদের বাৎসরিক অর্থহীন প্রস্তাব উত্থাপন করবে তখন যুক্তরাষ্ট্র অনুপস্থিত থাকবে না। এই প্রস্তাবটি সম্পূর্ণভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে। আর তাছাড়া সিরীয় সরকারের অব্যাহতভাবে চলতে থাকা নিপীড়ন এটাই প্রমাণ করে, দেশটি কোনও এলাকা শাসন করার উপযুক্ত নয়।’ আর শেষ পর্যন্ত তাই শুক্রবার  প্রস্তাবের বিপক্ষেই ভোট দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ভোট না পেলেও প্রস্তাবটি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৫১টি ভোট পেয়ে পাস করেছে। মোট ১৪টি দেশ ভোট দানে বিরত ছিল। শুধু ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। আগামী মাসে প্রস্তাবটি জাতিসংঘে আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহীত হবে।

ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ডেভিড ফ্রিডম্যান গত সেপ্টেম্বরেই বলেছিলেন, তিনি চান গোলান মালভূমির ওপর চিরকাল ধরে ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ থাকুক, যাকে সংশ্লিষ্টরা গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলি দাবির প্রতি মার্কিন স্বীকৃতি হিসেবে দেখেছিলেন।
এদিকে গোলান মালভূমির বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেয়ে খুশি ইসরায়েল। দেশটির পাবলিক সিকিউরিটি মন্ত্রী গিলাদ এরদান এ সিদ্ধান্তকে ‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘কোনও মানসিকভাবে সুস্থ মানুষ গোলানকে সিরিয়ার হাতে তুলে দেওয়ার কথা বলতে পারে না।’