মরদেহ ফেরত নিয়ে আসার কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি

নওগাঁ সীমান্তে তিন বাংলাদেশী নিহতের ঘটনায় বিএসএফের দুঃখ প্রকাশ

নওগাঁ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২৪ জানুয়ারী ২০২০ ১৩:৪৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৭৭ বার।

নওগাঁর পোরশার হাঁপানিয়া দুয়ারপাল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে তিন বাংলাদেশী গরু ব্যবসায়ী নিহত ঘটনায় বিএসএফের পক্ষ থেকে দুঃখ প্রকাশ করা হযেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ২৩১ নং মেইন পিলারের নিকট নোম্যান্স ল্যান্ডে অনুষ্ঠিত বিজিবি ও বিএসএফের কমান্ডিং পর্যায়ের পতাকা বৈঠকে এই দুঃখ প্রকাশ করা হয়। এসময় বাংলাদেশের পক্ষে নওগাঁ ১৬ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল মোঃ আরিফুল হক ও ভারতের পক্ষে ১৫৯ বিএসএফের কমান্ডার হার্ষা জসি নের্তৃত্ব দেন। তবে ভারতের অভ্যন্তরে থাকার দুই বাংলাদেশী রনজিত কুমার ও কামাল হোসেনের মরদেহ ফেরত নিয়ে আসার ব্যাপারে বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের কোন উদ্যোগ এখন পর্যন্ত নেওয়া হয়নি। বিএসএফের গুলিতে নিহত অপর বাংলাদেশী মফিজুল ইসলাম মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে তার গ্রামের বাড়িতে দাফন করা হয়েছে। এদিকে এই ঘটনার পর থেকে সীমান্ত এলাকায় চাপা উত্তেজনাসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিজিবি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে নিহতদেও পরিবারের পক্ষ থেকে কোণ অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন বিজিবি।

নওগাঁ ১৬ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেঃ কর্ণেল মোঃ আরিফুল ইসলাম বিএসএফের উদ্বৃতি দিয়ে জানান ঘটনার জানার পর বিজিবির পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকের আহবান জানিয়ে পত্র দেওয়া হয়। এরপ্রেক্ষিতে বৃৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রায় ঘন্টাব্যাপী পতাকা বৈঠকে চলে। এসময় বিএসএফ তাদের জোয়ানদের গুলিতে তিন ব্যাংলাদেশী নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে দুঃখ প্রকাশ করেন। এদিকে বিজিবির পক্ষ থেকে এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে এধরনের ঘটনার যাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে সেই আহবান জানান হয়। এসময় ভারতের অভ্যান্তরে বিএসএফের গুলিতে নিহত বাংলাদেশী রনজিত কুমার ও কামাল হোসেনের মরদেহ বিএসএফ ভারতের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে বলে তারা জানিয়েছেন বিএসএফ। এদিকে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিজিবির কাছে এ বিষয়ে কোন অভিযোগ করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ১৬ বিজিবির হাপানিয়া ক্যাম্পের নায়েক সুবেদার মোখলেছুর রহমান। তবে বৃহস্পতিবার বিকেলে ৪টার দিকে বাংলাদেশ সীমানায় পড়ে থাকা নিহত মফিজুল ইসলামের মরদেহ ঘটনাস্থল থেকে পোরশা থানা পুলিশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠিয়েছেন ও এই ঘটনায় থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পোরশা থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম।

এদিকে নিহত মফিজুল ইসলামের পিতা খোদাবক্স ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন নির্বিচারে গুলি চালিয়ে মানুষ হত্যা করা কোন আর্স্তজাতিক আইনে পড়ে কিনা জানিনা। তারা ভারতে অবৈধভাবে প্রবেশ করে থাকলে তাদেও আটক করে আইনী বিচার মাধ্যমে সাজা দিলে সেটা মেনে নেয়া যায়। কিন্ত গুলি করে হত্যা করা মেনে নেযা যায় না। আমি আমার সন্তানসহ অন্য বাংলাদেশীদেও হত্যার সুষ্ঠ বিচার দাবি করছি।

এ ব্যাপারে নওগাঁ জেলা প্রশাসক মোঃ হারুন অর রশীদ বলেন দুই বাংলামেধী মরদেহ ভারত থেকে ফেরত আনার জন্য ইতিমধ্যে বিজিকে বলা হয়েছে এবং নিহতদের পরিবারকে আইনী প্রক্রিযার পরামশৃ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার ভোরে ভারত থেকে গরু নিয়ে ফেরার পথে সীমান্ত এলাকার ২৩১/১০(এস) মেইন পিলারের নীলমারী বীল এলাকায় বিএসএফ জোয়ানরা গরু ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়লে পোরশা উপজেলার বিষ্ণপুর বিজলীপাড়ার শুভ্র কুমারের ছেলে রজনিত কুমার(২৫), দিঘীপাড়া গ্রামের খোদাবক্সের ছেলে মফিজুল ইসলাম (৩৫) এবং কাঁটাপুকুরের মৃতু জিল্লুর রহমানের ছেলে কামাল হোসেন (৩২) নিহত হয।