মন্ত্রীসভায় আইনের খসড়া অনুমোদিত

বগুড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছেঃ শহরে আনন্দ মিছিল

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২৭ জানুয়ারী ২০২০ ১১:৪৯ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৬১৯ বার।

অবশেষে বগুড়ায় বহু কাঙ্ক্ষিত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হতে যাচ্ছে। সোমবার মন্ত্রীসভার নিয়মিত বৈঠকে ‘বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমে প্রচারিত ওই সিদ্ধান্তের খবরটি দুপুরে জানার পর পরই জেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহরে আনন্দ মিছিল বের করা হয়।

পরে শহরের জিরো পয়েন্ট সাতমাথায় এক সমাবেশ থেকে জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণে সবসময় আন্তরিক সেটা আজ আবারও প্রমাণিত হলো। নেতবৃন্দ আশা করেন প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুত বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ দ্রুত শুরু হবে। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি টি জামান নিকেতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম মোহন, আসাদুর রহমান দুলু, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম ডাবলু, আওয়ামী লীগ নেতা সুলতান মাহমুদ খান রনি ও জাকির হোসেন নবাব বক্তৃতা করেন।

প্রায় বিশ বছর আগে ২০০১ সালের ১৫ জুলাই তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে জাতীয় সংসদে ‘বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ পাশ করা হয়। পরবর্তীতে সেই আইনটি গেজেটভুক্তও করা হয়। কিন্তু ২০০১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনের মাধ্যমে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চার দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর সেটি আর আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি সেই সময়কার প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার নির্বাচনী জেলা হিসেবে বগুড়ায় আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও পরবতীতে সেটি চট্টগ্রামে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনের মাধ্যমে আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হলে বগুড়ার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। তবে সরকারের ওই মেয়াদে এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ চোখে না পড়লেও দ্বিতীয় দফা ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ২০১৫ সালের ১০ জানুয়রি ভিডিও কনফারেন্সে বগুড়ায় আর্মি মেডিকেল কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনে তাঁর সদিচ্ছার কথা জানান। এরপর একই বছরের ১২ নভেম্বর বগুড়ায় এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বগুড়ার উন্নয়নে বিশ্ববিদ্যায়সহ বড় ধরনের ৮টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের প্রতিশ্রæতি দেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর পরই বগুড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনকে (ইউজেসি) নতুন আইন তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থান নির্বাচনের জন্য জেলা প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ একাধিক এলাকা পরিদর্শন করেন। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোন আইন পাশ না হওয়ায় কোন চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না।

তবে দীর্ঘদিন পর মন্ত্রীসভা কমিটিতে বগুড়ায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন আইনের খসড়াটি মন্ত্রীসভায় অনুমোদিত হওয়ায় নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি  মুক্তিযোদ্ধা মাছুদার রহমান হেলাল উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। আশাকরি বিশ্ববিদ্যালয়টি দ্রুতই স্থাপন করা হবে।