ইরানের ক্ষেপণাস্ত্রেই মার্কিন বিমান ভূপাতিত করে তালেবান!

পুণ্ড্রকথা ডেস্ক
প্রকাশ: ২৯ জানুয়ারী ২০২০ ০৬:৪৪ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৫ বার।

আফগানিস্তানের গজনিতে বিধ্বস্ত হওয়া মার্কিন সামরিক বাহিনীর বিমান নিয়ে রহস্য কাটছে না। বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে নাকি ভূপাতিত করা হয়েছে সেটা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এরই মধ্যে আফগান গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এক প্রধান সন্দেহ করছেন, ইরানের দেওয়া বিমান-বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বিমানটি ভূপাতিত করতে পারে তালেবান।

সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ১০ মিনিটের দিকে রাজধানী কাবুল থেকে ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে গজনি প্রদেশের তালেবান-নিয়ন্ত্রিত দেহ ইয়াক জেলায় এটি বিধ্বস্ত হয়।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমের বরাত দিয়ে আফগান তোলো নিউজ জানায়, বিমান থেকে দুর্ঘটনাস্থল নজরদারি করছে মার্কিন সামরিক বাহিনী। কাউকে দুর্ঘটনাস্থলের আশপাশে যেতে দিচ্ছে না।

আফগানিস্তানে মোতায়েনকৃত মার্কিন বাহিনীর মুখপাত্র কর্নেল সনি লেগেট বলেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের একটি বোম্বারডিয়ের ই-১১এ আজ (সোমবার) আফগানিস্তানের গজনি প্রদেশে বিধ্বস্ত হয়েছে। বিধ্বস্তের কারণ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। শত্রুর গোলায় বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ পাওয়া যায়নি।’

তবে আফগান গোয়েন্দা সংস্থা ন্যাশনাল ডিরেক্টরেট অব সিকিউরিটি-এনডিএসের সাবেক প্রধান রহমতুল্লাহ নাবিল বলেছেন, ‘বিমানটিতে যে ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছিল এমন সম্ভাবনার কথা কেউ নাকচ করে দিতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার সাম্প্রতিক উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি পাল্টা জবাব দেওয়ার ক্ষমতা রাখে না ইরান। ফলে ইরান যে তালেবানকে বিমান-বিধ্বংসী অস্ত্র দিতে পারে সেই সম্ভাবনা আমরা নাকচ করে দিতে পারি না।’

তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকায় বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছিল। এনিয়ে মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি বিবৃতি দিয়েছে তালেবান। তবে অস্পষ্ট বক্তব্যের কারণে এটা স্পষ্ট নয় যে, বিমানটি বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে তাদের হাত আছে কিনা।

জানা গেছে, বোম্বারডিয়ের ই-১১এ যুক্তরাষ্ট্রের বিমান বাহিনীর একটি ‘ইলেকট্রনিক সার্ভেইলেন্স’ বিমান। রেডিও সিগন্যাল এবং রেডিও সিগন্যালকে টেলিফোন কথোপকথনে রূপান্তর করার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।

দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় যেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা কঠিন, সেখানে ‘আকাশে ওয়াই-ফাই’ সিস্টেম হিসেবে এই বিমান ব্যবহার করে থাকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী।

এদিকে আফগান বিমান বাহিনীর সাবেক কমান্ডার ওয়াহাব ওয়ারদাক বলেন, ‘বিমানটি যত উঁচুতে উড়ে, ততবেশি এলাকা কাভারেজ দিতে পারে। এটা এত বেশি উঁচুতে উড়ে, ফলে ভূমি থেকে এটাকে ভূপাতিত করা হয়েছে বলে আমি মনে করি না।’

এদিকে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছে, ‘বিমানের নিহত আরোহীদের মরদেহ নিয়ে গেছে তালেবান যোদ্ধারা। জীবিত কেউ থাকলে তাদেরও নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে তালেবান।’

অন্যদিকে মঙ্গলবার বিকেলে গজনি প্রাদেশিক পুলিশ সদস্যরা তোলো নিউজকে জানান, বিধ্বস্ত বিমানের দুই আরোহীর মরদেহ মঙ্গলবার নিয়ে গেছে মার্কিন বাহিনী।

গজনি প্রাদেশিক কাউন্সিলের সদস্য আবদুল জামে জামে বলেন, ‘সর্বশেষ তথ্য নির্দেশ করে যে, ওই বিমানে সাত থেকে আটজন আরোহী ছিল। তালেবান তিনজনের মরদেহ নিয়ে গেছে।’