বগুড়ায় মহাসড়কের পাশ থেকে নবজাতক উদ্ধার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১৩:২৭ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ৬৯৯ বার।

বগুড়ায় মহাসড়কের পাশে পড়ে  থাকা এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকা থেকে পাওয়া ওই শিশুটিকে স্থানীয় এক নারী মুদি দোকানি উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, কম ওজন নিয়ে জন্মানো (ইমম্যাচিউর্ড-অপরিণত) শিশুটির অবস্থা সংকটাপন্ন। তাকে ইউকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

 
শহরের তিনমাথা রেলগেট এলাকার মুদি দোকানি পুরান বগুড়া এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের স্ত্রী ববি আক্তার (৪৫) জানান, প্রতিদিনকার মত মঙ্গলবার সকালে তিনি তিনমাথা রেলগেট এলাকায় বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের পশ্চিম পাশে নিজের মুদি দোকানে বসে বেচা-কেনা করছিলেন। সকাল সাড়ে ৮টার দিকে মহাসড়কের পূর্ব দিকে রেলওয়ের লেভেলক্রসিং সংলগ্ন পরিবহন শ্রমিকদের কার্যালয়ের (মহাসড়কে যানজট নিরসনে কাজ করে) মাইক থেকে এক নবজাতক পড়ে থাকার ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই ঘোষণা শুনে অনেকেই সেখানে ছুটে যায়। এক পর্যায়ে তিনিও সেখানে যান এবং সদ্য ভূমিষ্ঠ এক শিশুকে পড়ে থাকতে দেখেন। তখন শ্রমিকদের অনুরোধে তিনি ওই ছেলে শিশুটিকে ছালায় (পাটের তৈরি একটি বস্তার অংশ বিশেষ) জড়িয়ে কোলে তুলে সিএনজি চালিত অটোরিকশায় শজিমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে ওই নবজাতকটিকে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়।

 
শ্রমিক কার্যালয় সংলগ্ন আব্দুর রহিম নামে এক দোকানি জানান,  লেভেল ক্রসিং পারাপারের সময় সিএনজি চালিত একটি অটো রিকশা থেকে শিশুটি পড়তে দেখা যায়। তিনি বলেন, ওই অটো রিকশাটি শহরের দিকে দ্রুত চলে যায়।


ববি খাতুন জানান, তার একটি মেয়ে রয়েছে কিন্তু কোন ছেলে সন্তান নেই। তাই ওই নবজাতককে তিনি ছেলের মতই লালন-পালন করতে চান। এমনকি তিনি ওই নবজাতকের নামও রেখেছেন। তার দেওয়া ‘তাওহীদ’ নামেই হাসপাতালের নার্সসহ অন্যরা শিশুটিকে ডাকাডাকি করছে।

এদিকে উদ্ধার হওয়া সন্তানকে নিজের বলে দাবি করেছেন দুপচাঁচিয়া উপজেলার পাঁচোশা গ্রামের জাকিউল হাসান সাগর। তিনি ঢাকায় লংকা বাংলা ফাইন্যান্সে চাকরি করেন। 

তিনি বলেন, আমার স্ত্রীর প্রসবজনিত ব্যথার কারণে পরিবারের সদস্যরা সকালে সিএনজি করে শজিমেক হাসপাতালের দিকে নিয়ে আসছিল। পথিমধ্যে শহরের তিনমাথায় ঝাঁকুনি খেয়ে বাচ্চা পরে যায় । কিন্তু আমার স্ত্রী টের পেলেও জানানোর মত অবস্থায় ছিল না। পরে শজিমেকে নিয়ে গেলে বাচ্চা প্রসব আগেই হয়েছে ডাক্তার জানায়। পরে আমার স্ত্রীর দেয়া তথ্যানুযায়ী তিনমাথা এলাকায় বাচ্চার সন্ধানে গেলে পাওয়া যায়নি। 

 
বগুড়া শজিমেক হাসপাতালের সহকারি পরিচালক ডা. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, হাসপাতালে আনার পর পরই তাকে নবজাতকটিকে শিশুটিকে ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। তিনি জানান, হাসপাতালে আনার কয়েক ঘন্টা আগে জন্ম নেওয়া শিশুটির ওজন মাত্র ৮০০ গ্রাম। তারওপর শিশুটি ধুলাবালিতে পড়েছিল সব মিলিয়ে তার অবস্থা খুব সংকটাপন্ন। তাই শিশুটিকে ইউকিউবেটরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।