প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’-এর মঞ্চায়ন ২৩ ও ২৪ নভেম্বর

পুণ্ড্রকথা রিপোর্ট
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৫ ।
প্রচ্ছদ
পঠিত হয়েছে ২৬৭ বার।

বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান নিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ প্রত্ননাটক করছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি। এরই ধারাবাহিকতায় আড়াই হাজার বছরের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের ইতিহাস-ঐতিহ্য নিয়ে প্রত্ননাটক ‘মহাস্থান’ মঞ্চায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
 ড. সেলিম মোজাহার-এর রচনায় এবং লিয়াকত আলী লাকীর নির্দেশনায় আগামী ২৩ ও ২৪ নভেম্বর বগুড়ার মহাস্থানগড়ে প্রযোজনাটির মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে। চূড়ান্ত প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ২০-২২ নভেম্বর বগুড়ার মহাস্থানগড়ে মহড়া শুরু হয়েছে।  বাংলাদেশ শিল্পকলা একডেমি প্রযোজিত এই প্রত্ননাটকটিতে ৩৫০ জন শিল্প-কলাকুশলীর অংশগ্রহণ করবে।  এতে প্রত্ননিদর্শন মহাস্থানগড়ের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের শৈল্পিক উপস্থাপনা তুলে ধরা হবে।
আগামী ২৩ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬টায় উদ্ধোধনী মঞ্চায়নের উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. নাসির উদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে  প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক অধ্যাপক হাসান আজিজুল হক। শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন মঞ্চসারথি আতাউর রহমান, বিশিষ্ট নাট্যজন অধ্যাপক আবদুস সেলিম, প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন, বগুড়া জেলার জেলা প্রশাসক ফয়েজ আহাম্মদ, বগুড়া জেলার পুলিশ সুপার  আলী আশরাফ ভূঞা।


মহাস্থানগড় বাংলাদেশের একটি প্রাচীন পুরাকীর্তি। প্রসিদ্ধ এই নগরী একসময় বাংলার রাজধানী ছিল। প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে এখানে জনপদ গড়ে উঠেছিল। বগুড়া জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত মহাস্থানগড়কে ২০১৬ সালে সার্কের সাংস্কৃতিক রাজধানী ঘোষণা করা হয়।
প্রাচীর বেষ্টিত এই নগরীর ভেতর রয়েছে বিভিন্ন সময়ের নানা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত এ স্থান পরাক্রমশালী মৌর্য, গুপ্ত, পাল ও সেন শাসকবর্গের প্রাদেশিক রাজধানী ও পরবর্তীকালে হিন্দু সামন্ত রাজাদের রাজধানী ছিল। তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে পঞ্চদশ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত অসংখ্য হিন্দু রাজা ও অন্যান্য ধর্মের রাজারা এখানে রাজত্ব করেছিলো।
‘মহাস্থান’ প্রত্ননাটকের মধ্যদিয়ে বিভিন্ন সময়ের শাসন শোষণের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ঐতিহাসিক এই স্থানটি একসময় ধর্মীয় তীর্থস্থান হিসেবেও পরিণত হয়েছিলো। ধর্মের বাণী বুকে নিয়ে কেউ মানবতার কথা বলেছেন কেউ আবার মানুষের অধিকার নষ্ট করেছেন। এসব কীর্তি, কৃষ্টি ও সভ্যতার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ‘মহাস্থান’ নাটকে।  

‘মহাস্থান’ প্রসঙ্গে লিয়াকত আলী লাকী বলেন, পৃথিবীতে এভাবে আর্কিও ড্রামার ইতিহাস নেই। এর কাজ প্রত্নইতিহাসকে দুশ্যকাব্যে রূপান্তরিত করে শিল্পে রূপ দেয়া। মহাস্থানের গৌরবোজ্জ্বল আখ্যানের ভিতর দিয়ে সমগ্র বাঙলার মহাস্থান হয়ে ওঠার গল্প। মহাস্থান, কোটি বছরজুড়ে এ-মটির জেগেওঠার কথা। হাজার হাজার বছর ধরে তার মানব বসতির কথা।


নাট্যকার সেলিম মোজহার বলেন, বাঙলার প্রাচীনতম রাজধানী পুন্ড্রনগরের ‘মহাস্থন’কে কেন্দ্রভূমিতে রেখে-মহামুনি গৌতম বুদ্ধের বাঙলায় আগমনকাল থেকে ১৯৭১-এর বাংলাদেশ কালব্যক্তির এ-নাট্য-আখ্যানে পুরো গল্পটাকে এক সাথে বলার চেষ্টা হয়েছে।