মুজিববর্ষের অঙ্গীকারঃ সবার জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য ভ্যালু চেইন উন্নয়নে সম্মিলিত প্রয়াস শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
নাগরিক স্বেচ্ছাব্রতী সংগঠন বিসেফ ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলসহ (বিএআরসি) আরো ১৫ টি সংগঠনের উদ্যোগে ঢাকার ফার্মগেট বিএআরসি'র কনফারেন্স হলে দুইদিন ব্যাপী নিরাপদ পুষ্টিকর খাদ্য ভ্যালু চেইন উন্নয়নে সম্মিলিত প্রয়াস শীর্ষক জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিনে ‘পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য ব্যবস্থা সম্প্রসারণে অর্থায়ন’ এই বিষয়ে প্রথম কারিগরি অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন কৃষি মন্ত্রণালয় এর সাবেক সচিব ও বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সদস্য আনোয়ার ফারুক। অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভণর এস এম মনিরুজ্জামান। বিশেষ অতিথি, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া উপস্থিত ছিলেন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিআইবিএম এর প্রশিক্ষণ পরিচালক ড. শাহ মোঃ আহসান হাবিব ও ইউএসএআইডি সাথী প্রজেক্ট এর সিইও ড. গিরীশ আইভ্যালি।
এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকণ ও ভ্যালু চেইন উন্নয়নে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের দেশে বিনিয়োগে কোন বাধা নেই।
মোঃ আলী হোসেন প্রধানিয়া বলেন, বাজারের চাহিদা অনুয়ায়ী আমরা ঋণ সহায়তা দিতে পারছিনা। তারপরও সক্ষমতা অনুযায়ী আমরা নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে কাজ করে যাচ্ছি।
আনোয়ার ফারুক বলেন, কৃষি সেবাগুলো কৃষকদের দোরগোড়ায় পৌছাতে হবে।
ড. শাহ মোঃ আহসান হাবিব বলেন, আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে বাজারব্যবস্থাপনা একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. গিরীশ আইভ্যালি বলেন, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য সম্প্রসারণে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগ জরুরী।
‘পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে নাগরিক ফোরামের প্রয়োজনীয়তা’ বিষয়ে দ্বিতীয় কারিগরি অধিবেশনটি পরিচালনা করেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব ও বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সদস্য অধ্যাপক রেজাউল করিম সিদ্দিক। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউপিজি ব্র্যাক এর উপদেষ্টা ও বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সহ সভাপতি টিআইএম জাহিদ হোসেন। অধিবেশনে আলোচনা করেন, বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সাধারণ সম্পাদক ও হাঙ্গার ফ্রি ওয়ার্ল্ড এর কান্ট্রি ডিরেক্টর আতাউর রহমান মিটন, ডিবিসি টেলিভিশন এর বার্তা প্রধান প্রণব সাহা, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য নেটওয়ার্ক এর চেয়ারম্যান ও বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সদস্য মহিদুল হক খান, দৈনিক বণিক বার্তা এর সিনিয়র রিপোর্টার ও বিএজেএফ এর সাধারণ সম্পাদক সাঈদ শাহিন, এশিয়ান ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন অপারেশন ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম।
প্রণব সাহা বলেন, খাদ্য মানেই নিরাপদ হতে হবে। যেটি অনিরাপদ সেটি কখনোই খাদ্য হতে পারে না।
আতাউর রহমান মিটন বলেন, নিরাপদ খাদ্য আন্দোলনে সবাইকে তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে কাজ করতে হবে।
মহিদুল হক খান বলেন, পরিবেশ সুরক্ষা করতে না পারলে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা সম্ভব নয়।
আমিরুল ইসলাম বলেন, কৃষি ও কৃষক সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করতে হবে।
সাঈদ শাহিন বলেন, নিরাপদ খাদ্যের নামে উদ্বেগ তৈরি করা যাবে না।
সম্মেলনের সমাপনি অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ, পরিকল্পনা কমিশন ও পকিল্পনা মন্ত্রণালয় এর সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলম। সভাপতিত্ব করেন বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সভাপতি ড. মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। বিশেষ অতিথি খাদ্য মন্ত্রণালয় এর সচিব ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম উপস্থিত ছিলেন।
ড. শামসুল আলম বলেন, পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিয়ে গত দুইদিন থেকে যেসব ক্রিটিক্যাল বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে সেগুলোর সাথে আমি একমত। এছাড়াও এই সম্মেলন থেকে যেসব সুপারিশ এসেছে সেগুলো হাতে পেলে আগামী ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নিতে পারব। খাবারের মান নিশ্চিত করতে হলে সরকারের ভূমিকাই মূখ্য। কারণ নিরাপদ খাদ্য নাগরিকে কাছে পৌছে দেয়া সরকারের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। সুতারাং সবার জন্য পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য ভ্যালু চেইন উন্নয়নে সরকারকে দায়িত্ব নিতে হবে। খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে আমরা এখন অনেক দূর এগিয়েছি তবে নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ সরকারের সামনের এখন একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতকরণে বিসেফ ফাউন্ডেশন যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে আমরা এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য ভ্যালু চেইন উন্নয়নে খাদ্য মন্ত্রণালয় বিসেফ ফাউন্ডেশনের সাথে যৌথভাবে কাজ করতে আগ্রহ। আমাদের উৎপাদনে বেড়েছে বহুগুন। সেই সাথে বেড়েছে অপচয়। সেজন্য অপচয় রোধ করতে হবে এবং নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে বাজারব্যবস্থাপনার দিকে সুনজর দিতে হবে।
সম্মেলনের সারসংক্ষেপ ও সুপারিশসমূহ তুলে ধরেন বিসেফ ফাউন্ডেশন এর সদস্য ড. তাজুল ইসলাম, সৈয়দা ফারজানা মোর্শেদ।